খাগড়াছড়ির ভূয়াছড়িতে ছেলেহারা মায়ের বুকফাটা কান্না

স্টাফ রিপোর্টার:

অবশেষে পরিচয় মিলেছে বান্দরবানে বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে দাফনকৃত অজ্ঞাত যুবকের। আর এ যুবকের পরিচয় পাওয়ার পর খাগড়াছড়ির ভূয়াছড়িতে ছেলেহারা মায়ের বুকফাটা কান্নায় ভারি হয়ে উঠেছে এলাকার পরিবেশ।

জানা যায়, তিন মাস পুর্বে খাগড়াছড়ি জেলা সদরের দক্ষিণ ভুয়াছড়ি এলাকার মো. আ: রাজ্জাকের ছেলে মো: আবদুস ছালাম (১৫) কে মা-বাবাকে না বলেই রাঙ্গামাটির রাজস্থলী উপজেলার ঘিলাছড়ি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নলকূপ বসানোর কাজে নিয়ে যায় একই এলাকার ওয়াজেদ আলী লিডারের ছেলে মো. শাহজালাল (২৫)।

দীর্ঘদিন ধরে ছেলে বাড়িতে না আসলে অনেক খোজাখুজির পর চলতি বছরের ২২ জানুয়ারি খাগড়াছড়ি সদর থানায় একটি সাধারন ডায়েরী (জিডি) করেন মো: আবদুস ছালামের বাবা আবদুর রাজ্জাক। যার নম্বর-৮২২, বেতার বার্তা নং-৫, তারিখ-২২/০১/২০১৫।

এদিকে, চলতি বছরের গেল ২ জানুয়ারি বান্দরবান জেলায় এক অজ্ঞাত যুবকের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার হওয়ার বিষয়টি বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হলে ভূয়াছড়ি এলাকার মুরব্বীদের নিয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান মো: আবদুস ছালামের বাবা আবদুর রাজ্জাক।

বান্দরবান থানার দায়ের করা অপমৃত্যু মামলা নং-০১/১৫ অনুযায়ী বেওয়ারিশ ছেলের পড়নের কাপড় ও লাশ উদ্ধারের সময় ধারনকৃত ছবি দেখেই এ লাশ মো: আবদুস ছালামের বলে নিশ্চিত হন তার বাবা ও ভূয়াছড়ির মুরব্বীরা। ধারনা করেন ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। ছেলের মৃত্যুতে বাকহীন হয়ে পড়েন আবদুর রাজ্জাকসহ তার পরিবারের সদস্যরা।

নিহত মো: আবদুস ছালামের পরিবারের অভিযোগ, তাকে পরিকল্পিতভাবে শ্বাসরোধ করে হয়েছে। এ ঘটনায় হতবাক সালামের বাবা মো: আবদুর রাজ্জাক কখনও খাগড়াছড়ি সদর থানায় আবার কখনও বান্দরবান থানায় বিচারের জন্য ছুটছেন। কিন্তু উভয় থানা বাদীর মামলা নিয়ে দোলাচলে ফেলে দেন ছেলে হারানো এ পরিবারকে।

নিহতের পরিবার নিরুপায় হয়ে গত ৪ ফেব্রুয়ারী স্থানীয় কমলছড়ি ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার মো. আমির হোসেনের সভাপতিত্বে এলাকায় বৈঠক বসান। বৈঠকে উপস্থিত ব্যক্তিগণ বান্দরবান জেলায় বেওয়ারিশ হিসেবে দাফনকৃত যুবক ভুয়াছড়ির আবদুস ছালাম বলে মতামত দেন। এবং মো: আবদুস ছালাম হত্যাকান্ডের পর হতে মো. শাহ জালাল আত্মগোপণে রয়েছে বলেও ঐ বৈঠকে বৈঠকে উল্লেখ করা হয়।

এ বিষয়ে সাধারণ ডায়েরীর তদন্ত কর্মকর্তা ও খাগড়াছড়ি সদর থানার এএসআই মোহাম্মদ হানিফ বলেন, জিডির পর পরই সকল থানায় বার্তা প্রদান করা হয়। এবয় এলাকার মেম্বার শাহজাহান ফরায়েজীকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করা হয় এবং এ কমিটি বান্দরবানে গিয়ে বেওয়ারিশ হিসেবে দাফনকৃত লাশের ছবি নিয়ে আসেন। এবং সেই লাশ ভুয়াছড়ির আবদুস ছালামের বলে নিশ্চিত করে। তবে তবে লাশ যেহেতু বান্দরবান পাওয়া গিয়েছে সে জন্য আইন অনুযায়ী পরিবারটিকে বান্দরবান থানায় মামলা করার কথা বলেন এ পুলিশ কর্মকর্তা।

প্রসঙ্গত, গেল ২ জানুয়ারী বান্দরবানের রাজবিলা ইউনিয়নের হাকিমপুর মোড় হইতে অজ্ঞাত যুবকের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে উদ্ধারকৃত লাশের কোন পরিচয় না পাওয়ায় বেওয়ারিশ হিসাবে বান্দরবানে ময়নাতদন্ত শেষে দাপন সম্পন্ন করা হয়।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন