চংপাত ম্রোর নেতৃত্বে হামলার অভিযোগ

আলীকদমে বৌদ্ধ মূর্তি ভাঙচুর

fec-image

বান্দরবানের আলীকদমে মারাইংতং ধম্মা জেদী মহা বৌদ্ধ বিহার সংলগ্ন এলাকায় একটি নির্মাণাধীন বৌদ্ধ মূর্তি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল ২১শে মে, বুধবার, আনুমানিক সাড়ে ৩টার দিকে সংঘটিত এই ঘটনায় স্থানীয় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

মারাইংতং ধম্মা জেদী মহা বৌদ্ধ বিহার পরিচালনা কমিটির সদস্য অংহ্লাচিং মার্মা বাদী হয়ে আলীকদম থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগে লামা উপজেলার ২৮৫নং সাঙ্গু মৌজার হেডম্যান চংপাত ম্রোকে (৪০) প্রধান অভিযুক্ত করা হয়েছে।

অভিযোগে বাদী উল্লেখ করেন, মারাইংতং ধম্মা জেদী মহা বৌদ্ধ জাদী পার্বত্য চট্টগ্রামের বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের জন্য অত্যন্ত পবিত্র স্থান। দীর্ঘদিন ধরে এখানে ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালিত হয়ে আসছে। তবে,সম্প্রতিক সময়ে জাদীর জমি দখল করে পর্যটন ব্যবসা শুরু করার জন্য হেডম্যান চংপাত ম্রো ও তার সঙ্গীরা চেষ্টা চালাচ্ছিলেন।

অভিযোগে আরও বলা হয়, গত ২১শে মে, চংপাত ম্রোর নেতৃত্বে একদল লোক জাদী এলাকায় প্রবেশ করে নতুন নির্মাণাধীন বৌদ্ধ মূর্তির উপর হামলা চালায়। হামলাকারীরা মূর্তিটির দুটি হাত,কানের ২ অংশ ও বৌদ্ধ আসনের কিছু অংশ ভেঙ্গে ফেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত এক থেকে দুই মাস ধরে সাঙ্গু মৌজার হেডম্যান চংপাত ম্রো রংরাং ইকো রিসোর্টের স্বত্বাধিকারীর মধ্যস্থতায় বৌদ্ধ জেদীর জমি দখলের পরিকল্পনা করছিলেন। এর আগেও রংরাং ইকো রিসোর্টের স্বত্বাধিকারী মারাইংতং পাহাড়ে অবৈধভাবে কটেজ নির্মাণের জন্য অর্থায়ন করেছিলেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

মূর্তি ভাঙচুরের খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা দেখা দেয়। মারাইংতং ধম্মা জেদী মহা বৌদ্ধ বিহার পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকে এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়েছে।

এদিকে, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন আলীকদম জোনের উপ-অধিনায়ক মেজর মঞ্জুর মোর্শেদ, পিএসি,উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মুমিন,আলীকদম থানার অফিসার ইনচার্জ মির্জা জহির উদ্দিন,আলীকদম উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জুলফিকার আলী ভুট্টো।

আলীকদম উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মুমিন বলেন,আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি।মারাইংতং জেদি পাহাড়ের চূড়ায় ঘটনাস্থলে পুলিশ নিরাপত্তা দিচ্ছে এবং সঠিক তদন্তের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা নিতে আলীকদম থানার ওসি কে নিদের্শনা দেওয়া হয়েছে বলে জানান।

আলীকদম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান, ঘটনা জানার পরপরই বুধবার রাতে আমি নিজে ঘটনাস্থলে গিয়েছি। জেদী পরিচালনা কমিটির লোকজনের সাথে কথা হয়েছে। তারা থানায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় অভিযোগ দিবেন। অভিযোগে পেলে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এই ঘটনায় এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। স্থানীয় বৌদ্ধ সম্প্রদায় আশা করছেন, প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে দোষীদের আইনের আওতায় আনবে এবং পবিত্র স্থানটির সুরক্ষা নিশ্চিত করবে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: আলীকদম
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন