সাধারণ কাশি নাকি যক্ষ্মা বুঝবেন যেভাবে

fec-image

টিউবারকুলোসিস (টিবি) বা যক্ষ্মা রোগটি মূলত মাইকোব্যাকটেরিয়াল, টিউবারকিউলোসিসের মাধ্যমে ছড়ায়। এটি ফুসফুসের সাহায্যে রক্তে প্রবেশ করে। এরপর দেহের সমস্ত কোষে ছড়িয়ে পড়ে। মস্তিষ্কের উপরের ঝিল্লি, অন্ত্র, মূত্র, প্রজনন অঙ্গ, জয়েন্টের হাড়ের, লসিকা গ্রন্থিসহ বিভিন্ন কোষে প্রভাব ফেলে এটি। এই ব্যাকটিরিয়া দূষিত পানি ও মাটি পাওয়া যায়।

টিউবারকুলোসিস একটি বড় সমস্যা। ধূমপান, অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, মাদকাসক্তি, বার্ধক্য, অপুষ্টির কারণে এই রোগের ঝুঁকি আরও বাড়ে। এছাড়া যাদের রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা কম বা দীর্ঘমেয়াদী স্টেরয়েড বা ইমিউনোথেরাপি ওষুধ খাচ্ছেন এমন ব্যক্তিদেরও টিবি রোগের ঝুঁকি বেশি থাকে।

যক্ষ্মা ফুসফুসে হয়। আবার এই রোগে আক্রান্ত ব্যাক্তি যারা দেখাশুনা করেন যেমন- পরিবারের সদস্য, চিকিৎসক, নার্স বা সেবা-শুশ্রূষাকারীদেরও আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। হাঁচি, কাশি ও কফের মাধ্যমে ব্যাকটেরিয়া ছড়িয়ে পড়ে। তাই রাস্তাঘাটে হাঁচি-কাশি হলে মুখে রুমাল চাপা দেওয়া উচিত। যেখানে সেখানে থুতু ফেলবেন না।

বিশেষজ্ঞদের মতে, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভাব এই রোগের অন্যতম কারণ। আজ বিশ্ব যক্ষ্মা দিবস। এদিনে জেনে নিন এই রোগের লক্ষণ ও কখন সতর্ক হতে হবে-

যক্ষ্মা হলে বেশ কিছু লক্ষণ প্রকাশ পায়। যা অনেকেই সাধারণ ভেবে অবহেলা করেন। পরে কিন্তু এই সমস্যাই বাড়তে শুরু করে। তখন রোগীর অনেকটাই দেরি হয়ে যায়। তাই এই রোগ সম্পর্কে সচেতন হওয়া জরুরি। বিশেষজ্ঞদের কাছে জেনে নিন কোন
কোন উপসর্গ দেখা দিলে সচেতন হয়ে উঠবেন-

> রাতে ঘেমে গেলে সাবধান হোন। অনেকেই আবহাওয়ার কারণে গরম লাগছে ভেবে এড়িয়ে যান। তবে নিয়মিত রাতে ঘুমনোর সময়ে ঘাম হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

> ক্ষুধামন্দাও কিন্তু টিবি রোগের লক্ষণ। নিয়মিত এ সমস্যায় ভুগলে সাবধান হতে হবে।

> এক্ষেত্রে মাঝে মধ্যে বুকে ব্যথাও হতে পারে। কখনো এ সমস্যাটি উপেক্ষা করবেন না। এর থেকে কিন্তু হার্ট অ্যাটাক পর্যন্তও হতে পারে।

> বিশেষজ্ঞদের মতে, যক্ষ্মার অন্যতম লক্ষণ হলো কাশি। যা অনেকেই সাধারণ কাশি ভেবে ভুল করেন। অনবরত কাশি হলেও কেউই সেভাবে গুরুত্ব দেয় না।

ধরে নেওয়া হয়, ঠান্ডা লেগেছে। তবে অনবরত কাশির সঙ্গে হালকা কিংবা গাড় রক্ত বের হওয়াও কিন্তু টিবির অন্যতম উপসর্গ।

> এমনকি যক্ষ্মা রোগীর প্রস্রাবের সঙ্গেও রক্ত বের হতে পারে। যক্ষ্মা ধীরে ধীরে শরীরের অন্যান্য অঙ্গ প্রত্যঙ্গের উপরেও প্রভাব ফেলতে থাকে। যেমন পিঠে ও কোমরে ব্যথা।

এছাড়া কিডনিতেও প্রভাবে ফেলে। তাই প্রস্রাবে রক্ত পেলে অবশ্যই সাবধান হোন। তবে টিবি এড়িয়ে চলার জন্য সচেতন থাকতে হবে সবাইকে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, চিকিৎসায় যক্ষ্মা সম্পূর্ণরূপে ভালো হয়। এই রোগের দুই রকমের চিকিৎসা আছে- ছয় মাস ধরে ওষুধ খাওয়া ও আট-নয় মাস ধরে ওষুধ খাওয়া। যক্ষ্মা প্রতিরোধের জন্য জন্মের পরপর প্রত্যেক শিশুকে বিসিজি টিকা দেওয়া হয়।

সূত্র: মায়োক্লিনিক/লাং.অর্গ

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন