মহাসেন আঘাত হেনেছে ভোলায়: অসংখ্য কাঁচা ঘরবাড়ি, গাছপালা বিধ্বস্ত
পার্বত্য নিউজ ডেস্ক, ভোলা: ভোলার ঘুর্ণিঝড় মহাসেন আঘাত করেছে দ্বীপ জেলা ভোলায়। আজ সকালে খেপুপাড়ায় ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগ প্রথম আঘাত হানার পর তার মূলকেন্দ্র দিক পরিবর্তন করে ভোলার দিকে সরে গেছে। বর্তমানে সেখানে তীব্র ঝড়ো হাওয়া বইছে। দ্বীপের নিম্নাঞ্চল ইতোমধ্যে প্লাবিত হয়েছে। অসংখ্য কাঁচা ঘরবাড়ি, গাছপালা ভেঙে গেছে।
এদিকে, সকাল সোয়া ৮টার দিকে ভোলার লালমোহনে ঘূর্ণিঝড়ে গাছচাপা পড়ে কাশেম (৬৫) নামে এক ব্যক্তি মারা গেছেন। তার বাড়ি উপজেলার ধলিগৌর এলাকায়। লালমোহন ঘূর্ণিঝড় মনিটরিং কন্ট্রোল রুম সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
সকাল ৯টা পর্যন্ত পাওয়া তথ্য মতে, মহাসেনের প্রভাবে এটি প্রথম মৃত্যু ঘটনা।
মনপুরা উপজেলার বিছিন্ন চরাঞ্চল ও চরফ্যাশনের চর কুকরী-মুকরী, ঢালচর, চরপাতিলাসহ মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর মধ্যবর্তী অর্ধশত চর তিন থকে চার ফুট পানিতে তলিয়ে গেছে। টানা বর্ষণ ও ঝড়ো হাওয়ায় জনজীবন সম্পূর্ণ অচল হয়ে পড়েছে।
দ্বীপজেলা ভোলার প্রায় ২০ লাখ মানুষ বুধবার সন্ধ্যা থেকে গৃহবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। চরফ্যাশনের মুজবিনগর ইউনিয়নে বেড়িবাঁধ ভেঙে তিন গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
জেলার বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে ৩১ হাজার ৩০০ জন আশ্রয় নিয়েছেন বলে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
চর কুকরী-মুকরীর চেয়ারম্যান হাসেন মহাজন জানান, সকাল ১০টা থেকে বাতাসে গতি অনেক বেড়ে গেছে। ইতিমধ্যে তার ইউনিয়নের অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। প্রচুর গাছপালা ভেঙে গেছে।
এদিকে, মহাসেনের প্রভাবে পুরো জেলার ওপর দিকে ঘূর্ণিঝড় বয়ে যাচ্ছে। এ কারণে জেলার তুলাতলী এলাকায় বেশ কিছু ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত ও গাছপালা উপছে গেছে। এছাড়া চর কুকরী-মুকরী ইউনিয়নে ১০/১২টি কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সালাম হাওলাদার।
নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে তিন/চার ফুট উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে। আতঙ্কে সেখানকার মানুষ সাইক্লোন শেল্টার সেন্টারে আশ্রয় নিয়েছেন।
অপরদিকে, রাতভর বর্ষন হওয়ায় ভোলা শহর রক্ষা বাঁধ ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। যে কোনো মুহূর্তে তীব্র জোয়ারের চাপে বাঁধ ভেঙে ভোলা শহর তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় জনগণ।
ভোলার বিচ্ছিন্ন ও দুর্গম ঢালচর, কুকরী-মুকরী, চর নিজাম, কলাতলীর চর, চর মোজাম্মেল, চর পাতিলাসহ বেশ কিছু চরের মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ে চলে এসেছে। জেলার সাতটি মনিটরিং সেল টিম কাজ করছে। এছাড়াও নয় হাজার ১৩৫ জনের সেচ্ছাসেবী দল প্রস্তুত রয়েছে।
ভোলার জেলা প্রশাসক খোন্দাকার মোস্তাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় মহাসেন মোকাবেলায় জেলা প্রশাসন সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিচ্ছে।