উশেপ্রু কি পারবে গুইমারা জয় করতে
নিজস্ব প্রতিবেদক, মাটিরাঙ্গা:
আর মাত্র দুটো রাত পেরুলেই গুইমারা উপজেলা পরিষদের প্রথম নির্বাচন। দিন শেষে এখন শুধু ঘন্টা গণনা। শঙ্কা আর আতঙ্কের পর জয়ের নির্মল হাসি। ভোটার থেকে শুরু করে সকলের দৃষ্টি সেই নির্মল হাসির দিকে। কে হাসবে বিজয়ের হাসি। কে জয় করবে উন্নয়ন বঞ্চিত গুইমারার প্রায় অর্ধলক্ষ জনগণের ভালোবাসা। ক্লিন ইমেজের দুই শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের মেমং মারমা নাকি বিএনপির মোহাম্মদ ইউসুফ। নাকি নির্বাচনে ইউপিডিএফ সমর্থিত (স্বতন্ত্র) প্রার্থী তৃতীয় শক্তি হিসেবে আবির্ভুত উশেপ্রু মারমা।
নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণার শেষ প্রান্তে এসে প্রার্থীদের অতীত কর্মকাণ্ডের চুলছেড়া বিশ্লেষণে নেমেছেন গুইমারার ভোটাররা। ভালো গুণের প্রশংসা করার পাশাপাশি খারাপ বিষয়গুলো তুলে আনছেন চায়ের টেবিলের আলোচনায়। কাউকেই যেন ছাড় দিয়ে কথা বলছেন না গুইমারা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভাগ্য নির্ধারক জনগণ। চায়ের টেবিলের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন ইউপিডিএফ সমর্থিত (স্বতন্ত্র) প্রার্থী উশেপ্রু মারমা। তার অতীত কর্মকাণ্ড নিয়ে ঝড় উঠেছে চায়ের কাপে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গুইমারা উপজেলার হাফছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান থাকা কালে দুর্নীতির দায়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে তাকে দুইবার বহিষ্কার করা হলেও হাইকোর্টে মামলা করে স্থগিতাদেশ নিয়ে প্রায় তিন বছর হাফছড়ির ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। গেল ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী চাথোয়াই চৌধুরীর কাছে পরাজিত হন।
গুইমারার সচেতন মহল মনে করে বরাবরই সাম্প্রদায়িক হিসেবে পরিচিত উশেপ্রু মারমা গেল ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতেই এবারের নির্বাচনে সরকারী দল আওয়ামী লীগকে চ্যালেঞ্জ করে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট-ইউপিডিএফের সমর্থন নিয়ে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নেমেছেন। নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণার শুরু থেকেই দুর্গম জনপদে আওয়ামী লীগের প্রচার-প্রচারণায় বাঁধা প্রদানের মাধ্যমে পেশীশক্তির প্রমান দেয়ার চেষ্টা করেছেন। সম্প্রতি তার পক্ষে কাজ না করায় সিন্ধুকছড়ির একাধিক নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিকে এলাকাছাড়া হতে হয়েছে বলেও নির্বাচনী মাঠে গুঞ্জন রয়েছে।
গুইমারা উপজেলার এক শীর্ষ জনপ্রতিনিধি তার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, উশেপ্রু মারমা অনেকটাই জনবিচ্ছিন্ন। আর তাই সে জনগণকে প্রতিপক্ষ বানিয়ে ইউপিডিএফের মতো একটি সন্ত্রাসী সংগঠনের সমর্থন নিয়ে জয় পাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। জনগণ তার অতীত কর্মকাণ্ডের সমুচিত জবাব ব্যালটের মাধ্যমেই দিবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি। তিনি বলেন, পেশীশক্তি নয় বরং জনগণের শক্তি আর ভালোবাসারই জয় হবে গুইমারা উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে। নির্বাচনের শেষ দিকে এসে একটি বিশেষ মহলের চাপে সিন্ধুকছড়ির একাধিক নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি এলাকাছাড়া হওয়ার ঘটনা বিষফোড়া হয়ে দাঁড়াতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
দুর্নীতির দায়ে অপসারিত হওয়া ছাড়াও বিগত দিনে নানা গণবিরোধী কর্মকাণ্ডের কারণে অনেকটাই জনবিচ্ছিন্ন গুইমারা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পাহাড়ের উগ্রসাম্প্রদায়িক ইউপিডিএফ‘র আশির্বাদ নিয়ে নির্বাচনী ময়দানে আসা উশেপ্রু মারমা কি গুইমারা জয় করতে পারবে। নাকি তীরে এসে তার স্বপ্নের তরী ডুববে।