ভারতে জাহাঙ্গীর মোহাম্মদের স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘ও সোহাগী’ পুরস্কৃত
ভারতে অনুষ্ঠিত দুটি চলচ্চিত্র উৎসবে পুরস্কৃত হয়েছে নির্মাতা জাহাঙ্গীর মোহাম্মদের স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘ও সোহাগী’। চলচ্চিত্রটি তার সঙ্গে যৌথভাবে প্রযোজনা ও পরিচালনা করেছেন গোলাম মোস্তফা। মহারাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত ছত্রপতি শিবাজি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে ছবিটি শ্রেষ্ঠ বাংলাদেশী ফিল্ম ও গুজরাটের নিউ নরমাল আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বেস্ট উইমেন সোস্যাল অ্যাওয়ারনেস জিতেছে।
ছবিটি যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক উৎসব লিফট-অব গ্লোবাল নেটওয়ার্কে বাংলাদেশের একমাত্র চলচ্চিত্র হিসেবে ফাইনালে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। এছাড়া ছবিটি ‘রোশনাই’ আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের অফিসিয়াল সিলেকশনে রয়েছে।
চলচ্চিত্র নির্মাতা জাহাঙ্গীর মোহাম্মদ জানান, এ সিনেমাটি আন্তর্জাতিক প্লাটফর্মে পুরস্কার পেয়েছে। ছবিটি লড়ছে বিভিন্ন উৎসবে। এ জন্য আমরা খুবই আনন্দিত। চলচ্চিত্রটি আন্তর্জাতিকভাবে পুরস্কৃত ও স্বীকৃতি পাওয়ায় ছবির টিমের সকল সদস্য, বন্ধু ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।
এছাড়া তিনি জানান, ‘ও সোহাগী’ চলচ্চিত্রটি বাংলাদেশের ঢাকায় ২০২১ সালের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শনীর জন্য নির্বাচিত হয়েছে। এ উৎসবের মাধ্যমে এটি বাংলাদেশে প্রিমিয়ার হবে।
ও সোহাগী- সিনেমাটি স্বপ্নবঞ্চিত নারী-শিশুর বৃত্তাকার জীবনের বিয়োগান্ত উপাখ্যান। বিশ্বময় সমাজের সর্বত্র আমাদেরই মুখোশের আড়ালে লুকিয়ে থাকা রহস্যময় পুরুষের ঘৃণ্য লালসা ও ভয়াল পাশবিকতার থাবা ভালোবাসার অগণিত শিশু, কিশোরী ও নারীর স্বপ্ন-সম্ভাবনাকে গ্রাস করে অবলীলায়। আবহমানকালের ক্ষয়িষ্ণু বাস্তবতার সেই অন্ত:ক্ষরণ, স্বপ্নভাঙা মানব হৃদয়ের বেদনা ও অপূর্ণ জীবনের অব্যক্ত বিলাপ এ কাহিনীতে রূপক ও বহুস্তর জাদুময় ব্যঞ্জনায় প্রকাশিত।
ছবিটির চিত্রনাট্য করেছেন নাহার কৃপা। চিত্রগ্রহণে ছিলেন রাকিবুল হাসান। দ্বিতীয় ইউনিটের ক্যামেরা ও ড্রোন পরিচালনা করেছেন আহমেদ হিমু। অভিনয়ে সমন্বিত বর্ধণ, মোহাম্মদ রফিক, রওনক রিপন এবং ঝুমুর আসমা জুঁই। সম্পাদনায় ছিলেন দেবাশীষ ডুব ও পোস্ট প্রডাকশন সুপারভাইসার হিসেবে ছিলেন চৈতালি সমাদ্দার।
শিল্প নির্দেশনায় উত্তম গুহ ও সঙ্গীত পরিচালনায় সায়েম রানা। ছবিটি প্রযোজনার সঙ্গে আরও যুক্ত ছিলেন আবু জায়েদ, রহমতউল্লাহ।
ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন একজন মুক্তিযোদ্ধা। তিনি কবি, লেখক, গবেষক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে সুপরিচিত। তিনি তিনটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র- উদ্ভাস্তু (১৯৮৮), নিরুদ্দেশ (২০০৫), এবং ও সোহাগী (২০২০) নির্মাণ করেছেন। তিনি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘হিরালাল সেন: দ্যা ওরিয়েন্টাল সিনে-ফাদার ইগনোর’ চিত্রনাট্য করেছেন। এটি এখন নির্মাণের অপেক্ষায় রয়েছে।
ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের একজন প্রধান তথ্য কর্মকর্তা। এছাড়া তিনি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠাকালীন প্রধান নির্বাহী, জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ ও চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।