মিয়ানমারে সামরিক জান্তার কাছ থেকে বাণিজ্যিক প্রাণকেন্দ্র দখলে নিয়েছে বিদ্রোহীরা

fec-image

প্রায় আড়াই বছর আগে অং সান সু চির বেসামরিক সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করার পর সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা। এবার দেশটির সামরিক জান্তার বাহিনীর কাছ থেকে শান রাজ্যের একটি বাণিজ্যিক প্রাণকেন্দ্র নিজেদের দখলে নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের যোদ্ধারা।

কয়েকদিন আগে অস্থায়ী এক যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতার ঘোষণা দেয় চীন। তারপরই শনিবার ওই ঘোষণা দিয়েছে গোষ্ঠীটি। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।

এতে বলা হয়, অক্টোবরের শেষের দিক থেকে মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলজুড়ে লড়াই করে যাচ্ছে আরাকান আর্মি (এএ), মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক এলায়েন্স আর্মি (এমএনডিএএ) এবং তাং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ)। এই তিনটি গ্রুপের জোটকে বলা হয়- ‘থ্রি ব্রাদারহুড এলায়েন্স’। তারা বলেছে, শান রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ সামরিক অবস্থান দখলে নিয়েছে এবং বাণিজ্যিক প্রাণকেন্দ্র বলে পরিচিত এমন একটি স্থানের বাণিজ্য তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলেছেন, ২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করার পর এটাই মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এর আগে বৃহস্পতিবার এই জোট এবং মিয়ানমারের সেনাদের মধ্যে একটি অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেয় বেইজিং।

এমএনডিএএ-এর দখলে থাকা এলাকাগুলো বেশ শান্তিপূর্ণ ছিল। কিন্তু টিএনএলএ এবং এএ-এর দখলে থাকা এলাকাগুলোতে অব্যাহতভাবে লড়াই চলছিল।

এর মধ্যে টিএনএলএ বলেছে, দুই সপ্তাহ আগে ওই এলাকায় হামলার পর শুক্রবার ন্যামহসান এলাকা দখল করেছে তারা। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তার ভোনে কাইওয়া বলেন, আমরা শহরটি দখলে নিয়েছি। টিএনএলএ ফেসবুকে যে ভিডিও পোস্ট করেছে তাতে দেখা যায়, গ্রুপটির নেতারা ওই শহর ভ্রমণ করছেন। সামরিক জান্তার যেসব সেনা সদস্যকে বন্দি হিসেবে আটক করা হয়েছে, তাদের সঙ্গে তিনি কথা বলছেন।

ওদিকে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাওয়া মিন তুন রাষ্ট্রীয় টিভি চ্যানেল এমআরটিভিতে শুক্রবার বলেন, নামহসানের চারপাশে লড়াই চলছিল। তার ভোনে কাইওয়ার মতে, ১০৫-মাইল ট্রেড জোনের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। এটি হলো চীনের সঙ্গে সীমান্ত বাণিজ্যের একটি বড় পয়েন্ট।
বিদ্রোহীদের ওই তিনটি গ্রুপের জোট বলেছে, ২৭ অক্টোবর থেকে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর কাছ থেকে ৪২২টি চেকপোস্ট দখল করেছে তারা। নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে সাতটি শহর। তাদের এই সফলতা দেখে জান্তাবিরোধী অন্যরাও উদ্দীপ্ত হচ্ছেন। তারা দেশটির পূর্ব ও পশ্চিমে লড়াই শুরু করেছেন। জাতিসংঘের হিসাবে কমপক্ষে ৫০ লাখ মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন