খাগড়াছড়ি হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক ও নার্সদের ৫ ঘন্টা কর্মবিরতি: রোগীরা চরম ভোগান্তিতে

জেলা প্রতিনিধি, খাগড়াছড়ি:
 জীবন নাশের হুমকিতে খাগড়াছড়ি আধুনিক সদর হাসপাতালে কর্মরত ডাক্তার ও নার্সরা ৫ ঘন্টা কর্মবিরতি পালন করেছে । সোমবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত হঠাৎ এই কর্মবিরতি কর্মসূচী চলাকালে রোগীদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে । অনেক রোগী পর্যাপ্ত চিকিৎসা না পেয়ে শহরে একতা ডায়গনেষ্টিক, চেংগী কাশবন ও খাগড়াছড়ি বেসরকারী হাসপাতালে ভিড় জমে চিকিৎসা নিতে দেখা গেছে । এতে করে এই খরা মৌসুমে ৯টি থানার সাধারন রোগীদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে । প্রশাসনের তাৎক্ষনিক পদক্ষেপে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জরুরী সভা আয়োজনে দোষীদের শাস্তির আশ্বাসে ডাক্তার ও নার্সরা ধর্মঘট তুলে নেয়।    

জানা যায়, হাসপাতাল ক্যাম্পাস এলাকার পারিবারিক হাড্ডা-হাড্ডিতে অসুস্থ হয়ে খোরশেদ আলমের ছেলে মোঃ রোকন উদ্দিন(৪০) নামে শনিবার বিকালে হাসপাতালে ভর্তি হয় । পার্শ্ববর্তী একই এলাকার শালবন বাসিন্দা মোঃ আনোয়ার কমিশনার ছেলে সাইফুলের নেতৃত্বে ৩/৪জন সহপাঠিকে নিয়ে হাসপাতালে ঢুকে চিকিৎসারত রোকনের সাথে কথাকাটাকাটি এক পর্যায়ে ডাক্তার ও নার্সদের  চিকিৎসা না দেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করে । চিকিৎসা দিলে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে যায় ।

পরের দিন রোববার বিকালে আবারও হাসপাতালে ঢুকে চিকিৎসা না দিতে কর্তব্যরত ডাক্তার ও নার্সদের শাসিয়ে কঠোর সতর্ক করে  গেলে সোমবার সকল চিকিৎসকদের সিদ্ধান্তের সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত কর্মবিরতি পালন করে । প্রশাসনের তাৎক্ষনিক পদক্ষেপে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জরুরী সভা আয়োজন করে চিকিৎসা সেবা স্বাভাবিক করা হয় ।

  খাগড়াছড়ি সদর আধুনিক হাসপাতাল মিলনায়তনে জরুরী আলোচনা সভায় জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ নারায়ন চন্দ্র দাশ সভাপতিত্বে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অবাসিক চিকিৎসক ডাঃ সন্জীব ত্রিপুরা, সদর উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার কল্যান কর্মকর্তা ডাঃ শহীদ তালুকদার, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মোঃ মিজানুর রহমান, কাউসিলর এটিএম রাশেদ উদ্দিন আহম্মেদ, ৬নং ওয়ার্ডের মহিলা কাউন্সিলর শাহেদা আক্তার, জেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মেমং মারমা প্রমূখ ।

খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মোঃ মিজানুর রহমান জানান, যারা হাসপাতাল কম্পাউন্টের ঢুকে রোগী ও ডাক্তারদের এই রকম হুমকি দেওয়ায় কর্মরত ডাক্তার ও নার্সরা ৫ ঘন্টা কর্ম বিরতি পালন করে । তবে এর  সু-নির্দ্দিষ্ট কোন অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে ।

চিকিৎসারত রোকন উদ্দিন জানান, ৩/৪জন সন্ত্রাসীরা এসে প্রথমে পাগল বলে সিরন্স ইনজেক্শন দিতে দায়িত্বরত চিকিৎসকদের প্ররোচিত করে । না শুনার ফলে ডাক্তার ও নার্সদের সাথে দু’ব্যবহার ও খারাপ আচারন করে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে যায় ।

হাসপাতালে জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত সিনিয়ার ব্রাদার উজ্জ্বল দে জানান, এই রকম ঘটনা ৪/৫মাস আগে একবার শালবাগানের আওয়ামীলীগ নেতা শুকুর আলীর হামলায় আমার গায়ের শার্ট ও প্যান্ট ছিড়ে প্রচন্ড অপদস্ত করা হলেও কর্তৃপক্ষ কোন উদ্দ্যোগ গ্রহন না করায় আমরা দায়িত্ব পালন করে ধৈর্য্য ধরে ছিলাম ।
হাসপাতালে চিকিৎসারত রোগী আমিন উদ্দিন জানান, এক সপ্তাহ ধরে কোন ডাক্তার আসে না, একটু করে নার্সরা আসে আবার গেলে চিকিৎসা’র কোন খবর নেই। রোগী মোঃ হারুন মিয়া জানান, রোববার রাত থেকে কোন ডাক্তার আসেনি । এখন আমরা রোগীরা চরম অসুবিধার মধ্যে হাসপাতালে পড়ে আছি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন