ভারতের বিপক্ষে আশা জাগিয়েও স্বপ্নভঙ্গ বাংলাদেশের

fec-image

ভারতের বিপক্ষে ঘরের মাঠে ইতিহাস রচনার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেও হেরে গেল বাংলাদেশ। স্বপ্নের তীরে এসেও ভঙ্গ হলো সাকিবদের স্বপ্ন। ভারতকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়লেন রবীচন্দ্রন অশ্বিন ও শ্রেয়াস আয়ার। বাংলাদেশের স্বপ্নের শেষ হলো হারের বেদনায়। ঢাকা টেস্টে জয়ের খুব কাছে গিয়েও ৩ উইকেটে হারল বাংলাদেশ। লক্ষ্য মাত্র ১৪৫ রানের। ভারতের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপকে এমন লক্ষ্য দিয়ে জয়ের আশা করা তো বাড়াবাড়িই। তবে অবিশ্বাস্য কিছুর স্বপ্ন দেখাচ্ছিলেন বোলাররা।

ভারতের বিপক্ষে এর আগে কখনও টেস্ট জেতেনি বাংলাদেশ। দলকে ইতিহাস গড়ার দ্বারপ্রান্তে নিয়ে এসেছিলেন সাকিব-মিরাজরা। ১৪৫ তাড়া করতে গিয়ে যে ৭৪ রানেই ৭ উইকেট হারিয়ে বসেছিল ভারত।

তবে টেস্ট র্যাংকিংয়ের শীর্ষ সারির দলটি এমন পরিস্থিতি থেকেও দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায়। অষ্টম উইকেটে শ্রেয়াস আইয়ার আর রবিচন্দ্রন অশ্বিন অবিচ্ছিন্ন ৭১ রানের জুটিতে ঠাণ্ডা মাথায় জয় বের করে নিয়ে এসেছেন।

মিরপুর শেরে বাংলায় রোমাঞ্চ ছড়ানো এই টেস্টে চতুর্থ দিনের সকালে এসে ৩ উইকেটের জয় পেয়েছে ভারত। দুই ম্যাচের সিরিজ তারা জিতেছে ২-০ ব্যবধানে।

আগের দিন ৩৭ রানে ৪ উইকেট হারিয়েছিল ভারত। চতুর্থ দিনের দ্বিতীয় ওভারেই আশা আরও বড় করেন সাকিব আল হাসান। জয়দেব উনাদকাটকে (১৩) এলবিডব্লিউ করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। ৫৬ রানে ভারত হারায় ৫ উইকেট।

উনাদকাট অবশ্য নাইটওয়াচম্যান ছিলেন। বাংলাদেশের জয়ে মূল বাধা ছিলেন রিশাভ পান্ত আর শ্রেয়াস আয়ার। এর মধ্যে উনাদকাটের পরই ভয়ংকর রিশাভ পান্ত (৯) মেহেদি হাসান মিরাজের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরে গেলে জয়ের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন সমর্থকরা। পরের ওভারে মিরাজ বোল্ড করেন অনেকটাই সেট হয়ে যাওয়া অক্ষর প্যাটেলকেও (৩৪)।

তবে এরপর আর পারেনি বাংলাদেশ। অশ্বিন-আইয়ারের জুটির কাছে হার মানতে হয়। অশ্বিন ৪২ আর আইয়ার ২৯ রানে অপরাজিত থাকেন।

মেহেদি হাসান মিরাজ ৬৩ রানে নেন ৫টি উইকেট। সাকিব নেন দুটি।

অথচ আগের দিনই সাজঘরে ফিরে গিয়েছিলেন ভারতীয় অধিনায়ক লোকেশ রাহুল, শুভমান গিল, ব্যাটিং স্তম্ভ চেতেশ্বর পূজারা আর বিরাট কোহলি। ৩৭ রান তুলতে ৪ উইকেট হারায় ভারত।

৪ উইকেটে ৪৫ রান নিয়ে তৃতীয় দিন শেষ করে ভারত। জিততে হলে আরও ১০০ রান দরকার ছিল তাদের।

রান তাড়ায় নেমে শুরু থেকেই বাংলাদেশি বোলারদের তোপের মুখে পড়ে ভারত। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে সাকিব টার্নে পরাস্ত করেন ভারতীয় অধিনায়ক লোকেশ রাহুলকে (২)। ব্যাটে ছোঁয়া লেগে বল চলে যায় উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান সোহানের গ্লাভসে।

এরপর আঘাত হানেন মেহেদি হাসান মিরাজ। তার ঘূর্ণি ডেলিভারি কিছুটা সামনে এসে ডিফেন্ড করতে চেয়েছিলেন চেতেশ্বর পূজারা। বল ধরে স্টাম্প ভেঙে দেন সোহান। ৬ রানে থামেন ভারতীয় ব্যাটিংয়ের অন্যতম স্তম্ভ।

প্রায় একইরকমভাবে মিরাজের ঘূর্ণিতে পরাস্ত হয়েছেন শুভমান গিল (৭)। এবারও স্টাম্প ভেঙেছেন সোহান। বিরাট কোহলি ছিলেন সবচেয়ে বড় বাধা। শেষ বিকেলে তার উইকেটটিও তুলে নিয়েছেন মিরাজ। কোহলি ডিফেন্ড করেছিলেন, ক্যাচ চলে যায় শর্ট লেগে মুমিনুলের কাছে। দারুণ এক ক্যাচে কোহলির (১) বিদায়ঘণ্টা বাজান মুমিনুল।

প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ করেছিল ২২৭ রান। জবাবে ৩১৪ রানে অলআউট হয় ভারত। দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ ২৩১ করলে ভারতের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৪৫ রানের।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: বাংলাদেশ, ভারত
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন