লক্ষ্মীছড়ি হাইস্কুলের দীর্ঘ দিন ধরে কমিটি গঠন না হওয়ায় সমস্যা মাত্রা ছাড়িয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার:

এসএসসি ফরম পূরণে অতিরিক্ত ফি আদায়, নিয়ম ভঙ্গ করে মাসিক বেতন ও সেশন ফি আদায়সহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতি বাসা বেঁধে বসেছে খাগড়াছড়ি জেলার লক্ষ্মীছড়ি হাইস্কুলে। এ সমস্যা যেন দিন দিন মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও রয়েছে শিক্ষক সমন্বয়হীনতা আর বিশৃঙ্খলা।

প্রধান শিক্ষক ও কমিটির কতিপয় ব্যক্তির সিদ্ধান্তই প্রধান। ফলে এর চরম প্রভাব পরছে ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষার উপর। দীর্ঘ দিন ধরে বিদ্যালয়ে পূর্ণাঙ্গ পরিচালনা কমিটি গঠন না হওয়ায় এর প্রধান কারণ বলে এলাকাবাসী মনে করে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এসএসসি ফরম পূরণে মানবিক বিভাগে ৯’শ ৭৫ এবং বিজ্ঞান বিভাগে ১হাজার ১৫ টাকা বোর্ড নির্ধারণ করে দিলেও এর বাহিরে ২০১৫ সালের জানুয়ারি ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন এবং ২০১৫ সালের সেশন ফি ছাত্র-ছাত্রীদের থেকে আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। নানা হয়রানী ও অনাকাঙ্ক্ষিত বিপদের আশংকায় ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকরা এ বিষয়ে কোন মুখ খুলছে না।

বিদ্যালয়ে গিয়ে অবশ্য এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক আবু বক্কর সিদ্দিককে না পেয়ে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে সংযোগ পাওয়া যায় নি।

এদিকে ২০১৩ সালের ২১নভেম্বর তৎকালীন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ সভাপতি রেম্রাচাই চৌধুরী পরিচালনা কমিটির সভাপতিসহ সকল সদস্য এক যোগে পদত্যাগ করার পর চট্টগাম শিক্ষা বোর্ড স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুর রশীদ মোল্লাকে আহবায়ক করে ৫ সদস্য বিশিষ্ট বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি গঠন করে। উক্ত কমিটি এলাকার নানা সমস্যা দেখিয়ে ৬ মাস অন্তর ২ দফা কমিটির মেয়াদ বৃদ্ধি করে।

দ্বিতীয় দফা মেয়াদের শেষ দিনে চলতি বছর মে মাসের ২০ তারিখে নির্বাচনের আয়োজন করলেও ভোটার তালিকা সংশোধনের অজুহাতে আবারো নির্বাচন কার্যক্রম ঝুলে যায়। বেতন বৃদ্ধি, কোচিং ফি বাড়ানো, কমিটির বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারসহ নানা দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ এনে বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে এক অভিভাবক সমাবেশে শেষে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বরাবরে স্মারকলিপি দেয় অভিভাবকরা। পরে এক বৈঠকে দ্রুত নির্বাচন ব্যবস্থাসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার জন্য কমিটি এবং প্রধান শিক্ষককে নির্দেশনা দেয়া হয়। এরি মাঝে সময় পেরিয়েছে আরো ৪ মাস।

গত বৃহস্পতিবার বিদ্যালয়ে অভিভাবক সমাবেশ হওয়ার কথা থাকলেও সেটি হয় নি। ফলে ছেলে-মেয়েদের কোচিং করার বিষয়টি এখনো অমিমাংসিত রয়েছে। এসএসসি নির্বাচনী পরীক্ষায় নম্বর কম দিয়ে ফেল করানো হয়েছে এমন অভিযোগ এনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে ১৩জন পরীক্ষার্থী লিখিত অভিযোগ করেছে বলে জানা গেছে। কমিটির নানা গাফিলতি এবং শিক্ষা বোর্ডের প্রয়োজনীয় নজরদারির অভাবে লক্ষ্মীছড়ি উপজেলার একমাত্র বিদ্যাপীঠ শিক্ষা কার্যক্রম ধ্বংসের পথে বলে সচেতন মহলের অভিমত।

এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কমিটি গঠনের কোন প্রক্রিয়াই নেয়া হয়নি বলে সূত্রে জানা গেছে। লক্ষ্মীছড়ি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, আবারো আহবায়ক কমিটি গঠনের জন্য নিদের্শনা পেয়েছি। খুব শিগ্রই এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন