উখিয়ার পালংখালী সীমান্তে গোলাগুলির শব্দ; আতঙ্কে স্থানীয়রা
বান্দরবান নাইক্ষ্যংছড়ি ঘুমধুমের তুমব্রু সীমান্তের পর এবার উখিয়ার পালংখালী সীমান্তে ভারী গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে কয়েকদিন ধরে।
এক মাসেরও বেশি সময় ধরে তুমব্রু সীমান্তের বিপরীতে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দেশটির সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ চলছে সে দেশের স্বাধীনতাকামী আরাকান আর্মির সঙ্গে। সেই যু্দ্ধের প্রভাবে আতঙ্কে দিনাতিপাত করছে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষ।
এতদিন তুমব্রু সীমান্তের মানুষ আতঙ্কে থাকলেও এবার উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের বালুখালী, ধামনখালী রহমেতরবিল ও আঞ্জুমানপাড়া সীমান্তের মানুষ আতঙ্কে রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকালে আঞ্জুমানপাড়া এবং বিকেলে রহমতেরবিল সীমান্তে মিয়ানমারের ওপার থেকে মর্টার শেলের মতো ভারী অস্ত্রের গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে।
তবে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বিজিবি। নিরাপত্তার জন্য স্থানীয় জেলে, কৃষক এবং গরু-মহিষ নিয়ে সীমান্তের কাছে না যেতে সতর্ক করা হচ্ছে বিজিবির পক্ষ থেকে।
পালংখালী আঞ্জুমান সীমান্তের বাসিন্দা গফুর আলম প্রতিদিন মহিষ নিয়ে সীমান্ত এলাকায় যান। তিনি বলেন, ‘সপ্তাহখানেক ধরে সীমান্তে গোলাগুলির শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। আজ (মঙ্গলবার) সকালে আঞ্জুমান সীমান্তে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে থেমে থেমে চলা গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে।’
সীমান্তের ধারে ধান চাষ করা ছৈয়দ হোসেন বলেন, ‘সীমান্তের কাছে যেতে এখন ভয় লাগে। কিছুদিন ধরে গুলির শব্দ শুনা যাচ্ছে।’ ভয়ভীতির মধ্য দিয়ে চাষবাস করছেন বলে জানান তিনি।
স্থানীয় ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ফয়েজুল ইসলাম বলেন, ‘আমার বাড়ির ওপর দিয়ে মিয়ানমারের হেলিকপ্টার উড়েছে। সকাল-বিকাল ভেসে আসছে গুলির আওয়াজ। গুলাগুলির শব্দে বাচ্চারা নির্ঘুম ও ভয়ভীতির মধ্য দিয়ে রাত কাটাচ্ছে। এ নিয়ে চরম উদ্বিগ্ন এলাকাবাসী।’
স্থানীয় পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এম. গফুর উদ্দিন চৌধুরী মোবাইল ফোনে বলেন, ‘আমি এলাকার বাইরে। এখন ঢাকায় অবস্থান করছি। স্থানীয় ইউপি সদস্য সকালের দিকে আমাকে জানিয়েছেন আঞ্জুমান সীমান্তে ব্যাপক গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে।’ খবর পেয়ে সীমান্তবর্তী মানুষদের চলাচল সীমিত করার নির্দেশনা দিয়েছেন চেয়ারম্যান।
চেয়ারম্যান জানান, পরিস্থিতি এখনও আশঙ্কাজনক নয়। তবে ইতিমধ্যে প্রাথমিকভাবে শঙ্কায় আছে—এমন সীমান্তের শতাধিক ঘরের একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে। পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতায় তাদের সরিয়ে নেয়া হবে।
এ বিষয়ে বিজিবি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
প্রসঙ্গত, গত ২৮ আগস্ট বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু উত্তর মসজিদের কাছে মিয়ানমার থেকে দুটি মর্টার শেল এসে পড়ে। গেল শুক্রবার রাতে সেখানে হতাহতের ঘটনা ঘটে। তবে পালংখালীর সীমান্তে এখনও পর্যন্ত মর্টার শেল এসে পড়ার খবর পাওয়া যায়নি।