উখিয়ায় এনজিও সংস্থার ঘর নির্মাণ নিয়ে নানান অভিযোগ, দু’পক্ষের মাঝে উত্তেজনা

fec-image

উখিয়ায় এনজিও সংস্থা রেডক্রিসেন্ট এর ঘর নির্মাণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। কাজে অনিয়মের পাশাপাশি একজনের জোত জমিতে অন্য জনকে ঘর নির্মাণ করে দেওয়ায় দু’পক্ষের দেখা দিয়েছে উত্তেজনা, যেকোন সময় এ নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করছে এলাকাবাসি। তবে ঘটনার জের ধরে জমির প্রকৃত মালিক চেহের আলী উপজেলা চেয়ারম্যানসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।

দায়েরকৃত অভিযোগের সূত্রে জানা যায়, উপজেলার হলদিয়াপালং ইউনিয়নের মধ্যম হলদিয়াপালং কোনারপাড়া এলাকার মৃত ঠান্ডা মিয়ার ছেলে চেহের আলীর ৯৪শতক খতিয়ানভুক্ত জমি আছে। ওই জমিতে জোরপূর্বক অন্য জায়গার খতিয়ান দেখিয়ে স্থানীয় প্রভাবশালী দিল মোহাম্মদ গং কে এনজিও সংস্থা রেডক্রিসেন্ট এর ঘর নির্মাণ করে দিয়েছে। যা সম্পূর্ণ বেআইনী। এ নিয়ে হতদরিদ্র চেহের আলী প্রতিবাদ করলে তার উপর কয়েক দফা হামলা চালিয়ে তাকে মারাত্মক ভাবে আঘাতপ্রাপ্ত করে। এছাড়াও দিল মোহাম্মদের ছোট ভাই নুরুল আলমের স্ত্রী আজিজা বেগম একই জায়গায় ঘর নির্মাণ করার জন্য ইট, বালি, কনক্রিট স্তুপ করে রেখেছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করেছেন।

সরজমিন ঘটনাস্থল পরির্দশন করে স্থানীয় বিভিন্ন লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, ১৯৮৮সালে চেহের আলী উক্ত খাস জমিটি বন্দোবস্ত করে। সেই থেকে তার দখল-আমল রয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি জায়গাটি জবরদখল করার জন্য স্থানীয় প্রভাবশালী মহল জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। চেহের আলী নিয়ে স্থানীয় মেম্বার, চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন স্থানে ঘুরাঘুরি করেও কোন বিচার পাচ্ছেনা।

চেহের আলী অভিযোগ করে জানায়, আমার খতিয়ানভুক্ত জমিতে প্রতিপক্ষ দিল মোহাম্মদ গং অন্যায় ভাবে জোরপূর্বক ঘর নির্মাণ করে যাচ্ছে। তারা প্রভাবশালী হওয়ায় ভয়ে কেউ আমার পক্ষে কথা বলতে সাহস করছেনা। এমন কি এ নিয়ে প্রতিবাদ করতে চাইলে আমার উপর এবং আমার পরিবারের উপর দা’কিরিচ নিয়ে সন্ত্রাসী হামলা চালায় দিল মোহাম্মদ গং। আমি সরকারের উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের নিকট সুস্থ বিচার দাবি করছি।

এ নিয়ে দিল মোহাম্মদ বলেন, জায়গাটিতে তারা দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছে। তাদের অজান্তে চেহের আলী জমিটি বন্দোবস্ত করেছে। তারা এনিয়ে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেছে বলে জানালেও কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেনি।

হলদিয়া পালং ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের স্থানীয় ইউপি সদস্য ফজল করিমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, কোন এনজিও সংস্থা ঘর গুলো নির্মাণ করছে সে ব্যাপারে আমি কিছুই জানিনা। আর একজনের খতিয়ানভুক্ত জমিতে আরেকজনকে ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার কোন যুক্তিযুক্ততা থাকতে পারেনা। তিনি বলেন আমি জানলে কখনো এসব কাজ করতে পারতোনা, অন্যায়কে আশ্রয় দেইনা বলে হয়তো ঘর নির্মাণের ব্যাপারে এনজিও আমাকে অবহিত করেনি।

উখিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী বলেন, আমি এ সংক্রান্ত একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তবে কোন এনজিও, কার মাধ্যমে, কিভাবে ঘর গুলো নির্মাণ করছে সে ব্যাপারে আমি কিছুই জানিনা। তাছাড়া একজনের খতিয়ানভুক্ত জমিতে আরেকজনকে কিভাবে ঘর নির্মাণ করে দেয় এনজিও তা আমার বোধগম্য নয়। বিষয়টি তিনি তদন্ত করে দেখছেন বলে জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে রেডক্রিসেন্ট এর কর্তাব্যক্তিদের সাথে যোগাযোগ করেও বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে সূত্র জানিয়েছে রেডক্রিসেন্ট সংস্থা হলদিয়াপালং ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ৪০টি ঘর নির্মাণ করছে। এসব ঘরের ব্যয় বরাদ্দ ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। অভিযোগ রয়েছে, কোন প্রকার স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদে অবহিত না করে দায়সারা ভাবে ঘর নির্মাণ করছে এই সংস্থা।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন