আদিবাসী স্বীকৃতির দাবির অন্তরালে দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে পিসিসিপি’র সমাবেশ
নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে আদিবাসী শব্দ ব্যবহার করা রাষ্ট্র ও সংবিধানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শনের শামিল
রাঙামাটিতে আদিবাসী স্বীকৃতির দাবির অন্তরালে দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপি) রাঙামাটি জেলা শাখা।
মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) সকালে শহরের বনরূপায় আলিফ মার্কেটের সামনে এ মানববন্ধবন অনুষ্ঠিত হয়।
পিসিসিপি রাঙামাটি জেলা সভাপতি মো. হাবীব আজমের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন পিসিএনপি নেতা কামাল উদ্দিন, প্রচার সম্পাদক হুমায়ন কবির, পিসিসিপি রাঙামাটি সরকারি কলেজ শাখা আহ্বায়ক মো. শহিদুল ইসলাম, পৌর শাখার সভাপতি মো. পারভেজ মোশারফ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম রনি, সাপছড়ি ইউনিয়ন সভাপতি মো. রিয়াজ, সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক।
বক্তারা বলেন, সরকারের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে আদিবাসী শব্দ ব্যবহার করা রাষ্ট্র ও সংবিধানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করার শামিল। সরকার এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয় বারবার আদিবাসী শব্দ ব্যবহারের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে বলে আসছে যে, “ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী তথা উপজাতি জনগোষ্ঠীকে আদিবাসী হিসেবে না বলার জন্য। এবং এটি কার্যকরের জন্য সরকারি আমলা, গণমাধ্যম, টকশোকারী, বিশিষ্ট ব্যক্তি ও রাজনৈতিক ব্যক্তি সহ সর্বমহলকে আদিবাসী শব্দ পরিহার করার জন্য নিষেধাজ্ঞা দিয়ে নির্দেশনা প্রদান করেন।”
অথচ আজ সরকারেরই মন্ত্রী, এমপি, রাজনৈতিক নেতারাই ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী তথা উপজাতিদের আদিবাসী হিসেবে সম্বোধন করছেন এবং স্বীকৃতির দাবি তুলছেন। কাক যেমন ময়ূরের পেখম লাগালে ময়ূর হয়না, তেমনি এদেশের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী তথা উপজাতিরা কখনো আদিবাসী হয়না। আদিবাসী হতে হলে ভূমি সন্তান হতে হয়, এবং হাজার বছরের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি ধারণ করতে হয়। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত ও মিয়ানমার হতে পার্বত্য চট্টগ্রাম অভিবাসী হিসেবে এসে বসতিস্থাপন করলে ভূমি সন্তান হওয়া যায় না। আর উপজাতি কোটায় সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে প্যান্ট ট্রাই পড়ে নিজেদের আদিবাসী দাবি করা হাস্যকরও বটে। মূলত আদিবাসী স্বীকৃতির নামে আলাদা রাষ্ট্র “জুম্মলেন্ড” প্রতিষ্ঠার স্বপ্নে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত কতিপয় উপজাতীয় ও দেশীয় কুচক্রী মহল।
পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপি) রাঙামাটি জেলা সভাপতি মো. হাবীব আজম বলেন, অনেকেই না বুঝে উপজাতিদের আদিবাসী বলেন, কিন্তু উপজাতি/পাহাড়ি/ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠীদের আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি দিলে দেশের সার্বভৌমত্বের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি বা উপজাতিরা নয়, পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত বাঙালিরাই পার্বত্য চট্টগ্রামের আদি বাসিন্দা। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি কর্তৃক আদিবাসী হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবি পার্বত্য চট্টগ্রামকে পৃথক রাষ্ট্রে পরিণত করার সূদর প্রসারী ষড়যন্ত্র। আদিবাসী স্বীকৃতির দাবি বাস্তবায়নের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতীয় সশস্ত্র সংগঠনগুলোর দীর্ঘ প্রতিক্ষিত পার্বত্য চট্টগ্রামকে আলাদা রাষ্ট্র করে কাল্পনিক স্বাধীন ‘জুম্মল্যান্ড’ প্রতিষ্ঠা করার এক মহা পরিকল্পনা নিয়েই এগুচ্ছে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক একটি কুচক্রি মহলের ইন্ধনে। তাই উপজাতীয় সংগঠনগুলো কুচক্রি মহলের শিখানো বুলি আদিবাসী স্বীকৃতির দাবি নিয়ে গত কয়েক বছর ধরে হঠাৎ করে তৎপর হয়েছে, যা ১৯৯৭ সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তিতেও উল্লেখ নেই।