Notice: Trying to get property 'post_excerpt' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 53

Notice: Trying to get property 'guid' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 55

উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের হুমকি উপেক্ষা দীর্ঘ ৬ বছর পর বাঘাইহাট বাজার পুণরায় শুরু

k2

সাজেক প্রতিনিধি:

উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের চাপের মুখে বন্ধ থাকা রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার সাজেকের ঐতিহ্যবাহী বাঘাইহাট বাজারটি দীর্ঘ ছয় বছর পর রবিবার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে হাট-বাজার শুরু হয়েছে।

রবিবার হাটের দিন ঘোষণা করে বাঘাইছড়ি উপজেলা ও পার্শ্ববর্তী দিঘীনালা উপজেলার হাটবাজারগুলোতে বাঘাইহাট বাজার পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকে মাইকিং করায় ব্যাপক উৎসাহের মধ্যে দিয়ে সকল বাধাঁ উপেক্ষা করে রবিবার হাটের দিন বিপুল সংখ্যক উপজাতীয়দের সকাল থেকে হাট বাজারে আসতে দেখা গিয়েছে।

রবিবার সকালে সাজেকের ডানেবাইবা ছড়া থেকে বাঘাইহাট বাজারে আসা মণিময় চাকমার সাথে কথা বললে তিনি খুব আনন্দের সাথে বলেন, এতবছর পর বাঘাইহাট বাজারটি চালু দেখে আমার খুব ভালো লাগছে যা ভাষায় প্রকাশ করতে পারছিনা। এই বাজারটি বন্ধ থাকায় আমরা অনেক কষ্ট পেয়েছি। বাধ্য হয়ে অন্য বাজারে গিয়ে বাজার করতে হয়েছে আমাদের। তাই বাজারটি চালু হওয়ায় আমাদের মত খেটে খাওয়া মানুষের অনেক উপকার হয়েছে।

এ বিষয়ে বাঘাইহাট বাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতি ডা.নাজিম উদ্দিন জানান, দীর্ঘ ছয় বছর ধরে আমরা প্রশাসন থেকে শুরু করে জনপ্রতিনিধিদের সাথে নিয়ে অনেক চেষ্টা করেছি বাঘাইহাট বাজারটি আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করতে, তবে উপজাতি সন্ত্রাসীদের বাঁধার মুখে তা সম্ভব হয়নি।

কিন্তু গত ৩ মাস থেকে বাজার কমিটির উদ্যোগে সাজেক ইউপি চেয়ারম্যান ও সাজেকের সকল হ্যাডম্যান কার্বারী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাথে নিয়ে বাঘাইহাট বাজারটি চালু করার ব্যপারে বেশ কয়েকবার আলোচনা সভার আয়োজন করে। সর্বশেষ গত বুধবার সকলকে নিয়ে আলোচনা সভার মধ্যে দিয়ে রবিবার আনুষ্ঠানিক হাটবাজার ঘোষণা করা হয় তার সুবাদে রবিবার হাটের দিন বাঘাইহাট বাজারে পাহাড়ী বাঙ্গালীর মিলন মেলা দেখা যায়, আশাাঁ করছি ধীরে ধীরে আগামীতে আরও এই সম্প্রীতির বন্ধন বাড়বে।

k43

এ বিষয়ে সাজেক ইউপি চেয়ারম্যান নেলসন চাকমা বলেন, আমার সাজেক ইউপি’র সকল সদস্যসহ সাজেকের সকল হ্যাডম্যান কার্বারী বাঘাইহাট বাজার কমিটি ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাথে নিয়ে দীর্ঘদিনের সাজেকের এই সমস্যা থেকে উত্তরণের যে সুবাতাস বইছে তা যেন আমরা ধরে রাখতে পারি সে জন্য আমি সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।

তিনি বলেন, আমি আজ সকালে নিজেই বাঘাইহাট বাজার পরিদর্শন করেছি, বাজারে বিভিন্ন ধরনের ভাসমান ব্যবসায়ী এসেছে এবং আশেপাশের গ্রাম থেকেও লোকজন এসে কেনাকাটা করছে দেখে আমার খুব ভালো লেগেছে। আশা করছি পর্যায়ক্রমে দুরদুরান্ত থেকে লোকজন আসবে এবং বাজারটি আরও সচল হয়ে উঠবে।

উল্লেখ্য ১৬ জানুয়ারী ২০১০ বাঘাইহাট বাজারটি আঞ্চলিক পাহাড়ি সংগঠন ইউপিডিএফ বয়কটের ঘোষণা করেছিল। দীর্ঘ ছয় বছরেও চালু করা যায়নি পার্বত্য এলাকার এই ঐতিহ্যবাহী বাঘইহাট বাজারটি।

বিগত ৬-৭ বছর ধরে অচল হয়ে পরেছিল এ বাজারটি। যে বাজারে প্রতি সপ্তাহে হাটের দিন পাহাড়ি-বাঙালির জমজমাট মিলন মেলা হতো, সে বাজার এখন নিস্তেজ থেকে আবার সচল হয়ে উঠছে।

জানা গেছে, ২০১০ সালে বাঘাইছড়ির গংগারাম মুখ এলাকায় অনাকাঙ্ক্ষিত পাহাড়ি-বাঙালী সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার পর বাঘাইহাট বাজার বয়কট করার ঘোষণা দেয় আঞ্চলিক পাহাড়ি সংগঠন ইউপিডিএফ। তখন থেকে স্থবির হয়ে পরে ছিল বাঘাইহাট বাজারটি। আর সে খেসারত দিতে হয়েছিল সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীদের।

বাঘাইহাট বাজারটি বয়কট বাতিল করার জন্য স্থানীয় প্রশাসন ও পাহাড়ি সংগঠগুলোর নেতাদের সাথে বারবার বৈঠক করলেও তখন কোন লাভ হয়নি বলে জানা গেছে। তখন আঞ্চলিক সংগঠনের চাপে স্থানীয় পাহাড়ি চাষীরা বাজারে আসতো না। অবধৈ অস্ত্রের প্রভাবে জিম্মি হয়ে আছে স্থানীয় পাহাড়ি জনগণ এবং জুম চাষীরা।

তবে বারবার অভিযোগ উঠছে, পাহাড়ি একটি আঞ্চলিক সংগঠন বাঘাইহাট বাজার বয়কটের ডাক দেয়ায় পাহাড়ী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও বাজারে যেতে পারত না। বিভিন্নভাবে বাধার সম্মুখীন হত তারা। অবৈধ অস্ত্রের শক্তির কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে গোটা সাজেক ইউনিয়ন। নিয়মিত হাট না বসার কারণে সাধারণ মানুষ যেমন দূর্ভোগে পড়েছে। তেমনি পাহাড়ী বিক্রেতারা তাদের উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করতে না পেরে রীতিমত বিপাকে পড়তে হয়েছিল ।

তাছাড়া বাঘাইহাট বাজার না বসার কারণে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল পাশাপাশির বাঘাইছড়ি, গংগারাম মুখ, মাচালংসহ সাজেক ইউনিয়নের সকল ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন