রামগড়ের বেলছড়িতে পাহাড়ি বাঙালিদের নিয়ে প্রশাসনের শান্তি বৈঠক

Ramgarh 22

রামগড় প্রতিনিধি:

খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলার ঝর্ণাছড়া নামক দুর্গম এলাকায় অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা বাঙ্গালীদের ঘরে অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুরের ঘটনায় পাহাড়ি বাঙালিদের মধ্যে সৃষ্ট উত্তেজনা প্রশমনে বুধবার প্রশাসনের উদ্যোগে শান্তি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বেলছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এ শান্তি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে রামগড় উপজেলা নির্বাহি অফিসার মো. ইকবাল হোসেন, সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. শরিফুল ইসলাম, রামগড় সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার কাজী হুমায়ুন কবির, রামগড় থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মাইন উদ্দিন খাঁন, পাতাছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিন্দ্র ত্রিপুরা ও স্থানীয় ইউপি মেম্বার মানেন্দ্র ত্রিপুরা উপস্থিত ছিলেন।

সোমবার রাতে উপজেলার পাতাছড়া ইউনিয়নের দূর্গম প্রত্যন্ত এলাকা ঝর্ণাছড়ায় একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী আগুন দিয়ে বাঙালিদের দু‘টি বসতঘর পুড়িয়ে দেয় এবং দু‘টি ঘর ভাংচুর করে মালামাল লুণ্ঠন করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় রামগড় থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার।

ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো জানান, সোমবার ইফতারের পর ১০ থেকে ১৫ জন সশস্ত্র উপজাতীয় সন্ত্রাসী ঝর্ণাছড়া এলাকার বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম (৫৫) এর বসতবাড়িতে হানা দেয়। সন্ত্রাসীরা এ গৃহকর্তার কাছে চাঁদাদাবি করে। চাঁদা দিতে অসন্মতি জানালে সন্ত্রাসীরা শফিকুল ইসলাম ও তার ভাতিজা এবায়দুলকে লাঠি দিয়ে এলোপাথারি পিটায়। সন্ত্রাসীরা পরিবারগুলোকে এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার হুমকি দেয়। পরে চলে যাওয়ার সময় তারা পার্শ্ববর্তী দীন আলী মোল্লা ও জেসমিন আকতারের দু‘টি বসতঘরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয় এবং মজিবুর ও মোশাররফের দু‘টি ঘর ভাংচুর করে মালামাল মালাম লুণ্ঠন করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় গত মঙ্গলবার দীন আলী মোল্লার পুত্র মাসুম বিল্লাহ বাদি হয়ে রামগড় থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

এদিকে বসতঘরে অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুরের ঘটনায় ওই এলাকায় পাহাড়ি ও বাঙালি গ্রামবাসীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। এ পরিস্থিতিতে উপজেলা প্রশাসন বুধবার বেলছড়িতে পাহাড়ি বাঙ্গালী গ্রামবাসীদের নিয়ে শান্তি বৈঠক করে। বৈঠকে সন্ত্রাসীদের হাতে নির্যাতিত শফিকুল ইসলাম ও এবায়দুল গাজি ছাড়াও বক্তব্য দেন ইউপি মেম্বার রাশেদুল হক, আব্দুল আজিজ গাজি, স্থানীয় কার্বারি থপরাই ত্রিপুরা, সুরেন্দ্র ত্রিপুরা, সমরায় ত্রিপুরা প্রমূখ।

পাহাড়ি বাঙালি উভয় গ্রামবাসী তাদের বক্তব্যে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখা ও বাসিন্দাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বেলছড়ি এলাকায় নিরাপত্তাবাহিনীর নিয়মিত টহলদান এবং পুলিশ বা সেনাবাহিনীর ক্যাম্প স্থাপনের জোর দাবি জানানো হয়। বৈঠকে এলাকার শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষা ও দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে গ্রামবাসীদের সচেতন করা এবং

আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সাথে যোগাযোগ সমন্বয় করতে ৩৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। উপজাতি ও বাঙালি গ্রামবাসীদের সমন্বয়ে গঠিত ওই কমিটির প্রধান করা হয় স্থানীয় ইউপি মেম্বার মানেন্দ্র ত্রিপুরাকে। এছাড়া শান্তিশৃঙ্খলা সার্বিক তদারকির জন্য পাতাছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিন্দ্র ত্রিপুরাকে অনুরোধ জানানো হয়।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন