মেজর সিনহা হত্যা: এপিবিএনের ৩ সদস্যকে ৭ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে র‌্যাব

টেকনাফের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান নিহতের সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) এর ৩ সদস্যকে ৭ দিনের রিমান্ডে নিয়ে গেছে তদন্ত সংস্থা র‌্যাব।

তারা হলেন- এপিবিএনের সাব ইন্সপেক্টর মো. শাহজাহান, কনস্টেবল মো. রাজিব ও কনস্টেবল মো. আবদুল্লাহ।

শনিবার (২২ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে র‌্যাবের একটি দল কক্সবাজার জেলা কারাগারে পৌঁছেন।

এরপর পৌনে ১২টার দিকে কারান্তরীণ এই তিন আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র‌্যাব-১৫ এর কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কারাগারের সুপার মোকাম্মেল হোসেন।

গত ১৮ আগস্ট এপিবিএনের এই তিন সদস্যের ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন কক্সবাজারের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক তামান্না ফারাহ্।

তারা সিনহা হত্যায় দায়েরকৃত জিআর ৭০৩/২০২০ (টেকনাফ) মামলার আসামি।

র‌্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ বলেন, ঘটনার সময় চেকপোস্টে দায়িত্বপালন করা এপিবিএন এর তিন সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদে মনে হয়েছে হত্যাকাণ্ডে তারা সম্পৃক্ত।

সব পর্যালোচনা করে তাদের গ্রেফতারের পর রিমান্ড চাওয়া হয়। আদালত ৭দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে। জিজ্ঞাসাবাদে আরো তথ্য বের হবে বলে র‌্যাবের প্রত্যাশা।

এর আগে এ হত্যা মামলায় উপ-পরিদর্শক (এসআই) লিটন, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন ও আবদুল্লাহ আল মামুন এবং সিনহা হত্যা মামলায় পুলিশের করা মামলার তিন সাক্ষী টেকনাফের বাহারছড়ার মারিশবুনিয়ার নুরুল আমিন, নিজাম উদ্দীন ও মোহাম্মদ আইয়াছের ৭দিন করে রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠিয়েছে দেওয়া হয়েছে।

রিমান্ডে থাকা সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, ইন্সপেক্টর লিয়াকত আলী, এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিতকে শুক্রবার রেকি করতে ঘটনাস্থলে নেওয়া হয়েছিল।

এসময় হত্যার ঘটনার রেকি (লক্ষ্যবস্তু নির্ধারণ, আক্রমণপূর্ব পর্যবেক্ষণ, আক্রমণের কলাকৌশল) এবং ঘটনাস্থল পর্যবেক্ষণ করেন র‌্যাবের কর্মকর্তারা।

গত ৩ জুলাই শিপ্রা দেবনাথ, সাহেদুল ইসলাম সিফাত ও তাসকিনকে নিয়ে সিনহা ভ্রমণবিষয়ক ভিডিওচিত্র ধারণ করতে কক্সবাজার আসেন।

গত ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের মারিশবনিয়া পাহাড়ে ভিডিওচিত্র ধারণ করে মেরিন ড্রাইভ দিয়ে কক্সবাজারের হিমছড়ি এলাকার নীলিমা রিসোর্টে ফেরার পথে শামলাপুর তল্লাশি চৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর (অব.) সিনহা।

এ সময় পুলিশ সিনহার সঙ্গে থাকা সিফাতকে আটক করে কারাগারে পাঠায়।

পরে রিসোর্ট থেকে শিপ্রাকে আটক করা হয়। দুজনই বর্তমানে জামিনে মুক্ত।

৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের শামলাপুর তল্লাশি চৌকিতে পুলিশের গুলিতে মেজর (অব.) সিনহা নিহত হওয়ার ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে ৩টি মামলা হয়। দুইটি মামলায় হয় টেকনাফ থানায়। আরেকটি রামু থানায়।

৫ আগস্ট সিনহার বড় বোন বাদী হয়ে একই আদালতে টেকনাফ থানার বরখাস্তকৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত আলী, থানার এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিতসহ ৯ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করছে র‌্যাব।

অপরদিকে, সাক্ষী অপহরণের অভিযোগ এনে টেকনাফ থানায় আরেকটি মামলা হয়েছে। এতে অজ্ঞাত আসামি দেখানো হয়।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: টেকনাফ, মেজর, মেরিন ড্রাইভ
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন