খাগড়াছড়িতে বন্যা দুর্গত এলাকা পরিদর্শনে স্থানীয় সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা
নিজস্ব প্রতিবেদক, খাগড়াছড়ি: খাগড়াছড়িতে বন্যা দুর্গত মানুষের খোঁজ নিতে বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা। সোমবার রাতে খাগড়াছড়ি শহরের গঞ্জপাড়া, ৩নং গোলাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ, বাজার এলাকা ও মুসলিমপাড়া এলাকার আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে গিয়ে বন্যা দুর্গতদের খোঁজখবর নেন এবং ত্রাণসহ প্রয়োজনীয় সুযোগ সুবিধা দেয়ার আশ্বাস দেন।
সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরাকে কাছে পেয়ে নিজেদের সমস্যার কথা তুলে ধরেন বন্যাকবলিতরা। আকস্মিক বন্যায় যে ক্ষয়ক্ষতির হয়েছে তার তালিকা তৈরী করে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নির্দেশ দেন কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা।
এসময় খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নির্মলেন্দু চৌধুরী ও খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য মংসুইপ্রু চৌধুরী অপু, জেলা পরিষদ সদস্য সতীশ, রেম্রাচাই চৌধুরী, খাগড়াছড়ি সাংবাদিক ইউনিয়ন(কেইউজে) সভাপতি নুরুল আজম, ৩নং গোলাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জ্ঞান ত্রিপুরা উপস্থিত ছিলেন।
সোমবার ভোর থেকে টানা বর্ষণে খাগড়াছড়ি জেলা সদরের মুসলিমপাড়া, গঞ্জপাড়া, মেহেদীবাগ, মিলনপুর, সাতভাইয়া পাড়া মুখ, খবংপুড়িয়া, শান্তিনগর, অর্পণা চৌধুরী পাড়া, কল্যাণপুরসহ ১৫টি গ্রামের প্রায় ১০ হাজার পরিবার পানি বন্ধি হয়ে পড়েছে। ৫ শতাধিক পরিবার শহরের শিশু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মুসসিলমপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রসহ আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। বন্যার পাশাপাশি টানা বর্ষণের ফলে খাগড়াছড়ি জেলা সদরসহ বিভিন্ন উপজেলায় ব্যাপক পাহাড় দেখা দিয়েছে। বর্ষণে ব্যাপক পাহাড় ধস দেখা দিয়েছে। সড়কের উপর পাহাড় ধসে পড়ায় খাগড়াছড়ির সাথে রাঙামািটর বাঘাইছড়ি সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
পাহাড়ী ঢল নামতে শুরু করায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। খাগড়াছড়ি শহরের চেঙ্গী নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় আশপাশের গ্রাম ও গ্রামীণ সড়ক পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এদিকে প্রবল বর্ষণে খাগড়াছড়ি শহরের, কলাবাগান, নেন্সিবাজার, মোল্লাাপাড়া, কৈবল্যপিঠ, আঠার পরিবার, শালবন, হরিনাথপাড়া গ্যাপ ও মোহাম্মদপুর এলাকায় ব্যাপক পাহাড় ধস দেখা দিয়েছে। জেলায় ১৭টিম কাজ করছে বলে জানিয়েছেন, জেলা প্রশাসক মো. রাশেদুল ইসলাম।
খাগড়াছড়ি পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের সভাপতি প্রদীপ চৌধুরী বলেন, অতীতে কখনো খাগড়াছড়িতে একদিনের বৃষ্টিতে বন্যা হওয়ার নজির নাই। সম্প্রতি সময়ে খাগড়াছড়ির বিভিন্ন খাল, ছড়া ও জলাশয় দখল হয়ে যাওয়ায় কয়েক ঘন্টার বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা ও বন্যা হচ্ছে। এর মাধ্যমে প্রকৃতি আমাদের সর্তক সংকেত দিচ্ছে বড় ধরণের বিপর্যয়ের। দখলদারদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মো. রাশেদুল ইসলাম জানান, বন্যা দুর্গত যারা বিভিন্ন বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছেন তাদের শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানিসহ প্রয়োজনীয় ত্রাণ সরবরাহ করা হবে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় পাহাড় ধসের শঙ্কা থাকায় ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বসবাসকারীদের সরিয়ে আনতে প্রশাসন তৎপর রয়েছে।