আমি নির্দিষ্ট কোন সম্প্রদায়ের নেতা নই, জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকল সম্প্রদায়ের নেতা- গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বীর বাহাদুর এমপি

Untitled-1

স্টাফ রিপোর্টার:

পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপি বলেছেন, বান্দরবান সম্প্রীতি ও শান্তির শহর। এর সাথে অন্য দুই পার্বত্য জেলায় শান্তি ও সম্প্রীতি ফিরিয়ে আনা হবে আমার প্রধান কাজ। তিন পার্বত্য জেলায় সমন্বয় সাধন করে উন্নয়ন করা হবে। প্রতিমন্ত্রী বুধবার রাতে বান্দরবান জেলা আওয়ামীলীগের আয়োজিত রাজার মাঠে গণ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমার সময়ে আপনারা শুধু দালান কোটা, রাস্তা ঘাট ও ব্রিজ নির্মান করা হয় নাই। জাতীকে শিক্ষিত করতে শত শত স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসাও নির্মান করা হয়েছে। যার সুফল আগামি কয়েক বছরে পাওয়া যাবে। আপনার আমাকে শান্তি দিন আমি আপনাদের উন্নয়ন দেব।

তিনি আরো বলেন, আমি নির্দিষ্ট কোন সম্প্রাদের নেতা নই। আমি জাতি ধর্ম বর্ণ সকল সম্প্রদায়ের নেতা। সম্প্রীতি ও শান্তির পক্ষে আপনারা সকলে মিলে আমাকে ভোট দিয়ে  ৫ম বারের মত নির্বাচিত করেছেন। আমি সকলের নিকট কৃতজ্ঞ।

বান্দরবান জেলা আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর আয়োজনে বুধবার বিকেল ৫ টায় বান্দরবানের ঐতিহ্যবাহি রাজার মাঠে দেয়া এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি একথা বলেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা। এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, চট্টগ্রামের সাতকানিয়া আসনের সংসদ সদস্য আবু রেজা নদভী, কক্সবাজার-১ আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, চট্টগ্রামের চন্দনাইশ-১৪ আসনের সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম চৌধুরী, জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি আবদুর রহিম চৌধুরী, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী মো: মজিবর রহমান, জেলা আ’লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লক্ষীপদ দাশ, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তৌহিদুর রহমান চৌধুরী রাশেদ, রাজপুত্র মংঞো প্রু চৌধুরী, আ’লীগ নেতা একেএম জাহাঙ্গীর, বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার সভাপতি রাজু বড়ুয়া প্রমূখ।

এর আগে তাকে দেয়া সম্বর্ধনায় ফুলে ফুলে সিক্ত হলেন পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপি। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী নিযুক্ত হওয়ায় পর বুধবার নিজ জেলা বান্দরবানে আগমন উপলক্ষে দলীয় নেতা কর্মী ও জেলাবাসীর মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা দেয়। দীর্ঘ ৩৭ বছর পর বান্দরবান থেকে মন্ত্রী পরিষদের সদস্য হওয়ায় জেলাবাসীর মাঝে উৎসাহ আরো বেশী দেখা দেয়। এই উপলক্ষে চট্টগ্রাম থেকে বান্দরবান পর্যন্ত কয়েকশ তোরণ নির্মান করা হয়। দুপুরের পর থেকে দলীয় নেতাকর্মী ও জেলাবাসী বীর বাহাদুর এমপি আসার আপেক্ষা করতে থাকে। ঘড়ির কাটা ৪টা ছুঁই ছুঁই তখন শতশত মোটর সাইকেল ও মটর গাড়ী শোভা যাত্রা নিয়ে তিনি মেঘলা পর্যটন এলাকায় আসেন। বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ গেইট এলাকায় পৌছলে সর্বপ্রথম বান্দরবান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্যা শৈহ্লা ফুলের তোড়া দিয়ে অভিনন্দন জানান। এরপর জেলা পরিষদের কর্মচারী কল্যাণ সংসদ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ফুলের তোড়া উপহার দেন। পরে বাস স্টেশন এলাকায় বীর বাহাদুর পৌছলে দলীয় নেতাকর্মীরা ফুলের পাপড়ী ছিটিয়ে অভিন্দন জানান। এসময় অনেকে ফুলের তোড়া্ উপহার দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। বাসষ্টেশন থেকে রাজার মাঠ পর্যন্ত রাস্তার দুপাশে শতশত নারীপুরুষ দাঁড়িয়ে ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে শুভেচ্ছা জানান। পরে রাজার মাঠে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের সভাপতিত্বে গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠান করা হয়। এর আগে চট্টগ্রাম থেকে বান্দরবানে আসার পথে দোহাজারী ষ্টেসনে এক পথ সভায় বক্তব্য রাখেন। রাতে জাতীয় ও স্থানীয় শিল্পীদের নিয়ে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

