আনন্দ-বেদনায় রোহিঙ্গাদের ঈদ উদযাপন, নিজ দেশে ফিরে যেতে করেছেন দোয়া

fec-image

আনন্দ-বেদনার মধ্য দিয়ে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করছেন কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফে অবস্থিত রোহিঙ্গারা। ঈদের নামাজ আদায়ের পর কান্নায় ভেঙে পড়েন ইমাম ও মুসল্লিরা।

শনিবার (২২ এপ্রিল) সকালের দিকে উখিয়া-টেকনাফের ৩৪টি ক্যাম্পের প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরে পবিত্র ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

এসব জামাতে মোনাজাতে অংশ নেওয়া মুসলিমরা মিয়ানমার জান্তা সরকারের হত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতনের বিচার চেয়ে ও নিজ দেশ মিয়ানমারে মর্যাদার সঙ্গে নিরাপদ প্রত্যাবাসনের জন্য দোয়া করেন। এছাড়াও তাদের আশ্রয় দেয়ার জন্য বাংলাদেশের সরকার-জনগণের প্রতি ধন্যবাদ জানান।

বিভিন্ন রোহিঙ্গা শিবির ঘুরে দেখা যায়, রোহিঙ্গা শিশুরা সকাল থেকেই নতুন জামা-কাপড় পরে সেজেগুজে শিবিরের রাস্তায় হৈহুল্লোড় আর আনন্দে মেতে উঠেছে। কিশোরীরাও নিজেদের সাজানোর চেষ্টা করেছেন মনের মতো করে। আবার অনেক শিশুকে খালি গায়ে দেখা গেছে। তবে বড়দের ঈদ উৎসবের আমেজ নেই। তাদের মনে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নিষ্ঠুর নির্যাতনে প্রাণ হারানো স্বজনদের দুঃসহ স্মৃতি!

রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মসজিদ ও নুরানী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ঈদের জামায়াত আদায় করেছেন রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীরা। কিছু কিছু জায়গায় খোলা আকাশের নিচে নামাজ পড়তে দেখা গেছে।

রোহিঙ্গা মুসল্লিরা বলেন, ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে চোখের সামনেই মিয়ানমার সেনারা আমাদের ছেলে, মেয়ে, ভাই, স্ত্রী, বাবা-মাকে মেরে ফেলেছে। আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে ঘরবাড়ি। লুট করা হয় সহায় সম্বল। আমরা আমাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে মর্যাদার সঙ্গে ফিরে যাওয়ার জন্য দোয়া করেছি।

আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন এপিবিএন – ৮ এর সহকারী পুলিশ সুপার মো. ফারুক আহমেদ বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে রোহিঙ্গা শিবিরে ঈদের নামাজ সম্পন্ন হয়েছে। ঈদ উপলক্ষে রোহিঙ্গা শিবিরগুলোকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালে ২৫ আগস্টে পর মিয়ানমার সরকারের নির্যাতনের মুখে প্রাণভয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার বুকভরা স্বপ্ন আর আশা নিয়ে পার করছেন প্রতিটি মুহূর্ত। তবে একজন দুজন করে নয় পরিবার নিয়ে স্বদেশে ফিরতে চান তারা। নিজেদের দেশ এবং অধিকার ও ভিটা মাটি ফিরে পাবার আশায় অপেক্ষা করছেন উখিয়া-টেকনাফের ৩৪টি ক্যাম্পের প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা।

নিউজটি ভিডিওতে দেখুন:

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: ঈদ, রোহিঙ্গা
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন