আ’লীগ সরকারই চুক্তির অধিকাংশ ধারা বাস্তবায়ন করেছে
আওয়ামী লীগ সরকার এই পার্বত্য শান্তিচুক্তি করেছে এ সরকারই তার অধিকাংশই বাস্তবায়ন করেছে। সরকার ভূমি কমিশন আইন পাশ করেছে। শান্তিচুক্তি বাকি অংশগুলোও দ্রুত বাস্তবায়ন হবে। তবে এর জন্যে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।
বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরের ২৩তম বর্ষপূর্তির আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
জেলা পরিষদের আয়োজনে কর্মসূচি শুরু করেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা। পরে তিনি কেক কেটে আলোচনা সভা ও শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে যোগদেন।
অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক লুৎফর রহমান, সিভিল সার্জন অংশৈ প্রু, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আছাদুজ্জামান, জেলা পরিষদ সদস্য লক্ষী পদ দাশ, ক্যানে ওয়ান চাক, ক্যসা প্রু, কাঞ্চন জয় তংচঙ্গ্যা, সিংইয়ং ম্রো, তিংতিং ম্যা, ফাতেমা পারুলসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সকাল সাড়ে ৯টায় ‘সর্বক্ষেত্রে পার্বত্য এলাকার সকল নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিত’ চেয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ জেলা কমিটি। এসময় বক্তব্যকালে জেলা কমিটির সভাপতি কাজী মুজিবুর রহমান বলেন, আমরা আশা করেছিলাম চুক্তির মাধ্যমে পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে। কিন্তু চুক্তির ২৩তম বছরে এসেও পাহাড়ে অস্ত্রের ঝনঝনানি কমেনি। চাঁদাবাজি, অপহরণ, খুন চলছে। তাই ভূমি আইন জটিলতা, ভোটাধিকার প্রয়োগসহ, বর্তমানে ব্যবসা, শিক্ষা, চাকুরী, ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালন, নেতৃত্বে কর্তৃত্ব এবং উন্নয়নেও বষম্য হচ্ছে। তাই সাংবিধানিক অধিকার ক্ষেত্রে চুক্তির সাংঘর্ষিক ধারাগুলোর পরিবর্তন করে সকলক্ষেত্রে বৈষম্যহীন সমান অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবি জানান। অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন তারু মিয়ার সভাপতিত্বে এতে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মনিরুজ্জামান, নুরুল আলম, মো. ইউছুপ হোসেন মুনিরী, আবদুস শুক্কুর, মো, নাছির উদ্দিন, মো. শাহাজালালসহ অন্যান্যরা।
অন্যদিকে চুক্তির বর্ষপূর্তি উপলক্ষে রাজারামাঠ সংলগ্ন আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে বিনামূল্যে বিশেষ চিকিৎসা সেবা দিয়েছে বান্দরবান ৬৯ পদাতিক বিগ্রেডের ৭ফিল্ড এ্যাম্বুলেন্স টিম। এসময় পাহাড়ি বাঙ্গালী কয়েক শতাধিক মানুষ চিকিৎসা গ্রহণ করেন।
এদিকে শান্তিচুক্তির ২৩তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে জনসংহতি সমিতির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কেএস মং সাংবাদিকদের বলেছেন, জীবনের তাগিদে, অস্তিত্বের প্রয়োজনে খেলায় কেউ সামনে, আবার কেউ পেছনে থাকে। অর্থাৎ সবাই ব্যবহার হচ্ছে। ইউপিডিএফ বা জেএসএস সংষ্কার সবাই এখন চুক্তি বাস্তবায়ন চায়। পার্বত্য চট্টগ্রামে সময়ে যা করার কথা, তা করা হয়নি বলেই বর্তমানে নানা সমস্যা দেখা দিচ্ছে। তারমানে এ নয় যে, চুক্তির প্রয়োজন নেই। চুক্তি বাস্তবায়নের মাধ্যমেই সব সমস্যার সমাধান হবে বলে মনে করেন জেএসএস এর শীর্ষ এই নেতা।
এছাড়াও পার্বত্য জেলা বান্দরবান নানা কর্মসূচীর মধ্যদিয়ে উদযাপিত হয়েছে শান্তিচুক্তির ২৩তম বর্ষপূর্তি। এই উপলক্ষে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ ও সেনাবাহিনী পৃথক কর্মসূচি পালন করেছে। তবে এবার চুক্তির পক্ষের জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) ’র কোন কর্মসূচি পালন করেনি।