রাঙামাটি সিনিয়র মাদ্রাসায় সহকারী শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম ও দুর্নীতি অভিযোগ

image_47007

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাঙামাটি সিনিয়র মাদ্রাসায় সহকারী শিক্ষক নিয়োগে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি অভিযোগ উঠেছে। সরকারী বিধিমোতাবেক যথাযথ অনুসরণ না করে স্বজনপ্রীতির আশ্রয় নেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে ইন্টারভিউ বোর্ড কর্তৃক আপক্তি উপস্থাপন করিলে তৎক্ষনিক ফল প্রকাশ স্থগিত করা হয়েছে।

 

নিয়োগ পরীক্ষার এসব অনিয়মের বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের সচিব ,মহাপরিচালক মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর ,অতিরিক্ত মহাপরিচালক, পরিচালক (প্রশাসন) মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরসহ সদয় অবগতি ও প্রয়োজনীয় কার্যার্থে প্রকাশের জন্য বিভিন্ন প্রিন্ট মিডিয়ার কাছে প্রেরণ করা হয়।

অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, ২২ মার্চ ২০১৩ তারিখে রাঙামাটি সিনিয়র মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ স্থানীয় পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির যথাযথ সরকারি বিধিমোতাবেক সহকারী শিক্ষক পদে(সমাজ বিজ্ঞান) যোগ্য প্রার্থীদের নিকট দরখাস্ত আহবান করলে রিজার্ভ এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা নার্গিস আক্তার পিতা- আবদুল হালিম ইনডেক্স নং-১০২৮০৩৬ যথাযথ ভাবে আবেদন করে। আবেদন মুলে প্রার্থী ২৯/৬/২০১৩ ইং তারিখে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে প্রথম স্থান লাভ করলেও নিয়োগ পরীক্ষা বাতিলের কোন তথ্য প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ না থাকার পরও  অধ্যক্ষ সম্পুর্ণ অন্যায়ভাবে নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল করে।

পুনরায় মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের অফিসিয়াল ওয়েব সাইটে ২৬/১/২০১৪ইং হতে ৯/২/১৪ ইং সময়কালে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতেও সরকারী নিয়ম অনুসারে সহকারি শিক্ষক পদে(সমাজ বিজ্ঞান) উপযুক্ত প্রার্থীদের নিকট দরখাস্ত আহবান করলে স্থায়ী বাসিন্দা নার্গিস আক্তার পিতা- আবদুল হালিম যথাযথ ভাবে আবেদন করে ৩/৫/২০১৪ইং নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ।

কিন্তু এবার নিয়োগ পরীক্ষায় ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে অত্র মাদ্রাসার গণিত শিক্ষক নুরুল আমিন পারস্পারিক যোগসাজশে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে একজন প্রভাষক নিবন্ধনকারীকে প্ররোচিত করে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রণীত এমপিওভুক্ত বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জনবল কাঠামো সংক্রান্ত আইন(এনটিআরসিএ) এর শিক্ষক নিবন্ধন আইনের সরসরি লংঘন করে আবেদন গ্রহন,ইন্টারভিউ কার্ড ইস্যু দেখিয়ে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহন করার সুযোগ দেয় যা সম্পুর্ণ সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার বিধিবহিভুত ও আইনসিদ্ধ নয় বলে দাবী করে অভিযোগকারী ।

অনুসন্ধানে জানাগেছে, প্রভাষক নিবন্ধনধারীর নিবন্ধন সার্টিফিকেটই সুস্পষ্ট প্রমাণ করে সহকারী শিক্ষক হিসাবে আবেদনের অযোগ্যতার সুস্পষ্ট দলিল। যার প্রেক্ষিতে এ বিষয়ে ইন্টারভিউ বোর্ড কর্তৃক আপক্তি উপস্থাপন করিলে তৎক্ষনিক ফল প্রকাশ স্থগিত করা হয়। এই বিষয়ে প্রার্থী নার্গিস আক্তার রাঙামাটি সিনিয়র মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটির সভাপতি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মুছা মাতব্বর বরাবরে আবেদন করে। সভাপতি বিষয়টি গুরুত্ব অনুধাবন করে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিক্তে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে তদন্ত করার জন্য দায়িত্ব প্রদান করেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে তৃতীয় দফায় সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে উপযুক্ত তথ্য প্রমাণসহ আবেদন করলে উপজেলা শিক্ষা অফিসার ত্রিরতন চাকমাকে তদন্তের জন্য দায়িত্ব প্রদান করা হয়।

এদিকে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি অভিযোগের বিষয়ে কোন রকম নিস্পক্তি না করে  গণিত শিক্ষক নুরুল আমিন এবং যুগপৎ রাঙামাটি রিজার্ভ বাজার জামে মসজিদের ইমাম ও রাঙামাটি সিনিয়র মাদ্রাসার অধ্যক্ষ কর্তৃক প্রভাবিত হয়ে প্রভাষক নিবন্ধনকারীকে সহকারী শিক্ষক হিসাবে চুড়ান্তভাবে নিয়োগের সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে ।

তিনবার নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়ার নিয়ম রয়েছে বলে জানান গণিত শিক্ষক নুরুল আমিন। যার প্রেক্ষিতে ১ম বার ৩ জন ২য় বার ২জন ও শেষ বারে ২টি পদে ৭ জন নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহন করেছে। তিনি উপস্থিত সংবাদকর্মীদের জানান নিয়োগ কমিটির সদস্যদের সুপারিশক্রমে নিয়োগ প্রক্রিয়া চুড়ান্ত করা হয়েছে।  নিয়োগ কমিটির সদস্যরা হলেন মোঃ ফেরদৌস কবির রাঙামাটি সরকারি কলেজের অধ্যক্ষের প্রতিনিধি,জেলা শিক্ষা অফিসারের প্রতিনিধি। সাংবাদিক মোস্তফা কামাল,প রিচালনা কমিটির সভাপতি মুছা মাতব্বর ও অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম নঈমী ।

জেলা শিক্ষা অফিসার ফজলুর রহমান বলেন , প্রভাষক নিবন্ধনকারী সহকারী শিক্ষক পদে(সমাজ বিজ্ঞান) বিভাগে দরখাস্ত করতে পারে না। তদন্ত কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন আছে। এই বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার ও অভিযোগের বিষয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা ত্রিরতন চাকমা প্রতিবেদককে জানান, এখনো তদন্ত কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন আছে। রাঙামাটি সিনিয়র মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটির সভাপতি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মুছা মাতব্বর বলেন এই বিষয়ে তদন্ত চলছে। তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন হলে বুঝা যাবে অভিযোগ সত্য না মিথ্যা।

রাঙামাটি সিনিয়র মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা নজরুল ইসলাম নঈমী বলেন, আমরা এখনো কাউকে নিয়োগ দেয়নি তদন্ত করার পর নিয়োগ কমিটির সুপারিশক্রমে ২টি পদে নিয়োগ দেয়া হবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন