কাউখালী-ঘিলাছড়ি সড়কে যান চলাচল বন্ধ, দূর্ভোগে সাধারণ মানুষ

কাউখালী প্রতিনিধি:

পাহাড়ের চুক্তিবিরোধী শসস্ত্র সংগঠন ইউপিডিএফ’র চাঁদাবাজীতে অতিষ্ট হয়ে পড়েছে রাঙামাটির কাউখালী-ঘিলাছড়ি সড়কের চালকরা। বাৎসরিক টোকেন সংগ্রহ করতে না পারায় বৃহস্পতিবার সাপ্তাহিক হাটের দিন সকাল থেকে সিএনজি অটোরিক্সা গুলোর উপর অঘোষিত নিষেধাজ্ঞা জারি করে শসস্ত্র সংগঠনটি। ফলে ওই সড়কে সকাল থেকে সব ধরণের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে দূর্গম পাহাড় থেকে সাপ্তাহিক হাটে আসা সাধারণ মানুষ মারাত্মক দূর্ভোগের মধ্যে পড়েছে। এ নিয়ে সকাল থেকে কচুখালী এলাকায় চালকদের মাঝে খানিকটা উত্তেজনা দেখা দেয়।

সকাল ৯টায় উপজেলা সদর থেকে মাত্র ৫শ গজ দূরে কচুখালী এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, সাপ্তাহিক হাটের দিন হওয়ার পরও কোন যাত্রী বহন না করে সিনএনজি অটোরিক্সা ও চাঁদের গাড়ি (জীপ)গুলো সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে রয়েছে। পাশেই গাড়ির ড্রাইভাররা যে যার মত অলস সময় পার করছে।

এ সড়কে চলাচল করা গণপরিবহনগুলো কি কারণে যাত্রী পরিবহন করছেনা এমন প্রশ্নের জবাবে কচুখালী এলাকার অটোচালক অংশি মারমা (২৫) জানান, এ সড়কে গাড়ি চালাতে এক হাজার টাকায় এক বৎসরের জন্য ইউপিডিএফ থেকে টোকেন সংগ্রহ করেছিলাম। কিন্তু টোকেনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় এবং পুনরায় টোকেন সংগ্রহ না করায় দূর্গম অঞ্চল থেকে আসা সাধারণ মানুষকে সিএনজিতে চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। ফলে কোন যাত্রীই তাদের গাড়িতে চলাচল করছেনা। ফলে অর্ধশত সিএনজি চালক সকাল থেকে বেকার বসে আছে।

ঘিলাছড়ি মিয়াপাড়ার সিএনজি চালক হোসেন আলী (২৭) জানান, প্রতি সিএনজি বাৎসরিক এক হাজার থেকে ১২ শত টাকায় টোকেন নিতে হয়। যথা সময়ে এসব টোকেন সংগ্রহ করতে না পারলে রাস্তায় তারা আমাদের মারধর এমনকি গাড়িও আটকে রাখে। হোসেন জানান, ২৬ নভেম্বর ঘিলাছড়ি এলাকার চালক খোকনকে পানছড়ি এলাকায় আটকে রেখে মারধর করে। একই দিন তারা দুটি সিএনজি অটোরিক্সা আটক করে নিয়ে যায়। পরে নিরাপত্তাবাহিনী তাদের উদ্ধার করে।

চাঁদের গাড়ি (জীপ) ড্রাইভার সাচিমং মারমা (৩০) জানান, এক বৎসরের জন্য সাড়ে তিন হাজার টাকায় ইউপিডিএফ থেকে টোকেন সংগ্রহ করেছি। তাই আমাদের গাড়ি চালাতে বা যাত্রী পরিবহণ করতে কোন বাঁধা নেই। তবে সিএনজি চালকরা গাড়ি চালাতে না পারায় আমাদেরকেও তারা গাড়ি চালাতে দিচ্ছেনা। এ নিয়ে সিএনজি ও জিপ চালকদের মাঝে কিছুটা উত্তেজনা দেখা দেয়।

৭৫ বছর বয়সী মাইট্যাবি চাকমা পানছড়ি থেকে ১০ কিলোমিটার পায়ে হেঁটে বাজারে এসেছেন। গাড়ি না থাকায় সাপ্তাহিক বাজার কাঁধে করেই বাড়ি ফিরতে হবে। মালামাল মাথায় নিয়ে ৮ কিলো পাড়ি দিতে হবে বামে উল্টা পাড়ার বজল্যা চাকমাকে। তারা জানান, এতো মালামাল নিয়ে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে ফেরা খুবই কষ্ট হবে।

সৃষ্ট জটিলতা নিরসনে চাঁদের গাড়ি ও সিএনজি ড্রাইভারদের নিয়ে জরুরী বৈঠকে বসেন নিরাপত্তাবাহিনী ও পুলিশ। এমন তথ্যই জানালেন কাউখালী থানার সেকেন্ড অফিসার মো. হারুন। তবে এ বিষয়ে আজই কোন সুরাহা হচ্ছেনা বলে জানিয়েছেন তিনি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ মিনহাজুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, এ বিষয়টি নিয়ে উপজেলা প্রশাসন সর্বক্ষনিক তৎপর রয়েছে। তাছাড়া পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ ও নিরাপত্তাবাহিনী যৌথভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন