বিদ্যুৎহীন লংগদু উপজেলার তিন ইউনিয়নের ৫০ হাজারের বেশি মানুষ
সম্প্রতি পটুয়াখালি কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে দেশকে শতভাগ বিদ্যুতায়নের দেশ হিসেবে ঘোষণা করেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
কিন্তু বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন। আয়তনে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জেলা রাঙ্গামাটির লংগদু উপজেলাধীন তিনটি ইউনিয়ন (ভাসান্যাদম, বগাচত্বর ও কালাপাকুজ্জা) এখনো সম্পূর্ণ বিদ্যুৎসংযোগের বাইরে অবস্থান করছে। যেখানে বসবাস করছেন ৫০ হাজারের অধিক মানুষ।
সম্প্রতি এই তিনটি ইউনিয়ের মধ্যবর্তী গুলশাখালী ইউনিয়নে বিদ্যুতের লাইনের আগমন ঘটলেও এ ইউনিয়নের অল্প মানুষই বিদ্যুৎসংযোগের আওতায় এসেছে। উল্লেখিত তিনটি ইউনিয়নে ৩ হাজারের অধিক শিক্ষার্থী আধুনিক সভ্যতার অন্যতম উপাদান বিদ্যুতের ছোঁয়া থেকে বঞ্চিত থাকায় তারা পিছিয়ে যাচ্ছে পড়ালেখা থেকেও।
স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সাথে বারবার কথা বলেও পাওয়া যায়নি ইতিবাচক কোনো সাড়া। কেউই নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না, কবে নাগাদ এই তিনটি ইউনিয়নের অধিবাসীরা বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত হবে।
অথচ, এই এলাকাগুলো এমন কোনো দুর্গম এলাকা নয় যে, এখানে বিদ্যুৎ পৌঁছানো সম্ভব নয়। যথাযথ কর্তৃপক্ষের সদিচ্ছা থাকলেই এখানে বিদ্যুৎ পৌঁছানো সময়ের ব্যপার মাত্র। তাছাড়া, এরচেয়ে দুর্গম অনেক এলাকায় বিদ্যুতের আলোয় পড়াশোনা করছে অনেক পাহাড়ী-বাঙালি শিক্ষার্থী।
তাহলে কি রাজনৈতিক নেতাদের গুরুত্বহীনতা আর কর্তৃপক্ষের অবহেলাই সরকারের শতভাগ বিদ্যুতায়নের ঘোষণাকে ম্লান করে দিচ্ছে? নাকি এর পিছনে আরো কোনো কারণ বা রাজনৈতিক বৈরিতা রয়েছে, তা অজানাই থেকে গেলো এসব এলাকার সাধারণ মানুষগুলোর কাছে।
অথচ, বিদ্যুৎ না থাকায় প্রতিনিয়ত এসব এলাকায় বন্য হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েই চলেছে স্থানীয়রা। হয়তো বিদ্যুতের আলো থাকলে বন্য হাতির আক্রমণ থেকেও রক্ষা পেতো তারা। এর ফলে অন্যান্য স্থানের মতো স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারতো এখানকার মানুষেরাও।
এই তিন ইউনিয়নের মানুষগুলোর একটাই চাওয়া, সরকারের শতভাগ বিদ্যুতায়নের ঘোষণা অনুযায়ী খুব দ্রুত যেন বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত হয় তাদের প্রিয় ভূ-খন্ড। আশা করি, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ গুরুত্ব দিয়ে এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
লেখক: ভাসান্যাদম, লংগদু, রাঙ্গামাটি থেকে