অপেক্ষার প্রহর গুণছে কাপ্তাই হ্রদ তীরবর্তী তিন এলাকার সহস্র বাসিন্দা
পাহাড়ি জেলা রাঙামাটি শহরের কাপ্তাই হ্রদ তীরবর্তী সবচেয়ে পুরনো এলাকা তিনটির নাম ইসলামপুর, পুরানবস্তী এবং ঝুলুইক্যা পাহাড়। চারিদিকে কাপ্তাই হ্রদের পানি ঘিরে থাকায় নৌ পথেই তাদের যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম। এই তিন এলাকার বাসিন্দারা কাপ্তাই হ্রদের কারণে শহরের মূল সংযোগ থেকে দীর্ঘ ৬০ বছর ধরে বঞ্চিত ছিলো।
তাই বর্তমান আ’লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ওই এলাকার বাসিন্দাদের দুর্ভোগ লাগবে দু’টি সেতু স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৩ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি সেতু দু’টি নির্মাণের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেছিলেন। দীর্ঘ বছর সেতু দু’টির কাজ বন্ধ থাকার পর বর্তমানে সেতু দু’টির নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ায় স্থানীয়দের মাঝে স্বস্তির নি:শ্বাস ফিরে এসেছে।
পুরানবস্তী এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা মো. ফারুক আহম্মেদ তালুকদার বিপু বলেন, আমাদের এলাকার বাসিন্দারা দীর্ঘ বছর অনেক কষ্ট করেছে। সেতু না থাকায় জেলা শহরের সাথে আমাদের নৌকাযোগে যোগাযোগ করতে হতো। অনেক সময় নৌকা পার হতে গিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আ’লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর স্থানীয় এমপি দীপংকর তালুকদারকে এ বিষযে অবগত করলে তিনি আমাদের দাবি মিটিয়ে দিয়েছেন। আমরা অনেক খুশি। সেতু দু’টি নির্মিত হয়ে গেলে আমাদের কষ্ট লাঘব হবে। শহরের সাথে আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হয়ে যাবে এবং জীবনমান উন্নত হবে।
রিজার্ভবাজার এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা বদিউল আলম বলেন, পুরানবস্তী-ঝুইলক্ক্যা পাহাড় সেতু দু’টি নির্মিত হলে হ্রদ পারের বাসিন্দারা চিকিৎসা সেবা, নিরাপত্তাসহ তাদের আত্মসামাজিক এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন সাধিত হবে।
তিনি আর বলেন, এছাড়াও ওইসব এলাকার বাসিন্দারা মূল শহরের শহরের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরি হলে ব্যবসায়িক নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পার্বত্য চট্রগ্রাম উন্নয়ন বোডের্র অর্থায়নে ১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে এ সংযোগ সেতু দু’টি নির্মিত হচ্ছে। জুলুইক্যা পাহাড়-পুরানবস্তীর ৩৮৪ মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার সংযোগ সেতুর নির্মান কাজ প্রায় ৯০ ভাগ শেষ হয়েছে। সেতু দু’টি নির্মিত হয়ে গেলে শহরের রির্জাভ বাজার এলাকার সাথে জুলুইক্যা পাহার ও ইসলামপুর এলাকার ১৫ হাজার মানুষের যাতায়াত ও আর্থ সামাজিক উন্নয়নের দ্বার খুলে যাবে। সেতু দু’টির উদ্বোধনের অপেক্ষায় প্রহর গুনছে এলাকার সহস্র মানুষ।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান মো. নুরুল আলম নিজামী বলেন, কিছু বছর বিলম্বিত হলেও সেতু দু’টির কাজ শুরু হয়েছে এবং তা এ মৌসুমে দ্রুত সময়ের মধ্যে শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে কর্তৃপক্ষের।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান মো. নুরুল আলম নিজামী আরও বলেন, সেতু দু’টির কাজ ৯০ভাগ শেষ। এখন এলাকাগুলোর সাথে সংযোগের কাজ বাকী। এরপরই সেতু দু’টি দিয়ে চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হবে।
পার্বত্য চট্টগ্রামে সড়ক যোগাযোগে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে বর্তমান সরকার। জন জীবনের আর্থ সামাজিক উন্নয়নের লক্ষে বর্তমান সরকারের চলমান উন্নয়ন কর্মকান্ড অব্যাহত থাকবে এমন প্রত্যাশা সাধারণ মানুষের। রির্জাভ বাজার-জুলুইক্যা পাহাড়-ইসলাপুরের সংযোগ সেতুটি নির্মিত হওয়ায় মানুষের দীর্ঘ দিনের কষ্ট দূর হওয়ার পাশাপাশি তাদের আর্থ সামাজিক উন্নয়নের দ্বার উন্মোচিত হবে বলে মনে করেন স্থানীয় জনসাধারণ ।