উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্পে সহিংসতায় ৫ মামলা, আটক-২১

fec-image

কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দুই গ্রুপের দফায় দফায় সহিংস ঘটনায় অসহায় হয়ে পড়েছে সাধারণ রোহিঙ্গারা। রাত নামলেই রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বাড়ছে গোলাগুলি, হামলা-পাল্টা হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা। গত ৭ দিনে আরসা ও মুন্না গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় ৮ জন নিহত হয়েছে। তৎমধ্যে দুই জন স্থানীয় নোহা চালক রয়েছে। ক্যাম্পে সপ্তাহব্যাপী সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ৫টি মামলা দায়ের করেছে। অপরাধে জড়িত থাকায় র‌্যাব, আর্মড পুলিশ ও পুলিশ পৃথক অভিযান চালিয়ে ২১ জনকে আটক করেছে। এ নিয়ে ক্যাম্প সংলগ্ন স্থানীয়রাও ভয়-আতঙ্কে দিনাতিপাত করছে।

তাদের একজন স্থানীয় বাসিন্দা ওমর ফারুক মিয়া বলেন, আশ্রিত রোহিঙ্গাদের অত্যাচারে স্থানীয় বাসিন্দারা অসহায় হয়ে পড়েছি। রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা মাস খানেক আগে আমার ভাই আব্দু শুক্কুরকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে। গত ৪২ দিন ধরে উদ্ধার না হওয়ায় উৎকণ্ঠায় রয়েছি।

জানা গেছে, বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে কুতুপালং নিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ২ ইস্টে ডি-১ ব্লকে অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্ত রোহিঙ্গারা। এ সময় ৩টি ঝুঁপড়ি ঘর পুড়ে ছাই হয়ে যায় বলে জানিয়েছেন মোহাম্মদ আলম নামে এক রোহিঙ্গা।

অতিরিক্ত ত্রাণ ও শরণার্থী প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. সামছু-দৌজা নয়ন বলেছেন, বুধবার রাতে কুতুপালং নিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সি-ব্লকে দুর্বৃত্তের দেয়া আগুনে ৭/৮ টি বসত ঘর পুড়েছে এমনটি তথ্য পেয়েছি।

তিনি জানিয়েছেন, রাতে আগুন লাগার খবরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিয়ন্ত্রণে আনায় বড় ধরণের ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়া গেছে। রোহিঙ্গাদের দ্রুপ গ্রুপের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে যে কোন একপক্ষ অগ্নিসংযোগ করতে পারে। উখিয়া ফায়ার স্টেশন ম্যানেজার ইমদাদুল হক বলেছেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৩টি বসত ঘর পুড়েছে। তাৎক্ষণিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করা যায়নি।

এর আগে বুধবার বিকালে কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে যান পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মো. আনোয়ার হোসেন। পাশাপাশি পুলিশসহ যৌথ বাহিনী ক্যাম্পের অভ্যন্তরে টহল জোরদার করেছে। এছাড়া পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

উখিয়ার থানার ওসি মো. সঞ্জুর মোরশেদ জানিয়েছেন, গত ১৫ দিন ধরে কুতুপালং ক্যাম্পে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের বিবাদমান দুইটি গ্রুপের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এতে বুধবার পর্যন্ত ৮ জন নিহত এবং অনেকে আহত হয়েছে। এসব সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ৫টি মামলা দায়ের করেছে। ক্যাম্পের বিভিন্ন স্থানে পুলিশ অভিযান চালিয়ে এ পর্যন্ত ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

অপরদিকে মঙ্গলবার টেকনাফের চাকমারকুল এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৯ রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীকে আটক করে র‌্যাব। এ সময় বিপুল পরিমাণ অস্ত্রও উদ্ধার করা হয়।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: আটক, উখিয়ার, কুতুপালং
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন