খাগড়াছড়িতে ৩২০ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী

sss copy

 মুজিবুর রহমান ভুইয়া / মো: আবুল কাশেম :

১১ নভেম্বর সোমবার দীর্ঘ ১৭ বছর পর খাগড়াছড়িতে আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার সফরকে ঘিরে বর্ণিল সাজে সেজেছে পার্বত্য খাগড়াছড়ি জেলা। প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে ঘিরে জেলা জুড়ে দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে উৎসাহ-উদ্দীপনা। আর সৃষ্টি হয়েছে এক আনন্দমূখর পরিবেশের । চাওয়া-পাওয়া বা পাওয়া-না পাওয়ার বিরোধ ভুলে সবাই দাঁড়িয়ে এক কাতারে।

দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সফরকে সফল করতে কর্মসুচীর আয়োজন নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছে দলের নেতাকর্মীরা। প্রধানমন্ত্রী হেলিকপ্টার যোগে ১১ নভেম্বর দুপুর ১টায় খাগড়াছড়ি রিজিয়ন হেলিপ্যাডে অবতরণ করবেন। নামাজ ও মধ্যাহ্ন বিরতির পর বেলা ২টা ১৫ মিনিটে খাগড়াছড়ি স্টেডিয়ামের সমাবেশস্থলে উন্নয়নমূলক কাজের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন শেষে খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগের সমাবেশে ভাষণ দেবেন।

বর্তমান সরকারের সময়ে জেলায় ৭০০ কোটি টাকার উন্নয়ন হয়েছে জানিয়ে এদিন প্রধানমন্ত্রী ৩২০ কোটি টাকার বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন জানিয়ে খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা পার্বত্যনিউজকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে এ জেলার মানুষকে নতুন কিছু উপহার দিবেন। প্রধানমন্ত্রীর আগমন ও জেলা আওয়ামীলীগের উদ্যোগে খাগড়াছড়ি স্টেডিয়ামের সমাবেশে লোকসমাগম ঘটাতে ইতোমধ্যে মাঠে নেমে পড়েছে জেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ।

গুইমারা, মানিকছড়ি, লক্ষ্ণীছড়ি উপজেলায় পার্বত্য জেলা পরিষদের দুই সদস্য ও জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি চাইথোঅং মারমা ও সাহাবউদ্দিন মিয়ার নেতৃত্বে, দীঘিনালা উপজেলায় জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি পাজেপ সদস্য বীর কিশোর অটল, পানছড়ি ও মহালছড়ি উপজেলায় জাফর আহাম্মদ, মাটিরাঙ্গা ও রামগড় উপজেলায় এ.কে.এম আলীম উল্যাহ ও জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মংক্যচিং চৌধুরী কাজ করছেন।

দলীয় সূত্রে আরো জানা যায়, প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতিসহ দলীয় নেতা-কর্মীদের প্রাণচাঞ্চল্য তৈরীসহ তারা ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। প্রধানমন্ত্রীর সফরকে সফল করতে জেলা-উপজেলা আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা দফায় দফায় বৈঠক করছেন।

জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এস এম শফি পার্বত্যনিউজকে জানান, প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে জেলা-উপজেলার তৃণমূল পর্যায়ে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হচ্ছে। এ ব্যাপারে আমাদের সব প্রস্তুতি চুড়ান্ত পর্যায়ে। প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে কেন্দ্র করে পার্বত্য জনপদ খাগড়াছড়ি এখন উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়েছে। শহরের বিভিন্ন বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে শোভা পাচ্ছে ব্যানার, ফেস্টুন ও তোরণ। শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় পড়েছে রঙের আঁচড়। পৌর শহরের প্রাণ কেন্দ্রে অবস্থিত শাপলা চত্তরের শাপলা ফুল নয়াভিরাম দৃশ্য ধারণ করেছে। জেলা সদরের চেঙ্গী স্কোয়ারকে বিভিন্ন মোজাইক দ্বারা নতুন সাজে সাজানো হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে জেলা শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নির্মিত হচ্ছে একাধিক তোরণ। জেলার বিভিন্ন ছাপাখানার কর্মীরা ব্যস্ত রং বেরংয়ের পোস্টার ও ডিজিটাল ব্যানার বানানোর কাজে। দলীয় প্রধান ও প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে নিজকে প্রচার করার মোক্ষম সময়টা কেউ যেন হাতছাড়া করতে রাজি নয়।

সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১২ উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ৫টি উন্নয়ন কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন বলে জেলা প্রশাসন সুত্রে জানা গেছে। সুত্রটির মতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রামগড় ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল, খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালের নতুন ভবন, এপিবিএন বিশেষায়িত ট্রেনিং সেন্টার, ১০০০ মেট্টিক টন ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন গুইমারা খাদ্য গুদাম, সদর উপজেলার ভাইবোনছড়া ব্রীজ, দীঘিনালা আবহাওয়া অফিস, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন, বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষনা ইনস্টিটিউট (বিনা), খাগড়াছড়ি সরকারী কলেজ একাডেমিক ভবন, মহালছড়ি স্কুল ,খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ কমিউনিটি সেন্টার, খাগড়াছড়ি পুলিশ লাইন স্কুল ভবন ও খাগড়াছড়ি মরামা উন্নয়ন সংসদর ছাত্রাবাস উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন করবেন। এছাড়াও বিদ্যুতের সাব-গ্রীড স্টেশন, সিএমএম কোর্ট, দীঘিনালা ফায়ার সার্ভিস স্টেশন, শান্তি স্তম্ভ ও তাইন্দং আশ্রায়ন প্রকল্প কাজের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করবেন।

প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনা সর্বশেষ গত ১৯৯৮সালের ১০ই জানুয়ারি খাগড়াছড়ি ষ্টেডিয়ামে তৎকালীন শান্তিবাহিনী’র অস্ত্রসমর্পন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে খাগড়াছড়ি আসেন। এর আগে বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে ১৯৯২ সালে খাগড়াছড়ি সফর করেন শেখ হাসিনা।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন