শৈত্য প্রবাহে মানিকছড়ির হত-দরিদ্র জনগোষ্ঠী বিপাকে

fec-image

পাহাড়ে মাস খানেক ধরে শীতের তীব্রতা চলছে। গত দু’দিনের শৈত্যপ্রবাহে এখানকার হত-দরিদ্ররা চরম বেকায়দায় পড়েছে। বিশেষ করে চা শ্রমিক, ডে লেবার ও কৃষকরা শীতের তীব্রতা সামাল দিতে গিয়ে বেসামাল হয়ে পড়েছে। আজ রাস্তা-ঘাটে যান চলাচলও কম। ঘরে ঘরে শিশু-কিশোর ও বয়োঃবৃদ্ধরা অসুস্থ হয়ে পড়ছে।

জনপ্রতিনিধি ও সচেতন মহল সুত্রে জানা যায়, উপজেলার চারটি ইউনিয়নের তৃণমুলে বসবাসরত হত-দরিদ্র জনগোষ্ঠী অভাব অনটনে দিনযাপন করায় গরম কাপড়-চোপড় তাদের ঘরে নেই বললেই চলে।

শীতকালে স্বাভাবিকভাবে তারা ঘরে আগুন জ্বালিয়ে গরমের পরশ নেওয়ার চেষ্টা করে। এবার শীতের শুরুতেই যেন শীতের তীব্রতা একটু বেশি। তাই পাহাড়ের অন্যান্য স্থানের ন্যায় খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলার জনপদে শীতের প্রভাব পড়েছে। হত-দরিদ্ররা বাজারের গরম কাপড় সংগ্রহে ভীড় জমাচ্ছে।

উপজেলার ৭০-৭৫ হাজার জনগণের সিংহভাগই গরীব। এছাড়া এ জনপদে বিত্তবান ব্যক্তিবর্গ তেমন না থাকায় সকল হত-দরিদ্র পরিবারের মাঝে প্রতি বছর সরকারি কম্বল বিতরণ সম্ভব হয়ে উঠেনা। ফলে তৃণমুলে বসবাসরত অভাবীদের দুঃখ লাঘব হয়না।

১২ ও ১৩ জানুয়ারি দু’দিন সুর্যের দেখা মেলেনি। স্কুল-কলেজে ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতিও কম। রাস্তাঘাটে জনসমাগম তেমন নেই। বাজারের গরম কাপড় বিক্রির দোকানে দোকানে গরম কাপড় কিনতে ভীড় করছে হত-দরিদ্ররা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এবার সরকারিভাবে প্রতিটি ইউনিয়নে ৪শত ৬০পিস হারে কম্বল জনপ্রতিনিধিদের তালিকায় সরজমিনে বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া যোগ্যাছোলায় একটি স্বেচ্ছাসেবী ক্লাব, মানিকছড়ির একতা সংঘ এবং “স্বপ্ন ও আগামী” নামের একটি সংগঠন থেকে উপজেলার শীতার্ত জনগোষ্ঠীর মাঝে কিছু কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। সব মিলিয়ে দুই সহস্রাধিক ব্যক্তি বা পরিবার উপকৃত হলেও সিংহভাগ দরিদ্র জনগোষ্ঠী শৈত্য প্রবাহের কবলে দিনাতিপাত করছে। আর ঘরে ঘরে শিশু-কিশোর ও বয়োঃবৃদ্ধরা অসুস্থ হয়ে পড়ছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. কামাল উদ্দীন জানান, শৈত্য প্রবাহের কারণে জনপদে শীতার্ত মানুষের কম্বলের চাহিদা থাকলেও বরাদ্দ না আসায় তাদের পাশে দাঁড়ানোর সুযোগ নেই।

উপজেলার গাড়ীটানা, সাপমারা, মহামুনি, গচ্ছাবিল, ফকিরনালা মলঙ্গীপাড়া , রাঙ্গাপানি, কুমারী, সাধুপাড়া, কালাপানিতে অসংখ্য দরিদ্র পরিবার রয়েছে। যারা চা বাগানে শ্রমিক হিসেবে কর্মরত। তাদের ঘরে এবং গায়ে গরম কাপড় নেই বললেই চলে। এইসব জনপদে জরুরীভাবে শীতবস্ত্র প্রয়োজন।

উপজেলা চেয়ারম্যান মো. জয়নাল আবেদীন এ প্রসঙ্গে বলেন, জনপদের হত-দরিদ্র জনগণের দুঃখ-দুর্দশার বিষয়টি জানা থাকলেও সরকারি বরাদ্দ না থাকায় ওইসব শীতার্ত ব্যক্তি বা পরিবারে শীত নিবারণে এগিয়ে আসতে পারছিনা। তবে নিতান্তই যদি কেউ অসহনীয় কষ্টে রাত্রিযাপন করে তাদের বিষয়ে প্রশাসন ব্যবস্থা নিবে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: মানিকছড়ি, শীত, শীতবস্ত্র
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন