মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মেয়েদের বউ করে আনার হিড়িক

Miyanmar

পার্বত্যনিউজ ডেস্ক:

মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গা মেয়েদের আমদানী করে বাংলাদেশী ছেলেদের বউ করার হিড়িক পড়েছে। রোহিঙ্গা অধ্যুষিত উখিয়া-টেকনাফে বিনা বাধায় স্থানীয় বাংলাদেশী যুবক, কিশোর এমনকি বৃদ্ধরা পর্যন্ত বিনা রেকর্ডে অর্থ্যাৎ কাবিননামা ছাড়াই অহরহ বিয়ে করলেও বাংলাদেশী সাজিয়ে রীতিমত আনুষ্ঠানিকতা ও কাবিননামা সম্পাদন করে সরাসরি মিয়ানমার থেকে বউ বানিয়ে আনার ঘটনা খুব বেশী নয়।

তথ্যনুসন্ধানে জানাগেছে, টেকনাফের হোয়াইক্যং, হ্নীলা, বাহারছড়া, টেকনাফ সদর, সাবরাং এবং সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের প্রত্যেক এলাকায় রোহিড়ঙ্গা মেয়েদের এনে বউ করার গুরুতর খবর পাওয়া গেছে। তারই ধারাবাহিকতায় আর আগামী ৭ ফেব্রুয়ারী টেকনাফের হোয়াইক্যংয়ে নির্ধারিত তারিখে তাই ঘটতে যাচ্ছে। অবশ্য আমদানী না বলে পাচার বলাটাই শ্রেয়। তার মানে ইয়ারার চোরাই পণ্যের তালিকায় এবার যুক্ত হয়েছে রোহিঙ্গা নারী।

মিয়ানমারের আরাকানের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক নিরাপত্তার কথা ভেবে সেখানকার অভিভাবকরাও সুন্দরী ও যুবতী মেয়েদের সেদেশে রাখতে নিরাপদ বোধ করছে না। বিশেষ করে রোহিঙ্গা বিরোধীদের গণধর্ষণের হাত থেকে বাঁচাতে অভিভাবকরা তাদের মেয়েদের নিরাপদ জীবনের আশায় খুব সহজেই সীমান্ত পার করে দিতে রাজী হয়। সে ক্ষেত্রে সীমান্তের এপারে যেকোনো ধরণের বিয়ের অফার পেলে তারা আর দেরী করে না মেয়েদের ভবিষ্যতের নিরাপত্তার কথা ভেবে। আর এ সুযোগ গ্রহণ করে থাকে সীমান্তের এ পারের অবস্থা সম্পন্ন লোকেরা। অনেক ক্ষেত্রে অবস্থা সম্পন্ন বৃদ্ধরা অল্প বয়সী কুমারী মেয়েদের বিয়ে করে থাকে। এ সুযোগ নিয়ে অনেক নারী পাচারকারী রোহিঙ্গা মেয়েদের বিয়ের কথা বলে ভাগিয়ে এনে পাচার ও দেহ ব্যবসায় লিপ্ত করে থাকে বলে জানা গেছে।

সাম্প্রতিক সময়ে সীমান্ত উপজেলা টেকনাফে সুন্দরী রোহিঙ্গা নারীকে বউ হিসাবে আনার প্রবণতা উদ্বেগজনকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষতঃ টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং উত্তরপাড়ায় মিয়ানমারের শীলখালী গ্রাম থেকে এক রোহিঙ্গা সুন্দরীকে বউ হিসাবে আনার উদ্যোগের ঘটনা নিয়ে বর্তমানে গ্রাম জুড়ে তোলপাড় চলছে। ইতিমধ্যেই কাবিননামাও সম্পাদন করা হয়েছে। বিষয়টি বে-আইনী হলেও এতে সরকার দলীয় নেতা-কর্মী এবং জনপ্রতিনিধির সংশ্লিষ্টতা থাকায় কেউ উচ্চবাচ্য করতে না পারলেও এ ঘটনায় এলাকায় বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
জানা যায়, হোয়াইক্যং ইউনিয়নের উত্তরপাড়া বহুল আলোচিত সাবেক মেম্বারের পুত্রের জন্য বউ ঠিক করেছেন মিয়ানমারের শীলখালী গ্রামের হাজী মোঃ দউলার মেয়ে জিয়াছমিন আক্তারকে। কনের বাবা হাজী মোঃ দউলা বর্তমানে সউদী আরব প্রবাসী। মোটা অংকের যৌতুক নিয়ে এ বিয়ে ঠিক করা হয়েছে বলে এলাকায় মুখরোচক আলোচনা চলছে। গত ৪ জানুয়ারী কান্জরপাড়া কাজী অফিসে জিয়াছমিন আক্তারকে বাংলাদেশী দেখিয়ে কাবিননামাও সম্পাদন করা হয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে।

মিয়ানমার থেকে বউ হিসাবে নারী পাচার করে আনাসহ বিভিন্ন অপকর্মের হোতা হচ্ছে, হোয়াইক্যং উত্তরপাড়ার দুই সহদর ভ্রাতা। এ দু’ভাই চোরাচালানের পাশাপাশি মিয়ানমার সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর আস্থাভাজন ও চর হিসাবে কাজ করে আসছে বলে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। রোহিঙ্গা নারীকে বাংলাদেশী সাজিয়ে কাবিননামা সম্পাদন বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় কাজী মাও. আক্তার কামাল নূরী বলেন, এ সর্ম্পকে আমি কিছুই জানিনা।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন