চকরিয়ায় দর্শনার্থীদের পদচারণায় জমে উঠেছে উন্নয়ন মেলা
চকরিয়া প্রতিনিধি:
‘উন্নয়নের রোল মডেল শেখ হাসিনার বাংলাদেশ’ শ্লোগানে দ্বিতীয়বারের মতো সারাদেশের ন্যায় কক্সবাজারের চকরিয়ায় তিন দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে চলছে উন্নয়ন মেলা-২০১৮। প্রথম দিনের চেয়ে দ্বিতীয় দিন জমে উঠেছে এই মেলা। লোকে লোকারণ্য হয়ে উঠেছে উপজেলার পৌর কমিউনিটি সেন্টার মাঠ। ভিড় করেছে অসংখ্য তরুণ–তরুণী ও শিক্ষার্থীরা। মেলায় আগত দর্শনার্থী পদচারণায় মুখরিত পুরো মাঠ প্রাঙ্গণ।
শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) বিকেলে চকরিয়া উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত উন্নয়ন মেলায় এমন উৎসবমুখর পরিবেশ পরিলক্ষিত হয়েছে।
মেলায় সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, চকরিয়া উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন পৌর কমিউনিটি সেন্টার মাঠে উন্নয়ন মেলায় সকাল থেকে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে শুরু করে দর্শণার্থীদের সংখ্যা। মেলার প্রায় প্রতিটি স্টলেই দর্শণার্থীদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। সরকারি বিভিন্ন দপ্তর ও বেসরকারি সংস্থা বিভাগ স্থির চিত্রের মাধ্যমে তাদের সামগ্রিক উন্নয়ন দেখাচ্ছে স্টলে আগত দর্শনার্থীদের। বিগত বছরের উন্নয়নের কাজগুলোর বিস্তারিত বিবরণীপত্র তুলে দেওয়া হচ্ছে দর্শনার্থী আগ্রহীদের হাতে। সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নিয়ে মেলায় কৌতুহলী মানুষের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।
এবারে মেলায় ৬৮টিরও বেশি স্টল করা হয়েছে। উপজেলার সরকারি দপ্তরের স্টলই এই মেলায় বেশি স্থান পেয়েছে। আধা-সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার স্টলও রয়েছে এ মেলায়। পুরো মেলাকে নান্দনিক সাজে সাজাতে উদ্যোক্তাদের আয়োজনের কমতি ছিল না। স্টলে আনা হয়েছে নানা ধরনের নান্দনিক সাজ। মেলায় যে সকল স্টল বসানো হয়েছে তা হলো, চকরিয়া পৌরসভা স্টল, উপজেলা ভূমি অফিস, চকরিয়া থানা, উপজেলা প্রাণী সম্পদ দপ্তর, উপজেলা কৃষি বিভাগ, মৎস্য বিভাগ, এলজিইডি বিভাগ, পিআইও অফিস, উপজেলা শিক্ষা অফিস, উপজেলা নির্বাচন অফিস, সমবায় দপ্তর, যুব উন্নয়ন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, মহিলা ও শিশু বিষয়ক দপ্তর, আনসার ভিডিপি, খাদ্য বিভাগ, উপজেলা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল দপ্তর, সমাজ সেবা অফিস, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, পানি উন্নয়ন বোর্ড, সড়ক ও জনপথ বিভাগ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড(কর অঞ্চল-৪), মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস, চকরিয়া ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি(সিপিবি), বন বিভাগ।
এছাড়াও চকরিয়া চক্ষু হাসপাতাল, জেলার প্রথম ও সর্ব বৃহৎ ই-কমার্স সাইট coxshop24.com, নারী উন্নয়ন ফোরাম, সূর্যের হাসি ক্লিনিক, মেরি স্টোপস ক্লিনিক, এসএআরপিভি (SARPV), কর্মনীড়, বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ, সোনালী ব্যাংক, কৃষি ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, ইউসিবিএল ব্যাংক, এবি ব্যাংক, সাউথ ইষ্ট ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংকসহ ৬৮টি সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের স্টল রয়েছে।
এসব স্টলে বর্তমান সরকার আমলের উন্নয়ন, অগ্রগতি ও অর্জনের চিত্র এবং সেবাগুলো চিত্র তুলে ধরা হচ্ছে। শনিবার (১৩ জানুয়ারি) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলবে এ মেলা। রাত্রেই উন্নয়ন মেলার সমাপ্তি ঘটবে।
উল্লেখ্য যে, তিন দিনব্যাপী উন্নয়ন মেলায় আলোচনা সভা ছাড়াও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দেশের মুক্তিযুদ্ধ ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের নানা দিক তুলে ধরা হয়েছে। মেলা চলাকালীন প্রতিদিন বিকালে আয়োজন করা হয়েছে নানা বিষয়ক বিতর্ক, কুইজ, আলোচনা সভা ছাড়াও স্থানীয় শিল্পীদের নিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
উন্নয়ন মেলায় ক্রেতাদের নজর কাড়ার মতো এমন অনেক স্টলই আছে। হস্ত ও কুটিরশিল্পের বাহারি পণ্য ও ঘর সাজানোর পণ্য থেকে শুরু করে নানা ধরণের পণ্য সামগ্রী মিলছে মেলায়। পৌরসভা স্টলে আগত দর্শনার্থীদের বিনা মূল্যে দেয়া হচ্ছে চক্ষু চিকিৎসা সেবা। এ ছাড়া ই-কমার্স সাইট স্টলে থেকে নানা ধরণের দেশি-বিদেশি আচার, চকলেট, বিস্কুটসহ বিভিন্ন ভোগ্যপণ্যও ক্রয় করছে আগত দর্শনার্থী। উপজেলা ভূমি অফিস স্টলে ই-নামজারি সিস্টেমের চালু করায় এ স্টল থেকে আগত সেবা গ্রহণকারী অনলাইনের মাধ্যমে তাদের সেবা পেয়ে যাচ্ছে এমনটাই দেখা গেছে।
মেলায় আসা তৌহিদ নামের এক দর্শনার্থীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিগত বছরের চেয়ে এ বছর আগত দর্শনার্থীর ভিড়ে বেশ জমে উঠেছে মেলা। মেলা কেমন লাগছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, খুবই ভালো লাগছে। তবে মেলায় স্টল বাড়লেও নতুন ভাবে ভিন্নতা কিছু দেখি নাই। স্টলগুলো বিচিত্র ধরণের নান্দনিক সাজে বেশ গোছানো দেখে কিছুটা হলেও ভাল লাগলো। তবে ছেলে-মেয়েরা মেলায় প্রাণী সম্পদ দপ্তরের স্টলে বিভিন্ন পাখি, বাদুড়ের নানা ভঙ্গিমা দেখে খুবই আনন্দ উপভোগ করেছেন বলে তিনি জানান।