Notice: Trying to get property 'post_excerpt' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 53

Notice: Trying to get property 'guid' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 55

সব্জি হিসাবে বাঁশকুরুল: খাগড়াছড়িতে ধ্বংসের মুখে মূল্যবান বাঁশ সম্পদ

বাঁশকরুল ১

জসিম উদ্দিন মজুমদার, খাগড়াছড়ি॥

খাবার হিসেবে বাঁশকরুল (বাঁশের নরম অংশ) নির্বিচারে ব্যবহারের কারণে ধ্বংসের মুখে খাগড়াছড়ি জেলার মূল্যবান বাঁশ সম্পদ। এতে সরকার প্রতিবছর বাঁশ থেকে যেমন কোটি-কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে, তেমনি বাঁশ সম্পদের মূলজাতও ধ্বংস হচ্ছে। অথচ এই বনজ সম্পদ সুরক্ষায় কোনও কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না পার্বত্য বন বিভাগ।

বর্ষা মৌসুমে খাগড়াছড়ি জেলার ৫০টি বড় বাজারে ১৫ থেকে ২০ লাখ পিস বাঁশকরুল সবজি হিসেবে বিক্রি হয়। যা সবজি হিসেবে ব্যবহার বন্ধ করা গেলে ছয় মাস পরে এই খাত থেকেই পাওয়া যেত ৪ থেকে ৫ কোটি টাকা।

অন্য মিডিয়া

স্থানীয় খাগড়াছড়ি পরিবেশ আন্দোলন ফোরামের সভাপতি রবিউল ইসলাম জানান, খাগড়াছড়ি জেলার বিভিন্ন পাহাড়ে প্রাকৃতিকভাবেই উৎপাদিত হয় মুলি, ওড়াল, ডুলু ও মিতিঙ্গাসহ বিভিন্ন প্রজাতির বাঁশ। বর্ষাকালে অর্থাৎ জুন থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত সাধারণত বাঁশের বংশবৃদ্ধির সময়। তাই বনবিভাগ বছরের এই সময়ে সব ধরনের বনাঞ্চল থেকেই বাঁশ সংগ্রহ নিষিদ্ধ করেছে। কিন্তু এই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে স্থানীয় পাহাড়ি এবং বাঙালি লাখ-লাখ বাঁশকরুল খাবারের জন্য সংগ্রহ করে।

রবিউল ইসলাম পরিসংখ্যান দেখিয়ে বলেন, জেলায় ছোট-বড় ৫০টি বাজারে তিন মাসজুড়ে বন বিভাগ ও প্রশাসনের নাকের ডগায় বাঁশ করুল বিক্রি হয়। তিন মাসে প্রতি সপ্তাহে প্রতিটি বাজার দু’বার করে প্রায় ১ হাজার ৩০০ বার বসে। প্রতি বাজারে ১০০ থেকে ১৫০ কেজি করে বাঁশ করুল বিক্রি করলে তিন মাসে মোট বিক্রি হয় প্রায় দেড় লাখ থেকে দুই লাখ কেজি। প্রতি কেজিতে ১০টি বাঁশ করুল হিসেব করলে বিক্রিত বাঁশ করুলের সংখ্যা হয় কমপক্ষে ১৫ লাখ থেকে ২০ লাখ পিস। যা মাত্র ছয় মাস পরে রাঙামাটির চন্দ্রঘোনা পেপার মিলে কাঁচামাল হিসেবে বিক্রি করলেও আয় হতো চার থেকে পাঁচ কোটি টাকা।

বাঁশকরুল

তবে স্থানীয় নৃগোষ্ঠীর লোকেরা এমন হিসাবের বিপক্ষে। তারা খাদ্য হিসেবে বাঁশকরুল সংগ্রহের পক্ষে। এবিষয়ে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার পেরাছড়া গ্রামের আপনা চাকমা বলেন, বাঁশ করুল তাদের প্রিয় খাবার। তাছাড়া অনেক পাহাড়ি পরিবারের জীবন-জীবিকা এর উপর নির্ভর করে।

সদর উপজেলার নয় মাইল এলাকার সুধীর ত্রিপুরা বলেন, অনেক কষ্ট করে তারা গভীর জঙ্গল থেকে বাঁশকরুল সংগ্রহ করেন। এই মৌসুমে গাছ-কাঠ না থাকায় তারা বাঁশ করুল সংগ্রহ করেন। এছাড়া তাদের বিকল্প কিছু করার নাই।

স্থানীয় বেসরকারি তৃণমূল উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক রিপন চাকমা বলেন, সরকারি উদ্যোগে বাঁশ সম্পদ সংরক্ষণের জন্য বছরের তিনমাস (জুন-জুলাই-আগস্ট) নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলেই হবে না। তার মতে, বাঁশের বংশবৃদ্ধির মৌসুমে বাঁশ নির্ভর জনগোষ্ঠীর জন্য রেশনিং ব্যবস্থা চালু করা হলে বাঁশ ধ্বংসের প্রবণতা হ্রাস পাবে।

খাগড়াছড়ি বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ খান বলেন, বাঁশ সংরক্ষণের জন্য তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা তো রয়েছে। কিন্তু যেহেতু বাঁশকরুল পাহাড়ের বাসিন্দাদের জনপ্রিয় খাবার তাই বংশবৃদ্ধির মৌসুমে শতভাগ তা বন্ধ করা যাচ্ছে না। তবে যাতে নির্বিচারে বাঁশকরুল সংগ্রহ করা বা বাজারে বিক্রি করা না হয়, সেজন্য বন বিভাগের পক্ষ থেকে প্রতিবছর নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।

 ‍সূত্র: বাংলাট্রিবিউন

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন