রাঙামাটিতে দোতলা ভবন ধস: নিহত-৪, ভবনের মালিকের বিরুদ্ধে মামলা, তদন্ত কমিটি গঠন

356447836-copy

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাঙামাটি শহরে একটি দোতলা ভবন কাপ্তাই হ্রদে ধসে পড়েছে। এ ঘটনায় বাবা মেয়েসহ কমপক্ষে ৪ জন নিহত হয়েছে ।

নিহতরা হলেন- মো. জাহিদ ড্রাইভার (৪০) ও তার মেয়ে পিংকি আক্তার (১৩) এবং উম্মে হাবিবা (২২), সামাদ (১২) । বিকাল ৫টার দিকে শহরের সরকারি মহিলা কলেজ এলাকায় এঘটনা ঘটে।

এখনো পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছে আরও একজন। উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে কাপ্তাই নৌবাহিনী, সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, বিজিবি ও রেড ক্রিসেন্টের সদস্যরা।

এ ঘটনায় রাঙামাটি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মোয়াজ্জেম হোসেনকে প্রধান করে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়া বাড়ীর মালিক টিটু বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে রাঙামাটি কোতয়ালী থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানান রাঙামাটি জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাদ) মো. সাফিউল সারোয়ার।
অন্যদিকে নিহতদের পরিবারদের ২০ হাজার টাকা করে অনুদান প্রদান করেছে রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মানজারুল মান্নান।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বিকেল ৫টার দিকে টিনের ছাদ দেয়া ভবনটি পানিতে হেলে যেতে দেখা যায়। ভবনটি হেলে যাওয়ার পরপর দু-তিনজন বেরিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছেন। কিন্তু কাপ্তাই হ্রদের পানিতে ভবনের অর্ধেক অংশ ডুবে যাওয়া ঘর থেকে বেড় হতে পারেনি চারটি পরিবারের কমপক্ষে ৮জন মানুষ।

rangamati-bobn-pic2

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে ফায়ার সার্ভিস, সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিজিবি ও রেড ক্রিসানসহ স্থানীয়রা। দীর্ঘক্ষণ চেষ্টা চালিয়ে ভবনের কিছু অংশ ভেঙ্গে উদ্ধার করা হয় মো. জাহিদ ড্রাইভার (৪০) ও তার মেয়ে পিংকি আক্তার (১৩) এবং উম্মে হাবিবা (২২), সামাদকে।

উদ্ধারের পর তাদের দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্মরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করে। এদিকে এ ঘটনা খবর শহরে ছড়িয়ে পড়লে সাধারণ মানুষের ঢল নামে ঘটনাস্থলে। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে।

এব্যাপারে রাঙামাটি অতিরিক্ত সিভিল সার্জেন রুহী বনানী জানান, চারজনকে হাসপাতালে নেওয়া আসা হয়েছিল। কিন্তু এ আগেই পানিতে নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে তাদের মৃত্যু হয়েছে।

উদ্ধার হওয়া ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, কাপ্তাই হ্রদ তীরবর্তী এলাকায় দীর্ঘ বছরের পুরো ভবনটিতে বসবাস করতো ৪টি পরিবার। সম্প্রতি কাপ্তাই হ্রদে পানি বেড়ে যাওয়া ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়ে তৈয়ব আহমেদের ভবনটি। কিন্তু তারপরও ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছিল তারা।

বিকাল ৫টার দিকে হঠাৎ ভবনটির পাশে একটি নারিকেল গাছ পানিতে ধসে পরে। এপরপরই ভবনটিও ধসে পড়ে। ভবনের নিচের তলার এখনো পর্যন্ত একজন আটকা পরে আছে।

এদিকে ঘটনা খবর পেয়ে ঘটনা স্থলে ছুটে যায় রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মানজারুল মান্নান, রাঙামাটি সদর জোন কমান্ডার লে. কর্নেল মালিক সামস উদ্দিন মোহাম্মদ মঈন, রাঙামাটি জেলা পুলিশ সুপার সাঈদ তারিকুল হাসান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সফিউল সারোয়ার, রাঙামাটি ফায়ার সার্ভিস সহকারী পরিচালক মো. গোলাম মোস্তফাসহবিভিন্ন বিভাগ ও প্রশাসনিক শীর্ষ কর্মকর্তারা ।

রাঙামাটি সদর জোন কমান্ডার লে. কর্নেল মালিক সামস উদ্দিন মোহাম্মদ মঈন জানান , ঘটনাস্থল থেকে ৪জনের লাশ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। হয়তো পানির নিচে ভবনের ভিতরে আরও মানুষ থাকতে পারে। তাদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। যতখন পর্যন্ত ভবনে সব মানুষকে উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত এ উদ্ধার কাজ অব্যবহত থাকবে।

অভিযোগ উঠেছে, রাঙামাটির কাপ্তাই লেক দখল করে পানির ওপর দোতলা তলাবিশিষ্ট পাকা বাড়িটি নির্মাণ করেন স্থানীয় ঠিকাদার টিটু। এরপর একাধিক পরিবারকে ভাড়া দেন বাড়িটিতে। দীর্ঘ বছরের পুরো বাড়িটি অনেক আগেই ঝুকিপূর্ণ হযে উঠে। কিন্তু তারপরও ওই বাড়িতে বসবাস করতো চারটি ভাড়াটিয়া পরিবার।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন