রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে করোনার টিকা কার্যক্রম শুরু

fec-image

# ভাসানচরসহ ৩৫টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে টিকা দেয়া হচ্ছে। # ৫৬ কেন্দ্রে প্রতিদিন ৩শতাধিক রোহিঙ্গাকে করোনার টিকা দেয়া হবে।

কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফ ও ভাসানচরসহ ৩৫টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে করোনা ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হয়েছে। প্রতিদিন কমপক্ষে ৭ হাজার রোহিঙ্গাকে টিকা দেওয়া হবে। ৫৬টি কেন্দ্রে আগামী ১৮ আগস্ট পর্যন্ত প্রথম দফায় রোহিঙ্গাদের করোনার টিকা কার্যক্রম চলবে। প্রতিটি কেন্দ্রে ৩ শতাধিক রোহিঙ্গাকে করোনা ভ্যাকসিন দেওয়ার লক্ষে কাজ করছে সংশিষ্ট ক্যাম্প প্রশাসন। পাশাপাশি একই সময়ে ক্যাম্পের হেড মাঝি, ব্লক মাঝি, মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিনসহ ভ্যাকসিন দেয়ার কাজে নিয়োজিত ১৮ হাজার স্বেচ্ছাসেবকদেরও টিকার আওতায় আনা হচ্ছে।

কক্সবাজার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) কার্যালয় সূত্রে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এই কর্মসূচির বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।

মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) সকাল ১১টার দিকে উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প-৪ এক্সটেনশনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে রোহিঙ্গাদের মাঝে করোনার ভ্যাকসিন প্রদান কর্মসূচির উদ্বোধন করে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার শাহ রেজওয়ান হায়াত।

ইউএইচসিআর সূত্রে জানা গেছে, একজন ব্যক্তিকে দুই ডোজ কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন দেয়া হবে। যেখানে দুটি ডোজের মধ্যে ৪ সপ্তাহের ব্যবধান থাকবে।

কক্সবাজার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) কার্যালয়ের অতিরিক্ত কমিশনার সামশু দৌজা নয়ন জানান, আজ ১০ আগস্ট সকাল ১১টা থেকে ৩৫ টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ৫৬টি কেন্দ্রে ভ্যাকসিন দেয়া হচ্ছে। প্রথম দফায় ১৮ হাজার সেচ্ছাসেবকসহ ৬৬ হাজার রোহিঙ্গাজনকে ভ্যাকসিনের আওতায় আনা হবে।

কক্সবাজারস্থ শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার অফিসের প্রধান স্বাস্থ্য সমম্বয়ক ডা. আবু ত্বোহা বলেন, ভ্যাকসিন কার্যক্রমে স্বাস্থ্য বিভাগের সাথে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ১৮৬টি টিম কাজ করছে। প্রাথমিকভাবে ৫৬টি কেন্দ্রের মাধ্যমে আজ সকাল ৯ টা থেকে রোহিঙ্গাদের করোনা টিকা প্রদান শুরু হয়েছে।

সরকারী নির্দেশনা অনুযায়ী ৫৫ বছরের উর্ধ্বে বয়স্ক রোহিঙ্গাদের শুরুতে এ টিকার আওতায় আনা হচ্ছে।

করোনা ভ্যাকসিন নেয়ার পর কুতুপালং-৪এক্সটেনসন এর বাসিন্দা মোহাম্মদ শফি (৬৪) বলেন, রোহিঙ্গাদের জন্য করোনার টিকা ব্যবস্থা করা সরকারকে ধন্যবাদ। আমি নিজে টিকা দিয়েছি। কোন ধরণের পার্শ^প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। একই কথা বলেন, টিকা নেয়া জুহুরা খাতুন।

কুতুপালং-২ ইস্ট এর বাসিন্দা গোলবাহার (৬৮) আজ দুপুরে কোন ধরণের ঝামেলা ছাড়া করোনার টিকা দিয়েছি। আল্লাহর রহমতে ভালো আছি।

বালুখালী ক্যাম্প ৭ এর বাসিন্দা হোসন শরীফ (৬২) বলেন, টিকা নিতে প্রথমে ভয় পেয়েছিলাম, কিন্তু নেওয়ার পর বুঝলাম আসলে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। পিপড়ার কাপড়ের চেয়ে আরো কম অনুভূতি হয়েছে আমার।

এ সময় কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডা: মাহবুবুর রহমান, বিভিন্ন ক্যাম্পের ইনচার্জ ও সেবা সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত: করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ২৮ জন আক্রান্ত হয়ে মারা যান। গত ৯ আগস্ট পর্যন্ত করোনার নমুনা পরীক্ষা করেছেন ৫৪৭৯৬জন। তৎমধ্যে শনাক্ত হয়েছে ২৫৭৭জন। আইসোলেশনে রয়েছে ২৩২জন রোহিঙ্গা।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন