ঘূর্ণিঝড় মোখা: সেন্টমার্টিন বিধ্বস্ত না হলেও সবখানে লেগেছে আচর, বেড়িবাঁধ দাবি

fec-image

ঘূর্ণিঝড় “মোখা” র চোখ সেন্টমার্টিনে ছিল না। তাই বিধ্বস্ত হয়নি দ্বীপটি। বড়ধরনের ক্ষতি চোখে পড়েনি। তবে আচর লেগেছে সবখানে। বিশেষ করে উত্তর পাশের সৈকত পাড়। ছোটখাটো ঘরবাড়ির ছাউনি। গাছগাছালি। হালকা ধরনের ঘেরাবেড়া। বহুতল ভবন, দালান, মোবাইল টাওয়ারগুলো অক্ষত রয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদ সার্বিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তৈরির কাজ করছেন।

স্থানীয় বোট মালিক সমিতির সভাপতি আবু তালেব বলেন, এবার বোটগুলো নিরাপদ দূরত্বে টেকনাফ সরিয়ে রাখা হয়েছিল, তাই ক্ষতি হয়নি।

ডেইল পাড়ার মাহে আলম বলেন, “বাড়ির বাহিরের কিছু বেড়া নষ্ট হয়েছে। তবে একদম ঘরটি বিধ্বস্ত হয়নি।”

ইউপি সদস্য বলেন, বাড়ির একটি দেওয়াল ভেঙ্গে গেছে। অন্যান্য অংশ ঠিক আছে।

সোমবার ১৫ মে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সেন্টমার্টিন বিএন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে কথা হয় সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ সভাপতি মুজিবুর রহমান, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি সদস্য সৈয়দ আলম, স্থানীয় যুবনেতা আকতার কামাল, ছাত্রনেতা আব্দুল্লাহ, পল্লী চিকিৎসক সালাউদ্দিন, ইউপি সদস্য মাহফুজা আকতার, ভিডিপি দল নেত্রী আরজিনা আক্তারের সাথে।

তারা বলে, বলছেন, “ঘূর্ণিঝড় মোখা”র প্রবল ঝড়ো হাওয়ায় সাধারণ বাড়ি ঘর ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। এখানের খাবারের জন্য টাকা বা খাদ্য সামগ্রিক চেয়ে শক্ত ধরনের বাড়ি ঘরের ব্যবস্থা করা দরকার। জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষা করতে টেকসই বেড়িবাঁধ দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। ভাগ্য ভালো সরাসরি ঘূর্ণিঝড়টি সেন্টমার্টিনে আঘাত করেনি। না হয় দ্বীপের সব অধিবাসীর লাশ খুঁজে পাওয়াও দুস্কর হতো। “

এদিকে সোমবার বিকেলে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. শাহীন ইমরান, পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফরিদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক ও কক্সবাজারের মেয়র মুজিবুর রহমান, সহ-সভাপতি রেজাউল করিম, টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান, সহকারী কমিশনার (ভূমি) এরফানুল হক চৌধুরী, টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো আবদুল হালিম, কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা, বিজিবি, কোস্টারের সদস্য ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল বশর ও সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব মোর্শেদসহ সংশ্লিষ্টরা সেন্টমার্টিনের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। তারা এসময় দ্বীপের মানুষ জনকে খাদ্য সামগ্রী তুলে দেন।

এ সময় শত শত নারী পুরুষ সেন্টমার্টিনে স্থায়ী ও টেকসই বেড়িবাঁধ দেওয়ার দাবী জানান। এ প্রসঙ্গে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. শাহীন ইমরান বলেন,”ঘূর্ণিঝড় মোখা পরিস্থিতি সবসময়ই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মনিটরিং করেছেন। তিনি ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সম্ভব সবকিছু করে দেবেন।”

যথা সময়ে দ্বীপের মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন বলে প্রাণহানির মত বড় ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছেন জানিয়ে জেলা প্রশাসক সংশ্লিষ্ট সকলসহ দ্বীপ বাসিকে ধন্যবাদ জানান। তিনি দ্বীপের সার্বিক ক্ষয়ক্ষতি ও বেড়িবাঁধের দাবি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে অবহিত করবেন বলে স্থানীয়দের আশ্বস্ত করেন। এদিকে দ্রুত ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা পাঠানোর জন্য স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে নির্দেশনাও দেন ডিসি।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা বলেন” ‘যে কোন দুর্যোগ পরিস্থিতি মোকাবেলায় আওয়ামী লীগ জনগণের সাথে রয়েছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা দুর্যোগ পরিস্থিতিতে কাজ করেছে। বিশেষ করে আশ্রয়কেন্দ্রে সব মানুষ জনকে এনেছেন। যার কারণে প্রাণহানি বা আহতের ঘটনা ঘটেনি।”
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুজ্জামান বলেন, ” সেন্টমার্টিনে ২২শ ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।” পরবর্তী সময়ে ক্ষয়ক্ষতির চুড়ান্ত তালিকা অনুযায়ী আরো সহযোগিতা দেওয়া হবে।”

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: ঘূর্ণিঝড়, মোখা, সেন্টমার্টিন
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন