এক টুকরো মাংসের আশায় দুয়ারে দুয়ারে ঘুরছেন নিম্নআয়ের মানুষ

fec-image

যথাযথ ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে সারা দেশে উদযাপিত হচ্ছে পবিত্র ঈদুল আজহা। সকালে ঈদের নামাজ আদায়ের পর আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন ও ত্যাগের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী পশু কোরবানির দিয়েছেন মুসলমানরা।

তবে অনেক নিম্নআয়ের মানুষ অর্থের অভাবে কোরবানি দিতে পারেননি। তারা এক টুকরো মাংসের আশায় দুয়ারে দুয়ারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। বিভিন্ন আবাসিক এলাকার বাসাবাড়ির নিচে ও গেটের সামনে দাঁড়িয়ে মাংসের জন্য সমাজের বিত্তবানদের কাছে হাত পাতছেন এসব মানুষ।

সোমবার (১৭ জুন) রাজধানীর ধানমন্ডি, পুরান ঢাকা, যাত্রাবাড়ী, শনির আখড়া ও রায়েরবাগ এলাকায় এমন চিত্র দেখা গেছে। শুধু বড়রাই নন, শিশু থেকে শুরু করে কিশোর-কিশোরীদেরও মাংসের আশায় ব্যাগ নিয়ে ঘুরতে দেখা গেছে।

মাংস-প্রত্যাশী মানুষেরা বলছেন, আর্থিক দৈন্যদশার কারণে নিয়মিত খাবার জোগাড় করাই কষ্টসাধ্য। এ অবস্থায় কোরবানি দিতে পারছেন না। তবে ঈদে মাংসের চাহিদা সব পরিবারেই থাকে। কোরবানির ঈদে পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে খাবারের পাতে মাংস থাকা চাই সবার। সেজন্য কমবেশি যাই হোক মাংস পেলেই খুশি তারা।

রায়েরবাগ এলাকায় আম্বিয়া খাতুন নামের এক বৃদ্ধা বলেন, আমরা গরিব মানুষ। কোরবানি দেওয়ার সামর্থ্য নেই। সেজন্য যারা কোরবানি দিয়েছে তাদের কাছে মাংসের জন্য যাচ্ছি। সবাই এক-দুই টুকরো করে মাংস দিচ্ছে। তাতেই আমি খুশি।

শরীফা আক্তার নামের আরেকজন বলেন, সবাই কমবেশি মাংস দিচ্ছে। আমরা তো কোরবানি দিতে পারিনি। এই মাংসটুকু রান্না করে পরিবার-পরিজন নিয়ে একসঙ্গে খাব। আমাদের এটুকুতেই আনন্দ।

মাংসের জন্য সাদা ব্যাগ হাতে অপেক্ষা করতে দেখা যায় মুশফিকা নামের এক শিশুকে। বড়দের ভিড়ে সামনে যেতে পারছে না জানিয়ে এই শিশু বলে, এই বাড়িতে মাংস দিচ্ছে। কিন্তু বড়দের ভিড়ের কারণে সামনে যেতে পারছি না। পাশের বস্তিতে আমরা থাকি। ছোট ভাইকে নিয়ে অপেক্ষা করছি। ভিড় কমলে মাংস নিতে যাব।

মাংস আনতে গিয়ে বাড়ির দারোয়ানের খারাপ আচরণের শিকার হতে হয় জানিয়ে আব্দুল আজিজ নামের একজন বলেন, যে বাড়িতে মাংস দেয় সেখানে ভিড় একটু বেশি থাকে। তখন বাড়ির দারোয়ান খারাপ আচরণ করে। আমরা গরিব মানুষ বলেই তো তাদের কাছে যাই। তারপরও এক টুকরো মাংস পেলেই আমরা খুশি।

ধর্মীয় নিয়ম অনুযায়ী কোরবানির পশুর মাংস তিন ভাগ করে একভাগ কোরবানিদাতা নিজের জন্য রেখে বাকি দুই ভাগের মধ্যে একভাগ নিকটাত্মীয়দের মধ্যে এবং আরেক ভাগ সমাজের অসহায় ও নিম্নআয়ের মানুষের মধ্যে বিতরণ করতে হয়।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: ঈদুল আজহা
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন