ঘূর্ণিঝড় মোখা’য় রোহিঙ্গাদের নিয়ে সংবাদ, সাংবাদিকের ২০ বছরের জেল
গত মে মাসে মিয়ানমারের উপকূল অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড় মোখা নিয়ে খবর সংগ্রহ করতে গিয়েছিলেন স্বাধীন চিত্রসাংবাদিক সাই জো থাইকে । যে ঝড়ের দাপটে অন্তত ১৪০ জনের মৃত্যু হয়েছিল। যাদের মৃত্যু হয়েছিল তাদের অনেকেই রোহিঙ্গা এবং একাধিক ক্যাম্পে তারা বসবাস করছিলেন।
মিয়ানমারের আদালতের নির্দেশে ঘূর্ণিঝড় মোখা নিয়ে খবর করায় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন সাই জো থাইকে। ঝড়ের সময় রোহিঙ্গাক্যাম্পগুলোতে গিয়েই সংবাদ সংগ্রহ করছিলেন থাইকে। সেখান থেকেই তাকে গ্রেপ্তার করে মোট চারটি ধারায় মামলা দেওয়া হয়। তার মধ্যে বিপর্যয়সংক্রান্ত আইন এবং টেলিকমিউনিকেশন আইন ছিল।
এরই জেরে বুধবার ওই সাংবাদিককে ২০ বছরের সাজা শুনিয়েছেন আদালত। এই রায়ের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ শুরু হয়েছে মিয়ানমারে। যে সংবাদপত্রে নিয়মিত কাজ দিতেন থাইকে, তারা জানিয়েছে, সংবাদপত্রের ওপর চাপ তৈরি করতেই এভাবে শাস্তি দেওয়া হলো থাইকেকে। এর আগেও একাধিক সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বহু সাংবাদিকের বিরুদ্ধে এভাবেই শাস্তি ঘোষণা করা হয়েছে। মিয়ানমার নাও-য়ের মতো সংবাদমাধ্যম এখন আন্ডারগ্রাউন্ডে থেকে কাজ করছে। তারা জানিয়েছে, ‘জান্তা সরকার সাংবাদিকদের ওপর একের পর এক আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে। দেশে সংবাদমাধ্যমের আর কোনো স্বাধীনতা নেই। এই ঘটনা আরো একবার তা প্রমাণ করল।
২০২১ সালের আগস্ট মাসে মিয়ানমারের সেনা গণতান্ত্রিক সরকারের হাত থেকে ক্ষমতা ছিনিয়ে নেয়। এর পর থেকেই সেখানে গণতন্ত্রপন্থী জনসাধারণ এবং সাংবাদিকদের সঙ্গে সেনার সংঘর্ষ শুরু হয়। জান্তা সরকার একের পর এক বেসামরিক মানুষকে গ্রেপ্তার করতে শুরু করে। বহু সাংবাদিককেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গত মঙ্গলবারই মিয়ানমারের সেনা শাসন এবং সাধারণ মানুষের ওপর অত্যাচারের বিষয়টি নিয়ে আসিয়ান দেশগুলো জাকার্তায় বৈঠকে বসেছিল। তাদের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস। তার এক দিনের মধ্যেই সাংবাদিককে সাইক্লোনসংক্রান্ত খবর করার জন্য ২০ বছরের সাজার রায়ের কথা শোনানো হলো মিয়ানমারে।