চকরিয়ায় আ.লীগ নেতার উপর হামলার ঘটনায় প্রতিবাদ সভা

fec-image

কক্সবাজারের চকরিয়ায় সোসাইটি বায়তুল মাওয়া শাহী জামে মসজিদ কমিটির মেয়াদোত্তীর্ণের আগেই নতুন কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে সংঘর্ষে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও চকরিয়া পৌরসভা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লায়ন আলমগীর চৌধুরীসহ উভয়পক্ষের অন্তত ৫ জন মুসল্লি আহত হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে চকরিয়া জুড়ে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের মাঝে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।

শনিবার বিকাল ৩টার দিকে থানা রাস্তার মাথাস্থ সিস্টেম কমপ্লেক্সের সামনে পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লায়ন আলমগীর চৌধুরী ও সেচ্ছাসেবকলীগ নেতাকে আহত করায় এক প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

চকরিয়া পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহেদুল ইসলাম লিটুর সভাপতিত্বে উপজেলা ও পৌরসভা আওয়ামীলীগের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন,চকরিয়া-পেকুয়া আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব জাফর আলম।

এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মো: আবু মুছা, ছৈয়দ আলম কমিশনার, ফাঁসিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন হেলালী, ডুলাহাজারা ইউপি চেয়ারম্যান হাসানুল ইসলাম আদর, চিরিংগা ইউপি চেয়ারম্যান জামাল হোসেন চৌধুরী, সাবেক কাউন্সিলর বশিরুল আইয়ুব প্রমুখ।

প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাবেক এমপি জাফর আলম বলেন, চিরিংগা সোসাইটি বায়তুল মাওয়া শাহী মসজিদের ভেতরে পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের উপর হামলা যারা করেছে তারা কি ইসলাম ধর্ম বিশ্বাস করে কিনা সন্দেহ রয়েছে। যারা এ হামলা করেছে তারা সকলেই কল্যাণ পার্টির অনুসারী।

চকরিয়া-পেকুয়ায় চিংড়িঘের দখল,জমি দখল এবং হত্যার সাথে কারা জড়িত ইতিমধ্যে পরিষ্কার হয়েগেছে। গত পাঁচ বছর আমি এমপি থাকাকালে এ জনপদের মানুষ নিরাপদ ছিল।

তিনি আরো বলেন, শেখ হাসিনার তথা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উপর দ্বিতীয় বার যদি হামলা হয় তার কঠোর জবাব দেওয়া হবে। আগামীতে ঐক্যবদ্ধ থেকে যেকোনো হামলা মারধরের মোকাবেলা করা হবে বলে হুশিয়ারি দেন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে হামলা মারধরের ন্যায় বিচার প্রত্যাশা করেন। এছাড়াও বক্তারা মসজিদের পবিত্রতা ও সুনাম নষ্টকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনারও প্রশাসনের কাছে জোর দাবী জানান আওয়ামীলীগের নেতারা।

উল্লেখ্য, শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চকরিয়া পৌরশহরের সোসাইটি বায়তুল মাওয়া শাহী জামে মসজিদের কমিটিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে চকরিয়া পৌর আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক লায়ন আলমগীর চৌধুরীসহ ৫জন আহত হয়। আহতদের উদ্ধার করে চকরিয়া সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। মসজিদের সামনে বিপুল পরিমাণ পুলিশ সদস্য অবস্থান করেন। এ ঘটনায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে পৌরশহর জুড়ে। মসজিদে নামাজ আদায় করতে আসা মুসল্লিরা জানান, এদিন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সোসাইটি বায়তুল মাওয়া শাহী জামে মসজিদের খতিব হাফেজ বশির আহমদ ওয়াজ শেষ করার পরপরই স্পিকারে বক্তব্য দিতে উঠেন নতুন কমিটির সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম শহীদ। ওই সময় তাকে বাধা দেন বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক লায়ন আলমগীর চৌধুরী। এতে মুসল্লিদের মধ্যে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে শহিদুল ইসলাম ও তার সহযোগীরা বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক লায়ন আলমগীর চৌধুরী ও সেচ্ছাসেবকলীগ নেতা জয়নাল আবেদীনকে মসজিদের ভেতরে মারধর করেন। এসময় মুসল্লিরা দিকবেদিক ছুটাছুটি করতে থাকে। এ হামলায় অন্তত ৫ জন আহত হয়। তাৎক্ষণিক খবর পেয়ে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো.ফখরুল ইসলাম মসজিদে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। সকল মুসল্লিকে শান্ত হওয়ার আহ্বান জানান। পরে আধা ঘণ্টা পর পুনরায় খুতবা ও জুমার নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন