কুকুরের অত্যাচারে অতিষ্ঠ পানছড়িবাসী
নিজস্ব প্রতিবেদক, পানছড়ি:
কুকুরের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে পানছড়িবাসী। কুকুরের কামড়ে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিনই বিভিন্ন ফার্মেসীতে চিকিৎসা নিতে ছুটে আসছে বিত্তশালী থেকে শুরু করে নিম্ন বিত্তরা। দীর্ঘদিন ধরে কুকুর নিধন অভিযান বন্ধ থাকার কারণে এর উপদ্রব মাত্রাতিরিক্ত বেড়েছে বলে সর্বস্তরের জনগণের দাবী।
সরেজমিনে পানছড়ির বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, যেখানে-সেথানে দল বেঁধে কুকুরের অবাধ বিচরণের চিত্র। কাউকে একা পেলেই এরা হয়ে উঠে হিংস্র। শিশু থেকে শুরু করে বুড়ো পর্যন্ত কাউকেই ছাড় দেয় না কুকুরের দল। পানছড়ি বাজার এলাকার ৩ বছর বয়সী অর্পিতা পাল অর্নি ও টিএন্ডটি টিলার ৭৫ বছর বয়সী অর্ণদা পাল ইতিমধ্যে কুকুরের কামড়ে আহত হয়ে ব্যয়বহুল ভ্যাকসিন নিচ্ছে।
তাছ্ড়াা কুকুরের কামড়ে চিকিৎসা নিতে না পেরে অকালে ঝরেছে ইসলামপুর গ্রামের জয়নাল আবেদীন জনুর ৩য় শ্রেণীতে পড়ুয়া ছেলে মো. নাইমের প্রাণ। গত বছর ইসলামপুর এলাকায় এক কুকুরের কামড়ে আহত হয়েছিল ৯ জন। পরে এলাকাবাসী ঘাতক কুকুরকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে বিরল দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছিল। বর্তমানে কুকুরের অত্যাচার এতই বেড়েছে যে কোমলমতি শিশুরা বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার পথে প্রতিনিয়তই পড়ছে রোষানলে।
পানছড়ি বাজারের বিশ্বাস ফার্মেসীর স্বত্বাধিকারী বিমান দেব জানান, অক্টোবর-নভেম্বর মাসে কুকুরের কামড়ে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ১৫০ জনের অধিক লোক ভ্যাকসিন নিয়েছে। তাছাড়া সুপ্রিয় মেডিকেল, পাল মেডিকেল, শেফালি ট্রেডার্সে ভ্যাকসিন নিয়েছে অর্ধশতাধিক।
এ ব্যাপারে পানছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য ও প: প: কর্মকর্তা ডা. সনজীব ত্রিপুরা জানান, কুকুরের কামড়ে মরণব্যাধি জলতাংক রোগ হয়। যার চিকিৎসা ব্যয়বহুল। কুকুরের কামড়ে ভ্যাকসিন না নিয়ে অপচিকিৎসা করলে মৃত্যু অনিবার্য। তবে পানছড়ি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ ভ্যাকসিন পাওয়া না গেলেও খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে পাওয়া যায়। পৌরসভা এলাকার মতো উপজেলাগুলোতেও কুকুর নিধনের পদক্ষেপ নেয়া দরকার বলে মনে করেন।
পানছড়ি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বাবু সর্বোত্তম চাকমা জানান, আগে একবার কুকুর মারার উদ্যেগ নেয়া হয়েছিল কিন্তু জনবল না পাওয়ায় তা সম্ভব হয়নি। তিনি বলেন জরুরী ভিত্তিতে এর একটা বিহীত ব্যবস্থা নেয়া দরকার।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে আলাপ করে এ ব্যাপারে একটি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে আশ্বাস প্রদান করেন। পানছড়ির সচেতন মহল ও শিক্ষার্থী অভিভাবক এ ব্যাপারে দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চায়।