শখের বশে বক্সে মধু চাষ, স্বপ্ন দেখছেন চাষী খোরশেদ

গহীন পাহাড়ে ২০টি বাক্স বসিয়ে মৌমাছি পালন করে মধু চাষ শুরু করেছেন খোরশেদ আলম নামের এক যুবক। সে কক্সবাজার জেলার পেকুয়া উপজেলার শিলখালী ইউনিয়নের মুন্সিমুড়া এলাকার আব্দুর সত্তারের ছেলে।
পাহাড়ি এলাকায় মধু চাষ দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। মধু চাষের মাধ্যমে অনেকের পরিবার সচ্ছল জীবন যাপন করতে শুরু করেছে। মধু চাষের ফলে পরাগায়নের মাধ্যমে যেমন ফলন বাড়ছে, খাদ্যে ভিটামিনের যোগান দিচ্ছে, তেমনি মধু বিক্রি করে অর্থনৈতিকভাবেও স্বাবলম্বী হচ্ছে। পাহাড়ে লিচু ফুলের মাঝে মৌমাছির সাহায্যে মধুচাষ করেই খোরশেদ আলম এখন সাবলম্বী।
খবর পেয়ে সরেজমিনে গেলে মধু সংগ্রহের ফাঁকে কথা হয় এ স্বপ্নবাজ যুবক খোরশেদ আলমের সাথে। তিন মাস আগে শখের বশে শুরু করা মৌ বাগানটি থেকেই এখন তাঁর আয় হয় বেশি। এখন তাঁর প্রধান আয়ের উৎস এটি।
মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) বিকালে মধু সংগ্রহের ফাঁকে এ গল্প শোনান খোরশেদ আলম।
তিনি বলেন, গোপালগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জ থেকে বেসিক এর আওতায় ট্রেনিং করে শেখেন কিভাবে মধু চাষ করা যায়। সেখান থেকে ২০টি বাক্স সংগ্রহ করি। ৩ লাখ টাকা পুঁজি নিয়ে গত ৩ মাস আগে শখের বসে নিজ এলাকার গহীন পাহাড়ে লিচু বাগানে মৌমাছি দিয়ে মধুচাষ শুরু করি। প্রথম বারে ৮০ কেজি মধু সংগ্রহ করেছি ।
তিনি আরও বলেন, সরকারের সহায়তা পেলে আরো উন্নত মানের মধুচাষ করে দেশের অর্থনীতিতে ও মধুর চাহিদা পূরণে ভূমিকা রাখবেন।
এ সময় ওখানে নিয়োজিত শ্রমিকরা জানিয়েছেন, শুধু লিচু মৌসুম নয়। সারা বছরই এখানকার পাহাড়ি এলাকায় বাক্স বসিয়ে মৌমাছি পালন করে মধু চাষ করা যাবে। উন্নত জাতের মেলিফেরা এ জাতের মৌমাছি দিয়ে এখানকার চাষিরা মধু সংগ্রহ করছেন।
সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে প্রশিক্ষণ ও সরঞ্জামাদি সরবরাহ, সুদমুক্ত ঋণ সুবিধা প্রদানসহ বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে বাস্তব উদ্যোগ গ্রহণ করলে মধুচাষ এ এলাকায় সম্ভাবনার দুয়ার উন্মোচন করবে বলে মনে করেন এখানকার মৌ-চাষিরা।
ওই এলাকার বাসিন্দা রফিক আহমেদ বলেন, সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এলাকার আর্থসামাজিক উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে এ মধু। সে মধুচাষের মাধ্যমে নিজ এলাকার বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান করে যাচ্ছেন।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তপন কুমার রায় বলেন, শিলখালীর খোরশেদ আলমের মধু চাষের কথা জেনেছি, এটা ক্ষুদ্র ও কুঠির শিল্প বেসিকের আওতায় ছিল। তবে আগামিতে বিসিক ও বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থার সহায়তায় প্যাকেজের মাধ্যমে প্রশিক্ষণসহ মৌ চাষে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
ভ্রাম্যমাণ মধু চাষিরা লিচু ও বনের ফুল ফলান্তে মধু চাষে মনোযোগী হচ্ছে। এতে করে এ এলাকায় মধু আহরণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। আশা করা যায় ভবিষ্যতে বাংলাদেশের মধুশিল্প প্রসারে এ এলাকার চাষিরা বিশাল ভূমিকা রাখবে।