কক্সবাজারে ১৭১ কমিউনিটি ক্লিনিক ২৫ দিন ধরে অচল

 

কক্সবাজার প্রতিনিধি:

টানা আন্দোলন-কর্মসূচির কারণে অচল হয়ে পড়েছে কক্সবাজার জেলার ৮টি উপজেলার ১৭১টি কমিউনিটি ক্লিনিক। সিএইচসিপির কর্মবিরতির ফাকে স্বাস্থ্য সহকারী/পরিবার কল্যাণ সহকারীকে এসব ক্লিনিকে দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। কিন্তু সেটা মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়ন হচ্ছে না বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। একারণে চিকিৎসা সেবা না পেয়ে প্রতিদিন চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে জেলার হাজার হাজার মানুষ।

জানা গেছে, চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে ২৫দিনেরও বেশি সময় ধরে চলছে কমিউনিটি ক্লিনিকে কর্মরত সিএইচসিপি’দের আন্দোলন কর্মসূচি। কর্মসূচির আওতায় গত ২০-২২ জানুয়ারি উপজেলা পর্যায়ে অবস্থান কর্মসূচি, ২৩ জানুয়ারি জেলা পর্যায়ে, ২৪ জানুয়ারি স্ব-স্ব কমিউনিটি ক্লিনিকে এবং ২৫ জানুয়ারি থেকে ঢাকা প্রেসক্লাবের সামনে আমরন অনশন চলমান রয়েছে। মাঝখানে খালেদা জিয়ার রায় কে কেন্দ্র করে নিজেদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে ৮-১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অনশন স্থগিত ছিলো।

১০-১২ জানুয়ারি ঢাকা জাতীয় প্রেসক্লাব চত্বরে আমরন অনশন কর্মসূচি চালিয়ে আসছে বাংলাদেশ সিএইচসিপি কেন্দ্রীয় দাবি আদায় বাস্তবায়ন কমিটি। বর্তমানে প্রেসক্লাব চত্বরে বিভিন্ন সময় বিএনপির মিছিল মিটিং থাকায় পেশাজীবী সংগঠন এর নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে ১২ জানুয়ারি প্রেসক্লাব ছেড়ে প্রকল্প অফিস মহাখালীতে বিএমআরসি ভবনের সামনে আমরন অনশন চালিয়ে যাচ্ছে সিএইচসিপি’রা।

বাংলাদেশ সিএইচসিপি অ্যাসোসিয়েশস কক্সবাজার জেলা শাখার সভাপতি রফিকুল হাসান, সাধারণ সম্পাদক এমকে মো. মিরাজ জানিয়েছেন, আন্দোলনরত সিএইচসিপি’রা তাদের চাকরি জাতীয়করণে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার অপেক্ষায় রয়েছে।

তারা আরো জানান, স্বাস্থ্য মন্ত্রীর পক্ষে চাকুরী স্থায়ী ও কিছু সুযোগ সুবিধা প্রদানের কথা বলে অনশন ভাঙ্গার চেষ্টা করেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আবুল কালাম আজাদ ও প্রকল্প পরিচালক ডা. আবুল হাশেম খান। কিন্তু সাধারণ সিএইচসিপির রাজস্ব করনের যে মূল দাবি আছে সেটি তাদের আশ্বাসে না থাকায় এখনও রাজপথে অনশন পালন করে যাচ্ছেন সিএইচসিপিরা।

আমরণ অনশনে থাকা সিএইচসিপি নেতৃবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগ গ্রামীন জনসাধারণের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতকল্পে প্রতি ৬ হাজার জনগোষ্ঠীর জন্য একটি করে কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ করেছে। এসব ক্লিনিকে স্বাস্থ্য সেবা ও স্বাস্থ্য শিক্ষা প্রদানের জন্য একজন করে প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্য কর্মী, সিএইচসিপি দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। ২০১১ সালে কমিউনিটি ক্লিনিকে দেশের ১৪ হাজার সিএইচসিপি নিয়োগ পায়।

এরমধ্যে প্রায় ৪ হাজার ৫০০জন সিএইচসিপি মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান। ২০১৩ সালে চাকুরি রাজস্ব খাতে অন্তর্ভুক্ত করণের উদ্যোগ নেয়া হয়। কিন্তু এখনো সে উদ্যোগ আলোর মুখ দেখেনি। সিএইচসিপিগণ শুরু থেকে চাকরি স্থায়ীকরণের দাবি জানিয়ে আসছিলো। পরবর্তীতে দাবি পূরণ না হওয়ায় সিএইচসিপিরা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। হাইকোর্ট চাকরি স্থায়ীকরণের জন্য সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য রায় প্রদান করলেও এখনো সরকার তা বাস্তবায়ন করেনি।

আন্দোলনকারীদের এখন একটাই চাওয়া, প্রধানমন্ত্রী যা বলবেন তারা তাই মেনে নেবেন। প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাস বা নির্দেশনা পেলে তারা কর্মস্থলে ফিরে যাবেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন