রাঙ্গামাটিতে শেষ হলো কঠিন চীবর দান

রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি:

রাঙ্গামাটিতে লাখো মানুষের সাধু সাধু ধ্বনিতে শেষ হলো রাজবন বিহারের দুই দিনব্যাপী কঠিন চীবর দান। শুক্রবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে রাজবন বিহারে চরকায় সূতা কেটে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তৈরি বৌদ্ধ ভিক্ষুদের পরিধেয় চীবর দান করা হয়েছে।

এসময় রাজবন বিহারে চাকমা সার্কেল চিফ ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কোমল তাঁতে তৈরি কঠিন চীবর বনভান্তের প্রধান শিষ্য শ্রীমৎ প্রজ্ঞালংকার মহাস্থবিরের হাতে তুলে দেন। এ সময় লাখো মানুষের সাধুবাদে মুখরিত হয় রাজবন বিহারের এলাকা। এর আগে পরিবেশিত হয় ধর্মীয় সংগীত এবং পরে গ্রহণ করা হয় পঞ্চশীল।

কঠিন চীবর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, রাঙ্গামাটি সংসদ সদস্য উষাতন তালুকদার, রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বৃষকেতু চাকমা, রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক একেএম মামুনুর রশিদ, চাকমা রাণী য়েন য়েন, সাবেক রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা, জেলার শীর্ষ সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তারা।

লাখো মানুষের সাধুবাদে ভিক্ষু সংঘকে কঠিন চীবর দান গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজবন বিহারে চরকায় সূতা কেটে বেইন বুনন কাজের উদ্বোধন করেন চাকমা রাণী য়েন য়েন রাখাইন। রাতের মধ্যে তৈরি এই কঠিন চীবরটি শুক্রবারে দান করা হয়েছে।

এই উৎসবে যোগ দিতে লাখো মানুষের ঢল নামে রাঙ্গামাটিতে। তিন পার্বত্য জেলা ছাড়া দেশ-বিদেশের হাজারো দর্শণার্থী এই অনুষ্ঠান দেখতে রাঙ্গামাটিতে ভিড় করে। এই অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে শুধু রাজবন বিহার এলাকায় নিয়োগ ছিল ৫ শতাধিক পুলিশ।

তথাগত গৌতম বুদ্ধের আমলে উপসিকা বিশাখা কর্তৃক প্রবর্তিত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তুলা থেকে সূতা কাটা এবং এই সূতা দিয়ে কোমর তাঁতের মাধ্যমে তৈরি চীবর ভিক্ষুসংঘের উদ্দেশ্য দান করা হয়। এই নিয়ম অনুসরণ করে পার্বত্য চট্টগ্রামে বৌদ্ধ ধর্মালম্বীরা এই দান কার্য সম্পাদন করে থাকেন। বৌদ্ধ শ্বাস্ত্রমতে এই দান সবচেয়ে বড় দান বলে একে বলা হয় কঠিন চীবর দান।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন