শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নে অভিযোগ না করে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের আহ্বান পার্বত্যমন্ত্রীর

fec-image

পাবর্ত্য শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নে কোনো সমস্যা হলে অভিযোগ না করে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং।

বুধবার (২ ডিসেম্বর) পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তির ২৩তম বর্ষপূর্তিতে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য শান্তি, আমাদের লক্ষ্য উন্নয়ন। আমরা যারা শান্তি চাই, হাতে হাত লাগিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করছি। পার্বত্য শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নে অভিযোগ বা ব্লেম নয়, কোন জায়গায় বাধা আছে বা কোথাও কোনো সমস্যা হলে কিভাবে সমাধান করা যায় সেটি দেখতে হবে। শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নে একটি কমিটি আছে। সেই কমিটির প্রধান হচ্ছে আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ। সুতরাং কোনো সমস্যা হলে কিভাবে দ্রুত সমাধান করতে পারি সেটি দেখতে হবে। সমস্যা যেমন আছে সমাধানও আছে।’

তিনি বলেন, ‘পার্বত্য অঞ্চলের যে শান্তি চুক্তি হয়েছে সেটি আজ ২৩ বছরে পদার্পণ করল। শান্তি চুক্তিতে ৭২টি ধারা ছিল, তার মধ্যে আমরা ৪৮টি ধারা পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন করেছি, ১৫টি আংশিক বাস্তবায়ন হয়েছে, আর ৯টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো ভূমি। এই ভূমি নিয়ে কথা বলছে, তার মধ্যে আমরা ২০১৭ সালে সংশোধিত আকারে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সংসদে ভূমি কমিশন আইন পাস করেছি। ফলে ভূমি সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তি করার কাজটি করতে আমাদের কয়েকবার চেয়ারম্যান পরিবর্তন করতে হয়েছে। আমরা এ বিষয়ে কাজ করছি। এতে ভূমি নিষ্পত্তির জন্য কিছু বিধি-বিধান, আইন-কানুনের বিষয় রয়েছে। তাই আমরা ভূমি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সাক্ষাত করেছি। ভূমি মন্ত্রণালয় এটি নিয়ে কাজ করছে।’

মন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য নেতৃত্বে ১৯৯৭ সালে ২ ডিসেম্বর ঐতিহাসিক শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর হওয়ার পর হতে অশান্ত পার্বত্য চট্টগ্রামের উন্নয়নের পরিবেশ সৃষ্টি হয়। পার্বত্য চট্টগ্রামের আয়তন প্রায় ১৩ হাজার ২৯৫ বর্গ কিলোমিটার। এই অঞ্চলের লোকসংখ্যা প্রায় ১৬ লাখ। চাকমা, মারমাসহ অনেক উপজাতি এখানে বসবাস করেন। বিগত ১০ বছরে পার্বত্য অঞ্চলের যুবকদের শিক্ষাসহ প্রভৃতি উন্নয়ন সাধিত হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘অঞ্চলভিত্তিক পরিকল্পনার মাধ্যমে পার্বত্য অঞ্চলের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধু একটি আলাদা বোর্ড গঠনের নির্দেশ দিয়েছিলেন। যা তৎকালীন ভূমি প্রশাসন ও ভূমি সংস্কার মন্ত্রী আব্দুর রব সেরনিয়াবাত রাঙামাটি সার্কিট হাউজ সমাবেশে ঘোষণা দিয়েছিলেন। ১৯৭৫ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি রাঙামাটির বিশাল জনসভায় বঙ্গবন্ধু জাতীয় সংখ্যালঘুদের অধিকার অবশ্যই রক্ষা করা হবে মর্মে প্রতিশ্রুতি দিয়ে এ অঞ্চলের উন্নয়নে নানা কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছিলেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুই প্রথমবারের মত পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি ছাত্র-ছাত্রীদের মেডিকেল, প্রকৌশল ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কোটায় ভর্তির সুযোগ করে দেন। প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রেও সমাজভিত্তিক সুযোগ সৃষ্টিতে ১৯৭২ সালের সেপ্টেম্বরে পদ সংরক্ষণ নীতিমালা বঙ্গবন্ধু সরকার সমর্থন করেন। সেখানে উপজাতিদের জন্য ৫ শতাংশ কোটা নির্ধারিত হয়েছিল।’

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: পার্বত্যমন্ত্রী, বীর বাহাদুর উশৈসিং, শান্তিচুক্তি
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন