২ প্রতিবন্ধীসহ ঝুপড়ি ঘরেই বাস করে পানছড়ির বৃন্দাবতী

fec-image

খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলার ৫নং উল্টাছড়ি ইউপির পাইয়ং পাড়ায় একটি ঝুপড়ির ঘরে বাস করে বৃন্দাবতী ত্রিপুরা। তার সাথে থাকে প্রতিবন্ধী মেয়ে ও প্রতিবন্ধী নাতনী। দু’জনেই বাক প্রতিবন্ধী। বৃন্দাবতী ও তার মেয়ে কাননবালা শ্রমিকের কাজ করলেই তাদের চুলো জ্বলে। বৃদ্ধাবতীর স্বামী গণী রাম ত্রিপুরা মারা যায় বছর দশেক আগে। স্বামীর কোন জায়গা জমি না থাকায় একটুখানি খাস জায়গার ঝুপড়িতেই মানবেতর বসবাস তাদের।

সরেজমিনে দেখা যায়, বৃন্দাবতী জঙ্গল থেকে লাকড়ি মাথায় করে বাড়ি ফিরছে আর মেয়ে কাননবালা মাইল দেড়েক দূরের কল থেকে ফিরছে পানীয় জল নিয়ে। তাদের ঘর দেখেই মনে পড়ে সেই আসমানির ঘরের কথা। সর্বোচ্চ ১০ থেকে ১২ ফিটের ছোট ঘরটির পূর্ব পাশে হাড়ি-পাতিল, উত্তরে চুলো, পশ্চিমে হলুদ-মরিচের ছোট কয়েকটি ডিব্বা। মধ্যেখানের চার-পাঁচ হাত জায়গাতেই তাদের রাত্রি যাপন। চারিদিকে ভাঙ্গাবেড়া আর ছাউনির অনেকটাই ফাঁকা। বর্তমান সময়ে পাহাড়ের প্রচণ্ড শীত ও ঘনকুয়াশার সাথে তাদের যেন নিত্য সংগ্রাম। ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য কাখারাং চান ত্রিপুরা (অমর চান) কয়েকটি টিন কিনে দেয়ায় কিছুটা হলেও রক্ষা হয়েছে বলে জানালেন বৃন্দাবতী।

ইউপি সদস্য কাখারাং চান ত্রিপুরা (অমর চানের) সাথে মোবাইলে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি ছুটে আসেন । তিনি জানান, বৃন্দাবতীর জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেতে আবেদন করা হয়েছে। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো কোন সাড়া মেলেনি। বৃন্দাবতী একটি ঘর পাওয়ার যোগ্য দাবিদার বলে তিনি জানান।

ইউপি সদস্য কাখাৱাং চান আরো জানান, বৃন্দাবতীর বয়স ৮০ হলেও এনআইডিতে ভুলবশত দেয়া হয়েছে ৫২ বছর। অথচ তার বড় ছেলের বয়স ৬৫। এনআইডিতে ভুলের কারণে বয়স্ক ভাতাও পাচ্ছে না। তাছাড়া বৃন্দাবতী বিধবা ভাতা, মেয়ে ও নাতনী প্রতিবন্ধী ভাতা থেকে আজও তারা বঞ্চিত।

বৃন্দাবতীর দাবি সে লেখাপড়া জানেনা। এনআইডি কার্ডটি সংশোধন করে বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতা, মেয়ে ও নাতনীকে প্রতিবন্ধী ভাতার আওতায় আনা হলে কিছুটা হলেও দুর্দশা লাঘব হতে পারে। এ ব্যাপারে প্রশাসনের সহযোগিতা চায় বৃন্দাবতী।

এলাকার উৎপল ত্রিপুরা জানায়, পরিবারটি খুব অসহায়। চারিদিকে ভাঙ্গা ঘরটি কোন রকম জোড়াতালির খুঁটিতে দাঁড়িয়ে আছে। তাছাড়া উপরের অনেকাংশেই ছাউনি নেই। ইউপি সদস্য কাখাবাং চান ত্রিপুরার মাধ্যমে বৃন্দাবতীর ঘরের জন্য যে আবেদনটি করা হয়েছে সেটি অতি দ্রুত বাস্তবায়ন করার দাবি জানায় সে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন