উত্তপ্ত বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী রাখাইন, পালাচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ

fec-image

বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। রাখাইনভিত্তিক সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) সঙ্গে সেনাবাহিনীর ব্যাপক লড়াই হচ্ছে। এ লড়াই এখন পৌঁছে গেছে বাংলাদেশের টেকনাফ থেকে মাত্র ৩০ কিলোমিটার দূরের বুচিডংয়ে।

সেনাবাহিনীর সদস্যদের কাছ থেকে রাখাইনের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছে আরাকান আর্মি

দ্য আরকান এক্সপ্রেস নিউজ নামের স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, গত কয়েকদিন ধরে সেখানে প্রচণ্ড হামলা ও পাল্টা হামলা হচ্ছে। এরমধ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) বুচিডংয়ের একটি রোহিঙ্গা গ্রামে ভারী অস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়েছে জান্তা বাহিনী। তাদের ছোড়া দুটি বোমা সাধারণ মানুষের বাড়িতে আঘাত হানে। এতে ঘটনাস্থলেই তিনজনের মৃত্যু হয়।

বর্তমানে বুচিডং এবং আশপাশের অঞ্চলে মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ করে দিয়েছে জান্তা বাহিনী।

ইয়ুথ এশিয়া ফর মায়ানমার নামের একটি ফেসবুক পেজে জানানো হয়েছে, বুচিডংয়ের ফো নো লেক গ্রামের ১০০ বাসিন্দা বোমা হামলার ভয়ে অন্যান্য গ্রামে চলে গেছেন। সেখানে আরাকান আর্মির সদস্যদের লক্ষ্য করে হামলা চালানো হচ্ছে।

এরমধ্যে আজ শুক্রবার ভোরে দুটি বাড়ির ওপর বোমা পড়ে সেগুলোতে আগুন ধরে যায়। এই গ্রামের বাসিন্দারা এখন চরম আতঙ্কে আছেন। এমনকি বলা হচ্ছে যে, অনেকে আবার বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা চালাচ্ছেন।

নারিনজারা নামের মিয়ানমারের অপর এক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, আরাকান আর্মি এবং জান্তা বাহিনীর মধ্যে লড়াইয়ের আশঙ্কা থেকে রাখাইন ছাড়ছেন হাজার হাজার মানুষ। বিশেষ করে রাজধানী সিত্তে থেকে অনেকে ইয়াঙ্গুনে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে যাচ্ছেন।

সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, এত মানুষ রাখাইন ছাড়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন যে, আগামী মার্চ মাস পর্যন্ত ইয়াঙ্গুন যাওয়ার বিমানের সব টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। এখন কেউ যদি বিমানে রাখাইন ছাড়তে চান তাহলে টিকিটের জন্য মার্চ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

সংবাদমাধ্যমটি অপর এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বুচিডং সীমান্ত পুলিশ স্টেশনগুলোতে জান্তা বাহিনীর যেসব সেনা এসেছিলেন তাদের প্রত্যাহার করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। মূলত আরাকান আর্মির সদস্যরা হামলা চালাতে পারেন এ আশঙ্কা থেকে তাদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

আরকান আর্মি গতকাল জানায় তারা রাখাইনের গুরুত্বপূর্ণ বন্দরনগরী পাউকতাও পুরোপুরি দখল করেছে তারা। দীর্ঘ দুই মাস জান্তাবাহিনীর সঙ্গে লড়াই শেষে শহরটির নিয়ন্ত্রণ নিতে সক্ষম হয় এই সশস্ত্র গোষ্ঠী।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: বিশ্ব সংবাদ, মিয়ানমার, মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থান
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন