ঘুষের টাকাসহ আটক সার্ভেয়ার আতিকের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি
আদালতের নিকট স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন ঢাকা বিমানবন্দরে ঘুষের টাকাসহ আটক কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ শাখার সার্ভেয়ার মো.আতিকুর রহমান।
মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) রাতে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত নং-০১ এ স্বেচ্ছায় তিনি জবানবন্দি প্রদান করেন।
ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬৪ ধারার বিধান মোতাবেক আসামি মো. আতিকুর রহমানের দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গ্রহণ করেন বিচারক মোহাম্মদ আবুল মনসুর সিদ্দিকী।
গত ১ জুলাই ২৩ লাখ ৬৩ হাজার ৯০০ টাকাসহ আটক হন সার্ভেয়ার মো. আতিকুর রহমান। ৩ জুলাই তার বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪ (৩) ও তৎসহ ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি দমন প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় মামলা করেন দুদক। যার মামলা নং-০২। যা কক্সবাজার জেলা ও দায়রা আদালতের স্পেশাল
মামলা নং-০৭/২০২২। দায়েরকৃত মামলায় ৫ (পাঁচ) দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন বিজ্ঞ আদালত। বিগত ৪ জুলাই সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল তার রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে দুদক কক্সবাজার সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মনিরুল ইসলাম বলেন, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদক কক্সবাজার সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক রিয়াজ উদ্দিন ০৫ (পাঁচ) দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে বিজ্ঞ আদালত তা মঞ্জুর করেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা উক্ত আদেশের কপি পেয়ে সার্ভেয়ার মো. আতিকুর রহমানকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে সার্ভেয়ার আতিকুর রহমান স্বেচ্ছায় দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করতে রাজি হন। তারই প্রেক্ষিতে আসামিকে সিনিয়র স্পেশাল জজের আদেশ মূলে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত নং-০১ এর বিচারক মোহাম্মদ আবুল মনসুর সিদ্দিকীর নিকট উপস্থাপন করা হয়। ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬৪ ধারার বিধান মোতাবেক আসামি আতিকুর রহমানের দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গ্রহণ করেন বিচারক। আসামি দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি স্বেচ্ছায় ও স্ব-প্রণোদিত হয়ে প্রদান করেছেন।
সার্ভেয়ার আতিকুরের বাড়ি সিরাজগঞ্জ পৌরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের মিরপুর এলাকায়। তাঁর বাবার নাম আবদুর রহমান। আতিকুরের চাকরি পার্বত্য বান্দরবান জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে হলেও তিনি (সার্ভেয়ার) সংযুক্তিতে দেড় বছর ধরে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসনের ভূমি হুকুম দখল (এলএ) শাখার অধীন মহেশখালী উপজেলার দায়িত্বে ছিলেন। মহেশখালীতে সরকারের মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর স্থাপনসহ প্রায় ১৫টি প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণের দায়িত্বে ছিলেন আতিকুরসহ তিন সার্ভেয়ার। ভূমি অধিগ্রহণ করতে গিয়ে জমির মালিকদের কাছ থেকে ঘুষ লেনদেনে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ উঠেছে আতিকের বিরুদ্ধে।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, সার্ভেয়ার আতিক উৎস গোপন বা আড়াল করার উদ্দেশ্যে হস্তান্তর, স্থানান্তরের চেষ্টা করে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২–এর ৪ (২) ও ৪ (৩) ধারা তৎসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
দুদকের আইনজীবী আবদুর রহিম বলেন, সার্ভেয়ার আতিকুর ঘুষের ২৩ লাখ ৬৩ হাজার ৯০০ টাকা কোথায় পেয়েছেন, তার সঠিক ব্যাখ্যা বা উত্তর দিতে পারেননি। এই টাকার সঙ্গে আরও কারা জড়িত সবার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।