তবে প্রতিমন্ত্রীর সম্বর্ধনায় বিভিন্ন স্কুল ছুটি দিয়ে কোমলমতি শিশুদের ঘন্টার পর ঘন্টা রাস্তায় দাঁড় করিয়ে রাখায় অনেক অভিভাবককে ক্ষোভ জানাতে দেখা যায়।

প্রসঙ্গত:  ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে টানা পঞ্চম বারের মত বান্দরবানের ৩০০ নং আসন থেকে বীর বাহাদুর সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তার প্রতিদন্ধী দলীয় বিদ্রোহী প্রার্থী আওয়ামীলীগের সভাপতি প্রসন্ন কান্তি তঞ্চগ্যাকে প্রায় ২৯ হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে নির্বাচিত হন বীর বাহাদুর। এবারের প্রথম বান্দরবান থেকে মন্ত্রী পরিষদে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেয়া হয় তাকে। দীর্ঘ ৩৭ বছর পর মন্ত্রী পেয়ে বান্দরবানে আনন্দের বন্যা ভাসছে। জিয়া সরকারের আমলে ১৫ তম প্রয়াত বোমাং রাজা অংশৈ প্রু চৌধুরী মন্ত্রী ছিলেন। এরপর ১৯৯১ সাল থেকে বীর বাহাদুর সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলেও এবারই প্রথম তাকে মন্ত্রী পরিষদের সদস্য করা হয়। বীর বাহাদুর এর আগে প্রতিমন্ত্রী পদ পর্যাদার পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের রু’বার চেয়ারম্যান ছিলেন। এছাড়া তিনি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন।

বান্দরবানে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রীর নাগরিক সংবর্ধনা

কামরান ফারুক, বান্দরবান থেকে

 

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পাবর্ত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি কে বান্দরবানে গণসংবর্ধনা দেয়া হয়েছে।

 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি বলেন, বান্দরবানবাসী আমাকে পার্বত্যঞ্চলের মানুষের পাশে দাড়ানো যে সুযোগ করে দিয়েছে, তা কাজে লাগাতে চাই। পাহাড়ে সংঘাত বন্ধ করে সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ করার লক্ষ্যে সকলের সহযোগিতা কাম্য। আমার উপর সরকারের অর্পিত দায়িত্ব যথাযথ ভাবে পালনের মাধ্যমে পার্বত্যাঞ্চলসহ দেশ ও জাতির সেবা করে যেতে চাই।

তিনি আরো বলেন, বান্দরবান একটি দূর্গম জেলা। এখানে শিক্ষার প্রসার ঘটিয়ে শিক্ষার হার শতভাগে উন্নীত করতে চাই। পার্বত্যাঞ্চলের মানুষ শিক্ষা অর্জনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্নের ডিজিটার বাংলাদেশ গড়ার জন্য বদ্ধ পরিকর উল্লেখ করেন।

এদিকে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের পর এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে সংগীত পরিবেশন করেন দেশের জনপ্রিয় সংগীত শিল্পি এস. আই টুটুল, বাংলাদেশি আইডল মং, নন্দিতা, পলাশ, নন্দিতা ও দেশবরেণ্য শিল্পিবৃন্দ। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন চ্যানেল আই’র বিশিষ্ট উপস্থাপক মৌসুমী বড়ুয়া।

প্রসঙ্গত, বহু জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে দীর্ঘ ৩৭ বছরের প্রতিক্ষা অতিক্রম করে বান্দরবানবাসী মন্ত্রী পেয়ে উচ্ছসিত। বান্দরবানের প্রয়াত বোমাং সার্কেল চীফ রাজা অংশৈপ্রু চৌধুরী ১৯৭৭ সালে জিয়াউর রহমান সরকারের আমলে খাদ্য প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। এর ৩৭ বছর পর ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বীর বাহাদুর উশৈসিং বান্দরবান ৩০০ নং আসনে টানা ৫ম বারের মত সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

 

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন