রাত নামলেই নেশাররাজ্যে পরিনত হয় মেঘলা পর্যটন কেন্দ্র
নিজস্ব প্রতিনিধি:
বান্দরবানে রাত নামলেই নেশারাজ্যে পরিনত হয় মেঘলা পর্যটন কেন্দ্রটি। বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা বখাটেদের নেশাজগতের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে কেন্দ্রটি।
কেন্দ্রের মূল ফটক ও আশেপাঁশে কিছুটা জায়গায় প্রাচীর দেওয়া থাকলেও পিছনের বেশির ভাগ অংশে প্রাচীর না থাকায় অনেকটাই খোলামেলা।
রাতের আঁধারে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করে মাদকসেবীরা মদ, গাঁজা সেবন ও জুয়া খেলাসহ বিভিন্ন অপকর্মের নিরাপদ স্থান হিসেবে ব্যবহার করছে পর্যটন কেন্দ্র মেঘলার এ খোলা অংশটি।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, মেঘলার মূল সড়কের সামনের অংশে পর্যটকদের জন্য দেয়া হয়েছে একটি আর্কশনীয় গেইট। সাথেই রয়েছে টিকিট কাউন্টার। আর এর চারপাশেই রয়েছে কাঁটাতারের বেড়া। কিন্তু পেছনের অংশের চিত্র পুরোপুরি ভিন্ন।
প্রায় ৫০ একরের উপরে বিস্তীর্ণ এলাকায় কোন ধরনের কাঁটাতার বা অবৈধভাবে প্রবেশে বাঁধা সৃষ্টির কোন ধরনের ব্যবস্থা নেই।
স্থানীয়দের অভিযোগ সম্প্রতি সময়ে এসব খোলা অংশ দিয়ে প্রতিদিন সন্ধ্যার পর বিভিন্ন জায়গা থেকে বখাটে লোকজন প্রবেশ করে মদ পান করা, গাঁজা সেবন করা, জুয়া খেলা ছাড়াও বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত হচ্ছে। এছাড়া জাল ফেলে লেকের মাছ চুরি করার মতো ঘটনাও ঘটাচ্ছে। তাদের দাবি রাতে নেশাররাজ্যে পরিনত হয় মেঘলা পর্যটন কেন্দ্রের এ খোলা অংশটি।
তারা অভিযোগ করেন, আগে চিড়িয়াখানা সড়কটি খোলা থাকা অবস্থায় ওখানেও মদ, গাঁজা, জুয়াখেলাসহ নানা ধরনের অপকর্ম চলতো। পরে বছর দুই আগে চিড়িয়াখানা সড়কে একটি নতুন গেইট দেয়ারপর ওইখানের পরিবেশ এখন সুন্দর হয়ে উঠেছে। এভাবে পুরো এলাকাজুড়ে কাঁটা তার, নেটের বেড়া দিযে নিরাপত্তার ব্যবস্থার দাবি জানান। না হলে বখাটেদের অনৈতিক কাজের প্রভাব পুরো এলাকায় ছড়িয়ে যাবার আশংকা করছেন স্থানীয়রা।
এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা মো. জসিম উদ্দিন বলেন, মেঘলার সামনের কিছু অংশে কাঁটাতারের বেড়া থাকলেও অধিক অংশই খোলা রয়েছে। এসব খোলা অংশ দিয়ে সন্ধ্যার পর নানা ধরনের লোকজন প্রবেশ করে মদ, গাঁজা, জুয়া খেলা, লেকের মাছ চুরি করে নিয়ে যাওয়াসহ নানা ধরনের অসামাজিক কাজে লিপ্ত হচ্ছে।
যদি এখনই এর চারপাশে নিরাপত্তা বেষ্টনী দেয়া না যায় তবে মেঘলা ও তার আশপাশের বর্তমান পরিবেশ নষ্ট হয়ে যাবে।
মেঘলার স্থানীয় বাসিন্দা ললিত জলদাশ বলেন, সন্ধ্যার পর খোলা অংশ দিয়ে বখাটেরা প্রবেশ করে নানা ধরনের অপরাধমূলক কাজ করছে। খোলা অংশে বেড়া দিয়ে জেলা প্রশাসনের এসব অপরাধমূলক কাজ বন্ধ করা উচিত।
তিনি বলেন, শুধু মদ, গাঁজা, জুয়া খেলা, মাছ চুরিই নয়। বেশ কয়েকবার ভেতরে প্রবেশ করে মানুষকে ছুড়ি মেরে হত্যা চেষ্টাসহ ধর্ষণের মত ঘটনাও ঘটেছে। এসব অপরাধ যেন ভবিষ্যতে না হয় তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানান তিনি।
এ বিষয়ে বান্দরবান জেলা প্রশাসক মো. দাউদুল ইসলাম বলেন, মেঘলা ও তার পাশে কাঁটাতারের বেড়া দেয়া থাকলেও এর একটি বিরাট অংশে এখনো কোন বেড়া দেয়া হয়নি। আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পর্যটন কেন্দ্রের নিরাপত্তা ও সৌন্দর্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে যে দিকে খোলা অংশ রয়েছে সেখানে বেড়া দেবার পরিকল্পনা করছি। আশা করছি শীঘ্রই বেড়া দিয়ে মেঘলা ও তার চারপাশকে আরও সুন্দর করতে পারবো।