ইন্টারের মাঠে হার বার্সেলোনার

fec-image

বরাবরের মতোই বল দখলে এগিয়ে থাকে বার্সেলোনা। কিন্তু লা লিগায় ছুটে চলা দলটি আক্রমণে এবার কার্যকর হতে পারেনি। লক্ষণ জমাট রেখে প্রতি-আক্রমণ নির্ভর ফুটবল খেলে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে দারুণ এক জয় তুলে নিয়েছে ইন্টার মিলান।

ইতালির সান সিরোতে মঙ্গলবার রাতে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ‘সি’ গ্রুপের ম্যাচে বার্সেলোনার বিপক্ষে ১-০ গোলে জিতেছে স্বাগতিক ইন্টার মিলান। একমাত্র গোলটি করেন ইন্টারের জয়ের নায়ক হাকান কালহানোগলু।

ঘরোয়া লিগে টানা পাঁচ ম্যাচে জাল অক্ষত রেখে এবং টানা ছয় ম্যাচ জয়ের আত্মবিশ্বাস নিয়ে মাঠে নামে বার্সেলোনা। বিপরীতে মৌসুমের শুরু থেকেই ধুঁকছে ইন্টার; আট ম্যাচের চারটিতেই হেরে নেমে গেছে নবম স্থানে।

তবে তাদের মুখোমুখি লড়াইয়ে পাল্টে গেল সব হিসেব-নিকাশ। প্রতিপক্ষের মলিনতার সুযোগ কাজে লাগিয়ে জয়ের আনন্দে ভাসল ইন্টার। সাথে ‘সি’ গ্রুপ থেকে শেষ ষোলোয় উঠার হিসাবটাও হয়ে উঠল রোমাঞ্চকর।

কালহানোগলুর নৈপুণ্যে ম্যাচের সপ্তম মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারত স্বাগতিকরা। প্রায় ৩০ গজ দূর থেকে নেয়া তার বুলেট গতির শট সময়মতো লাফিয়ে কোনোমতে এক হাত দিয়ে বল ক্রসবারের ওপর দিয়ে বাইরে পাঠান বার্সেলোনা গোলরক্ষক মার্ক-আন্দ্রে টের স্টেগেন।

এরপর একচেটিয়া বল দখলে রেখে খেলতে থাকে বার্সেলোনা। কিছু হাফ-চান্সও পায় সফরকারীরা, কিন্তু রবার্ট লেভানডফস্কি, রাফিনহারা প্রতিপক্ষের ডি-বক্সে যথেষ্ট কার্যকর হতে পারেনি। বরং পাল্টা-আক্রমণে তুলনামূলক বেশি ভীতি ছড়াচ্ছিল ইন্টার।

তেমন এক পাল্টা আক্রমণ থেকে ম্যাচের ২৮তম মিনিটে মার্ক-আন্দ্র টের স্টেগেনকে কাটিয়ে বার্সেলোনার জালে বল পাঠান আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড হোয়াকিন কোরেয়া। কিন্তু তিনি অফসাইডে থাকায় গোলটি বাতিল হয়ে যায়।

একই ছন্দে খেলা এগিয়ে চলার মাঝেই বিরতির ঠিক আগে সফরকারীদের স্তব্ধ করে দেন কালহানোগলু। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে লাউতারো মার্তিনেজের জোরাল শট রক্ষণে প্রতিহত হওয়ার পর সতীর্থের পাস পেয়ে ২৫ গজ দূর থেকে নিখুঁত শটে পোস্ট ঘেঁষে বার্সেলোনার জালে বল জড়ান এই তুর্কি মিডফিল্ডার। ১-০ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় স্বাগতিকরা।

বিরতির পর বার্সেলোনা প্রথম উল্লেখযোগ্য সুযোগটি পায় ৬১তম মিনিটে। তবে উসমান ডেম্বেলের কোনাকুনি শট ইন্টার গোলরক্ষক ওনানার গ্লাভস ছুঁয়ে পোস্টে লাগে। পাঁচ মিনিট পর স্বাগতিকদের জালে বল পাঠান পেদ্রি, তবে তার আগে বল আনসু ফাতির হাতে লাগায় ভিএআরের সাহায্যে হ্যান্ডবলের বাঁশি বাজান রেফারি।

নির্ধারিত সময়ের শেষের পাঁচ ও যোগ করা সময়ের আট মিনিট একচেটিয়া আক্রমণ করে বার্সেলোনা। যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে ডি-বক্সে ইন্টারের বদলি ডিফেন্ডার ডামফ্রিসের হাতে বল লাগলে পেনাল্টির জোরাল আবেদন করে সফরকারীরা। তবে ভিএআরের সাহায্য তাতে সাড়া দেননি রেফারি। রেফারির এই অদ্ভুত সিদ্ধান্তে পুরোপুরি হতভম্ব হয়ে যায় বার্সা কোচ জাভি থেকে শুরু করে বার্সার সকল খেলোয়াড়রা। টিভি পর্দায় ভেঁসে উঠে ইন্টার কোচ সিমোন ইনজাগির চমকিত ভাবও।

খানিক পর আরেকটি সুযোগ পায় বার্সা। তবে লেভানডফস্কির প্রচেষ্টায় বল পোস্ট ঘেষে বেরিয়ে যায়। এরপর, শেষের বাঁশি বাজতেই জয়োল্লাসে ফেটে পড়ে সান সিরো। কঠিন সময়ে দলের আত্মবিশ্বাস ফেরানো জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে সিমোন ইনজাগির শিষ্যরা।

গ্রুপ ‘সি’তে তিন ম্যাচের তিনটিতেই জিতে ৯ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে বায়ার্ন মিউনিখ। দুই জয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় অকস্থানে সিমোন ইনজাগির ইন্টার। আসরে টানা দ্বিতীয় হারের পর বার্সেলোনা ৩ পয়েন্ট নিয়ে আছে তৃতীয় স্থানে।

আগামী বুধবার বার্সেলোনার ঘরের মাঠ ক্যাম্প ন্যু’তে ফিরতি লেগে মুখোমুখি হবে দল দুটি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন