ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং পরবর্তী আমন ধান ও বাগানের ক্ষতি নির্ণয়ে জরুরি সভা

fec-image

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং পরবর্তী নাইক্ষ্যংছড়ির ৫টি ইউনিয়নে রোপা আমন, ফলজ ও বনজ বৃক্ষের বাগানের ক্ষতি নির্ণয়ে জরুরি সভার আয়োজন করেন উপজেলা কৃষি বিভাগ।

মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) দুপুর ১২টায় এ সভা অনুষ্ঠিত হয় উপজেলা কৃষি অফিসের নিজস্ব কার্যালয়ে। এতে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অফিসের লোকজনসহ ১৭টি মৌজার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন কৃষি কর্মকর্তা এনামুল হক।

কৃষি অফিস সূত্র জানান, সোমবার (২৪ অক্টোবর) মধ্য রাতে সিত্রাং ঘূণিঝড়টি দেশের বেশ ক’টি জেলায় আঘাত হানে। বিশেষ করে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের আমনধান, শীতের আগাম সবজি চাষ, ফলজ, বনজ বাগানের ক্ষতি হয়েছে বেশ। অনেক স্থানে পাকাধান ও আধাপাকা ধানগাছ মাটিতে লেতিয়ে পড়ে যাওয়ার ফলে অনেক কৃষক দুঃচিন্তায় পড়ে। এছাড়াও এই ঘূর্ণিঝড়ে দেড় শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিলো।
তবে উপজেলার কোথায় হতাহতের ঘটনা ঘটে নি। পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে নি।

উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নের কৃষক আবুল শামা, আবদুল কাদের, সুলতান আহমদ, মনিরুল হক সহ অনেকে জানান, এ বছর শেষের দিকে চাষাবাদ করলেও ফলন হয়েছিলো অনেক ভালো। কিন্ত ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর প্রভাবে অনেক স্থানে ধান মাটিতে পড়ে যাওয়ার কারণে ক্ষতি হয়েছে বেশ।

উপজেলার বাইশারী, সোনাইছড়ি, দৌছড়ি, ঘুমধুম ও সদর ইউনিয়নে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঘুর্ণিঝড় সিত্রাং এর কারণে কৃষকের ক্ষতির পাশাপাশি সড়কের উপর গাছ পালা পড়ে রয়েছে। ৩ দিন যাবৎ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ছিলো । বাড়ি ঘরের রক্ষিত ফ্রীজের মালামাল নষ্ট হয়ে গেছে অনেকের।

রাবার বাগান ম্যানাজার আল আমিন জানান, তার বাগানের অনেক গুলু রাবার গাছ ভেঙে গেছে। এতে কয়েক লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে। এছাড়া ঘূর্ণিঝড়ে অনেকের বসতবাড়ির ছাউনি ঘেরাবেড়া, উড়ে গেছে।

সোনাইছড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এনিং মারমা জানান, ফসল সহ সবজি ও বাগানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. নুরুল আবছার ইমন বলেন, ফসলসহ ফলজ বনজ বাগান ও কিছু মানুষের ঘরের চাল বাতাসে উড়ে গেছে।

বাইশারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো.আলম কোম্পানি বলেন, আমার এলাকায় রাবার বাগান, ফলজ বাগান, রবি শষ্যের প্রচুর পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

এদিকে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ এনামুল হক বলেন, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর প্রভাবে সোমবার নাগাদ উপসহকারী কর্মকর্তাদের দেয়া তথ্যে তিনি জেনেছিলেন বর্তমানে মাঠে থাকা রোপা আমনের ক্ষয়-ক্ষতির আশঙ্কার কথা। কিন্তু তা হয়নি। হয়েছে আংশিক।

তিনি বলেন, এ বছর নাইক্ষ্যংছড়িতে রোপা আমনের আবাদ হয়েছে ৩৩৩২ ( তিন হাজার তিনশত বত্রিশ) হেক্টর জমিতে। এ বছর এখানে ফলন অনেক ভালো হয়েছে। তবে সিত্রাং এর কারণে ব্যাপক ক্ষতি না হওয়ায় কৃষকরা এ বছর তাদের ভালো ফলনের ফসল ঘরে তুলতে পারবেন মহানন্দে।

উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্র জানান, সিত্রাং এর কারণে রাতে ঘোষণায় মঙ্গলবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিলো। যাদের পরীক্ষা ছিলো তা স্থগিত করা হয়।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন