লক্ষ্মীছড়িতে এডিপি’র বরাদ্দের ২১লাখ টাকার কাজ ভাগাভাগি

fec-image

অনিয়ম

সময় বাকি মাত্র ৫দিন, এখনো কাজ শুরু হয় নি

মোবারক হোসেন:

খাগড়াছড়ি জেলার লক্ষ্মীছড়ি উপজেলায় বার্ষিক উন্নয়ন প্রকল্প(এডিপি) শেষ কিস্তি হিসেবে সরকারের দেয়া বরাদ্দ ২১লাখ টাকার কাজ উপজেলা চেয়ারম্যান ও কতিপয় সরকারি ঠিকাদারী লোকজন ভাগ-বাটোয়ারা করে নিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ৬লাখ টাকা প্রকল্পের মাধ্যমে এবং বাকি ১৫লাখ টাকা টেন্ডারের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করার কথা। সে ক্ষেত্রে কোনটিই পালন করা হয়নি।

চলতি জুন মাসের ১০ তারিখে এ বরাদ্দ পত্র আসলেও এখনো পর্যন্ত টেন্ডার প্রক্রিয়ার কোন খবর পাওয়া যায় নি। তবে সময় স্বল্পতার কারণে কোটেশানের মাধ্যমে ঠিকাদারদের কাজ দেয়ার কথা থাকলেও সেটি করা হয়েছে অত্যন্ত গোপনে। এ ক্ষেত্রে লক্ষ্মীছড়ি এলজিইডি নিরবতা পালন করছে।

সূত্রে জানা যায়, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের একক ক্ষমতাবলে নিজে এবং তার পছন্দের লোকজনের নামে কাজগুলে ভাগ করে নিয়েছেন। সে ক্ষেত্রে সরকার দলীয় কতিপয় কয়েকজন ঠিকাদারকে ম্যানেজ করেছেন মাত্র।

এ ব্যাপারে গত ২৩ জুন লক্ষ্মীছড়ির এলজিইডি’র উপ-সহকারি প্রকৌশলী মো: মোবারক উল্লাহ জানান, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা, উপজেলা চেয়ারম্যান সব বলতে পারবে।

উপজেলা প্রকৌশলী মো: শাহ আলম অসুস্থজনীত কারণে তেমন কিছু বলতে পারেন নি অফিস সহকারি মো: সেলিমের কাছে জানতে বলেন।
অফিস সহকারি মো: সেলিমকে তার কক্ষে গিয়ে পাওয়া যায় নি।

উপজেলা চেয়ারম্যান সুপার জ্যোতি চাকমাকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি অবশ্য বলেন, এখনো পুরোপুরি সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলা চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান মিলে ৩টি, হৃদয় কুমার চাকমার নামে ১টি, রত্ন বিন্দু চাকমা ও অসিম চাকমার নামে ১টিসহ প্রায় ১০লাখ টাকার কাজ নিজের মধ্যে রেখেছেন। বাকি ৫লাখ টাকার কাজ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জেলা পরিষদের সদস্য রেম্রাচাই চৌধুরী, আনোয়ার হোসেন, আবুল কালাম, মিজান ও টাতুমনি চাকমা’র মধ্যে ভাগ হয়েছে বলে জানা গেছে।

কাজের তালিকা প্রকাশিত না হওয়ায় পরিমাণ কম বেশি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ভাগাভাগি করে কাজ নিয়েছেন এটি অবশ্য কেউ স্বীকার করেন নি।

ভাইস চেয়ারম্যান অংগ্য প্রু মারমার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাকে বাইরে রেখেই এ কাজটি করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না।

লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ শওকত ওসমান বলেন, সময় আর বেশি দিন নাই, ৩০ জুনের মধ্যে কাজ শেষ করতে হবে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত আমার কাছে কোন ফাইল আসে নাই।

উপজেলা চেয়ারম্যানের পরামর্শে বিশাল অংকের কাজের এই ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে তোলপাড় চলছে পুরো উপজেলায়। আওয়ামী লীগের অনেক সিনিয়র নেতাদের মধ্যেও চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।

বুধবার (২৪ জুন) পর্যন্ত খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কোন ঠিকাদার কার্যাদেশ পান নি। কাজ ভাগাভাগি ও প্রকল্প তালিকা চূড়ান্ত করতে না পারাই বিলম্বের কারণ। ৩০জুন শেষ হতে সময় বাকি আর মাঝখানে মাত্র ৫দিন। এমনিতেই বর্ষাকাল প্রায় প্রতিদিনই মূষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। এ সময়ের মধ্যে এলাকার উন্নয়নে সরকারের দেয়া ২১লাখ টাকার কাজ কতটুকু বাস্তবায়ন হবে কিংবা কাজ শেষ না করে ঠিকাদার কিভাবে বিল নিবেন এমন প্রশ্ন সচেতন মহলের।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

One Reply to “লক্ষ্মীছড়িতে এডিপি’র বরাদ্দের ২১লাখ টাকার কাজ ভাগাভাগি”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন