রিয়ালকে বিধ্বস্ত করে ‘প্রথম’ শিরোপা বার্সেলোনার

fec-image

জাভি হার্নান্দেজ কোচ হওয়ার পর প্রায় দেড়টি মৌসুম কেটে গেছে; কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনো শিরোপার নাগাল পায়নি বার্সেলোনা। অবশেষে সুপার এল ক্ল্যাসিকোয় রিয়াল মাদ্রিদকে হারিয়েই প্রথম শিরোপার দেখা পেলেন তিনি। এ কোন রিয়াল মাদ্রিদ! স্প্যানিশ সুপার কাপের ফাইনালে রিয়ালের পারফরম্যান্স দেখে যে কারও এমনটা মনে হতেই পারে। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনার বিপক্ষে রিয়াল যে দাঁড়াতেই পারেনি। সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদের কিং ফাহাদ স্টেডিয়ামে রিয়ালের অসহায় আত্মসমর্পণের কারণে দেখা মেলেনি এল ক্লাসিকোর চিরায়ত উত্তাপেরও।

বছরের প্রথম এল ক্লাসিকো ৩-১ গোলে জিতে প্রতিযোগিতার ১৪তম শিরোপাও নিশ্চিত করেছে বার্সেলোনা। বার্সার শিরোপা জয়ে দারুণ নৈপুণ্য দেখিয়েছেন রবার্ট লেভানডফস্কি ও গাভি। দুজনই একই সঙ্গে গোল ও অ্যাসিস্ট করেছেন। অন্য গোলটি করেছেন পেদ্রি। শেষ দিকে বেনজেমা রিয়ালের হয়ে একটি গোল শোধ করলেও সেটি ছিল সান্ত্বনা।

মরুর বুকে ম্যাচের শুরুতে ছিল লড়াইয়ের আভাস। বলের দখলে রিয়াল এগিয়ে থাকলেও, আক্রমণে দাপট দেখাচ্ছিল বার্সা। ম্যাচের ১৩ মিনিটে অল্পের জন্য গোলের সুযোগ হাতছাড়া করে জাভি হার্নান্দেজের দল। ডি-বক্সের সামান্য বাইরে থেকে নেওয়া রবার্ট লেভানডফস্কির দুর্দান্ত এক শট রিয়াল গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়ার হাতে লেগে পোস্টে প্রতিহত হয়ে ফিরে আসে। এরপর আলেসান্দ্রো বালদের ফিরতি শট পোস্টের বাইরে দিয়ে যায়।

১৯ মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ এসেছিল রিয়ালের সামনে। তবে করিম বেনজেমার হেড অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। বার্সা এ সময় ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ রেখে আক্রমণে যাওয়ার চেষ্টা করলেও, রিয়ালের চোখ ছিল পাল্টা আক্রমণে। গোলের জন্য দুই দলের মরিয়া প্রচেষ্টা ম্যাচের উত্তেজনাও বেশ বাড়িয়ে দিয়েছিল।

তবে ধারাবাহিক আক্রমণের মুখে ম্যাচের ৩৩ মিনিটে এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। রিয়াল ডিফেন্সের ভুলে বল পেয়ে লেভানডফস্কি পাস বাড়ান গাভির উদ্দেশ্যে। বল পেয়ে ভুল করনেনি এই তরুণ তুর্কি। নিঁখুত ফিনিশিংয়ে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন গাভি।

শুরুতে গোল খেয়ে জেগে ওঠার চেষ্টা করে রিয়াল। একাধিকবার বার্সা ডিফেন্সে হানাও দেয়, তবে কাঙ্ক্ষিত গোলটি পাওয়া হচ্ছিল না। উল্টো বিরতির আগ মুহূর্তে আবারও দেখা মেলে সেই গাভি-লেভা জাদুর। এবার অবশ্য গাভির সহায়তায় গোল করেন লেভা। তবে এই গোলে অসাধারণ একটি পাস ছিল ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ংয়ের। অবশ্য এবারও প্রথম গোলের মতো দায় ছিল রিয়ালের ডিফেন্সিভ ভুলের। প্রথমার্ধেই ম্যাচ থেকে একরকম ছিটকে যায় রিয়াল।

বিরতির পর এদোয়ার্দো কামাভিঙ্গাকে তুলে নিয়ে রদ্রিগোকে নামান রিয়াল কোচ কার্লো আনচেলত্তি। তবে ৫১ মিনিটে তৃতীয় গোলটি করে ম্যাচটা সেখানেই শেষ করে দিতে পারত বার্সা। রিয়াল গোলরক্ষক কোর্তোয়ার দুর্দান্ত সেইভের কারণে সে যাত্রায় গোল বঞ্চিত হন উসমান দেম্বেলে।

৫৪ মিনিটে ফের লেভাকে নিরাশ করেন কোর্তোয়া। এ সময় গোল দূরে থাক, সেভাবে সম্ভাবনাও তৈরি করতে পারছিল না রিয়াল। উল্টো নিজেরাই বারবার হুমকির মুখে পড়ছিল। সেই হুমকিতেই ম্যাচের ৬৯ মিনিটে ধসে পড়ে রিয়াল ডিফেন্স। এবারও রিয়ালের রক্ষণভাগের ভুল ছিল চোখে পড়ার মতো।

৭০ মিনিট পেরোনোর আগেই শেষ হয়ে যায় রিয়ালের শিরোপা ধরে রাখার সম্ভাবনা। এরপর চেষ্টা করেও আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি ‘লস ব্লাঙ্কোস’ শিবির। রিয়ালের দারুণ কিছু আক্রমণ ঠেকিয়েছেন বার্সেলোনার গোলরক্ষক টার স্টেগেন। শেষ দিকে বেনজেমা একটি গোল শোধ করলেও সেটি ছিল শুধুই সান্ত্বনা।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: বার্সেলোনা, রিয়াল
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন