অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ

যুক্তরাষ্ট্রকে হারিয়ে বিশ্বকাপের সুপার সিক্সে বাংলাদেশ

fec-image

আরিফুল ইসলামের দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে যুব বিশ্বকাপের টানা দ্বিতীয় জয়ের পথ তৈরি করেছিল বাংলাদেশ। তুলনামূলক দুর্বল যুক্তরাষ্ট্রকে তারা আগে ব্যাট করে ২৯২ রানের বড় লক্ষ্য দিয়েছিল। এরপরও অবশ্য শুরুটা বেশ ভালো ছিল যুক্তরাষ্ট্রের। ওপেনার প্রণব ছেত্তিপালায়েমের ফিফটি তাদের কিছুটা আশা দেখায়। যদিও তার বিদায়ের পর মিডল অর্ডারের কাউকে সেভাবে থিতু হতে দেননি টাইগার যুবারা। যেখানে অধিনায়ক মাহফুজুর রাব্বি সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন।

১২১ রানের বড় বাংলাদেশকে যুব বিশ্বকাপের সুপার সিক্সে তুলে দিয়েছে। বাংলাদেশের রান তাড়ায় যুক্তরাষ্ট্র গুটিয়ে গেছে ১৭০ রানে। রাব্বি একাই নিয়েছেন ৪ উইকেট। ব্লুমফন্টেইনের এই জয় দিয়ে গ্রুপপর্ব শেষ করেছে টাইগাররা। ৩ ম্যাচে ২ জয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে তারা ‘এ’ গ্রুপের দ্বিতীয় স্থানে আছে। একই গ্রুপ থেকে টানা ২ জয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে আগেই সুপার সিক্স নিশ্চিত করেছে ভারতও।

বড় লক্ষ্য তাড়ায় সাবধানী ব্যাটিং শুরু করে মার্কিন যুবারা। যদিও দলীয় ১১ রানেই তারা ওপেনার বাভ্য মেহতার উইকেট হারায়। ব্যক্তিগত ৫ রানে তিনি রানআউটে কাঁটা পড়েন। এরপর দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন প্রণব ছেত্তিপালায়ম ও সিদ্ধার্থ কাপ্পা। দুজনে মিলে তোলেন ৭৫ রান। এরপর আবার ধস নামে যুক্তরাষ্ট্রের ইনিংসে। পরবর্তী ২৬ রানের মাঝেই তারা ৩ উইকেট হারায়।

সেই ধাক্কা সামলে পঞ্চম উইকেটে জুটি বাধেন উৎকর্ষ শ্রিবাস্তব ও অমোঘ আরেপাল্লি। যদিও তাদের সেই জুটি স্থায়ী হয় ৪১ রান পর্যন্ত। তাদের বিদায়ে ছন্দপতন হয় যুক্তরাষ্ট্রের। ফলে পরের ১৭ রানের মধ্যে শেষ ৬ উইকেট হারিয়ে ১৭০ রানেই অলআউট হয়ে যায়। মার্কিনিদের হয়ে সর্বোচ্চ ৫৭ রান করেছেন ছেত্তিপালায়েম। এছাড়া উৎকর্ষ ৩৭ এবং সিদ্ধার্থ কাপ্পা ১৮ রান করেন।

যুব টাইগারদের হয়ে রাব্বি ৪ উইকেট শিকার করেন ১০ ওভারে মাত্র ৩১ রান খরচায়। এছাড়া একটি করে উইকেট পেয়েছেন ইকবাল হোসেন ইমন, পারভেজ হোসেন জীবন, রাফি উজ্জামান রাফি ও আরিফুল ইসলাম। অনবদ্য সেঞ্চুরির পর এক উইকেট নিয়ে আরিফুল ম্যাচসেরার পুরস্কার পেয়েছেন।

এর আগে ব্লুমফন্টেইনে ব্যাটিংয়ে নেমে ইনিংস বড় করতে পারছিলেন না কেউই। শেষমেশ পূর্ণতা দিলেন টাইগার অলরাউন্ডার আরিফুল। ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে তিনি ছুঁলেন তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার। ভারতের কাছে হেরে যুব বিশ্বকাপের আসর শুরু করেছিল বাংলাদেশ। তবে পরের ম্যাচেই আইরিশদের হারিয়ে ঘুরে দাঁড়ায় এশিয়ার চ্যাম্পিয়নরা। যুব বিশ্বকাপের সুপার সিক্স নিশ্চিত করতে এই ম্যাচে জিততেই হতো টাইগারদের। হারলে পড়ে যেতে হতো যদি-কিন্তুর হিসাবে!

টস হেরে ব্যাট করতে নেমে অবশ্য শুরুটা তেমন স্বস্তির ছিল না ইয়াং টাইগারদের। দলীয় ২৯ রানে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। আর্য গার্গের বলে পার্থ প্যাটেলের হাতে ক্যাচ দেওয়ার আগে ওপেনার আদিল করেন ২৮ বলে ১৩ রান। এরপর চৌধুরী মো. রিজওয়ানকে নিয়ে জুটি গড়ার চেষ্টায় ছিলেন আশিকুর রহমান শিবলি। তাদের জুটি বড় হওয়ার আগেই রণে ভঙ্গ দেন শিবলি। নাদকার্দির শিকার হওয়ার আগে ৪৫ বলে ২৭ রান আসে তার ব্যাট থেকে। সর্বশেষ যুব এশিয়া কাপের সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক এই তরুণ ব্যাটার বিশ্বকাপে এখনো সেভাবে নিজেকে মেলে ধরতে পারছেন না।

দুই ওপেনারের বিদায়ের পর দলের হাল ধরার চেষ্টায় ছিলেন রিজওয়ান ও আরিফুল। তবে এবার সাজঘরে ফেরেন রিজওয়ান। ৪০ বলে ৩৫ রান এসেছে তার ব্যাট থেকে। এরপর আর কোনো বিপদ হতে দেননি আরিফুল ও আহরান জুটি। দুজনের ১১৫ বলে ১২২ রানের জুটিটিই বাংলাদেশকে বড় পুঁজির ভিত্তি গড়ে দেয়।

ব্যক্তিগত ফিফটির দোড়গোড়ায় গিয়ে ৪৯ বলে ৪৪ রান করে ফেরেন আহরার আমিন। অন্যপ্রান্তে ১০৩ বলে ৯ চারে সাজানো ১০৩ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেন আরিফ। এবারের আসরে বাংলাদেশি কোনো ব্যাটারের প্রথম সেঞ্চুরি এটি। এ ছাড়া শেষ দিকে ব্যাট করতে নেমে অধিনায়ক মাহফুজুর রহমান রাব্বি ১৭ বলে ৩১ রানের এক ক্যামিও ইনিংস খেলেন।

বাংলাদেশের বড় সংগ্রহের দিনে বল হাতে যুক্তরাষ্ট্রের আর্য গার্গ ৩টি এবং আরিন নাদকার্দি নেন ২টি উইকেট।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: ক্রিকেট বিশ্বকাপ, বাংলাদেশ ক্রিকেট
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন